মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আর ক’দিন বাদেই ভোট। অথচ, ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ এবং ‘ক্ষোভে’র কারণে এখনও আরামবাগের বহু তৃণমূল নেতা প্রচারে শামিল হননি। তার আঁচই কি পড়ল বুধবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরামবাগের জনসভায়! কারণ, সভার মাঠ সে ভাবে ভরেনি বলে মানছেন দলের নেতাদের একাংশ। এ নিয়ে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরাও।
কালীপুর স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে দলের প্রার্থী মিতালি বাগের সমর্থনে আয়োজিত ওই সভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতে মমতা কী বার্তা দেন, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল দলের অনেকেরই। মুখ্যমন্ত্রী একটাই বার্তা দিলেন, ‘‘আমি বড় না অন্য জন, এ সব তোয়াক্কা করতে হবে না কাউকে। সবার উপরে মানুষ বড়, সেটাই মেনে চলতে হবে।” কিন্তু শুধুমাত্র এই বার্তায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কতটা লাগাম পরবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দলের অনেকেই। সভামঞ্চে জায়গা না পাওয়া নিয়ে বিদায়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের কথাতেও ছায়া পড়েছে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই।
দলের নেতাদের অনেকে আশা করেছিলেন, অন্তত ৩৫-৪০ হাজার লোকের ভিড় হবে। কিন্তু তা হয়নি। সাতটি বিধানসভা এলাকা থেকে প্রায় ৭০০ বাস এলেও অধিকাংশই ভর্তি ছিল না। রোদ তেমন না থাকলেও মাঠ যে ভরেনি, তা নজর এড়ায়নি দলনেত্রী মমতারও। এ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও দলের জেলা নেতাদের তাঁর নির্দেশ, ‘‘আমার কথা পেন ড্রাইভে তুলে নিয়ে গিয়ে খানাকুল, পুরশুড়া ও গোঘাটে শোনাবে।”
দলের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, ১০-১২ হাজারের বেশি লোক হয়নি। কারণ, যাঁরা লোক আনেন, ভোট করান, সেই নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের কাজে নামেননি। অপরূপার অভিযোগ, “আমি এখনও দলের সাংসদ। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে উঠতে দেননি। উনি তফসিলি, দলিত, সংখ্যালঘুদের বিপক্ষে।” কল্যাণ পাল্টা বলেন, “ব্যক্তিগত রাগ থেকে আমার কথা বলছে। সবেতেই আমাকে নিয়ে টানাটানি করছে। আমি মঞ্চে কে থাকবে না থাকবে তা ঠিক করার লোক নাকি! ও সব সংশ্লিষ্ট জেলা নেতারা করেন।” দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “উনি (অপরূপা) আদৌ এসেছেন কি না, কখন এসেছেন, দেখিনি।” স্বপন অবশ্য নেত্রীর সভায় কম লোক আসার কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘প্রচুর ভিড় ছিল।”
তৃণমূল সরকারের আমলে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় প্রার্থী মিতালি বাগকে জেতানোর আর্জি জানান। বিজেপি জিতলে কী কী বিপদ হতে পারে তা জানিয়ে বলেন, “(দলের)যাই ভুল হোক, যদি অন্য কেউ ভুল করেও থাকে, আমরা এ বার একটা গরিব, প্রান্তিক ঘরের মেয়েকে টিকিট দিয়েছি। ওঁকে গ্রহণ করে নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।”
কিন্তু এ সবে চিঁড়ে ভিজবে না বলে দাবি বিরোধীদের। পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, “সভা একেবারেই ফ্লপ হয়েছে। আকণ্ঠ দুর্নীতির কথা ছেড়েই দিলাম, যারা নিজেদের দলের নেতা-কর্মীদেরই সম্মান দেয় না, তাদের সভায় মানুষ আসবেন কেন?” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তায় দলের পতাকা লাগানো প্রচুর বাস দেখা গিয়েছে। কিন্তু বাসের আসন সবই প্রায় ফাঁকা ছিল। মানুষ আর তৃণমূলের পাশে নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy