ছবি:সংগৃহীত।
সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় বন্যার শঙ্কায় বাংলাদেশ। সেই আশঙ্কার মাঝেই বাড়ছে নদ-নদীর জল। প্রতি দিন নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বসত-ভিটে থেকে স্কুল আর ফসলের মাঠ। দেশের ২০ জেলা ভাসছে এখন বন্যার জলে। বেসরকারি হিসেব বলছে, বন্যার কারণে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছে অন্ততপক্ষে ২৭ জন। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২০। মৃত ২৭ জনের মধ্যে দিনাজপুরে ১৫, কুড়িগ্রামে ৬, লালমানিরহাটে ৫ ও ঠাকুরগাঁয়ে ১ জন। ১৫০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলের তলায়। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও তিস্তা অববাহিকায় জলের উচ্চতা গত এক শতকের মধ্যে এ বারে সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশের ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী সোমবার সংবাদিক বৈঠকে বলেন, “এখন পর্যন্ত দেশের ২০টি জেলার ৫৬টি উপজেলা বন্যা কবলিত। বন্যায় সারা দেশে মারা গিয়েছেন ২০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ। উত্তরাঞ্চলের বন্যার জল মধ্যাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে নেমে যাবে। ফলে ঢাকার নিম্নাঞ্চল-সহ আরও ৯টি জেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ১৯৮৮ সালের চেয়ে বড় বন্যা হলেও তা মোকাবিলা করার প্রস্তুতি আছে সরকারের।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “উজানের দেশ চিন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এ বছর মারাত্মক বন্যা হয়েছে। মন্ত্রণালয় উজানের দেশের বন্যা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আর উজানের দেশগুলোতে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসেবে উজানের প্রভাব আমাদের ওপর পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। সেই প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছি।”
ছবি:সংগৃহীত।
বাংলাদেশের ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড’-এর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রধান নদ-নদীগুলোয় জল বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, “৯০টি নদী পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের ৬৯টিতে জল বাড়ছে। এর মধ্যে ২৭টি পয়েন্টে জল বিপদ সীমার উপরে রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যমুনার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে সোমবার বিকেল ৩টেয় জলের উচ্চতা ছিল বিপদসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার। এটি এই পয়েন্টের সর্বোচ্চ রেকর্ড। গত বছরে জল বিপদসীমার ১২১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উঠেছিল।
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ স্থানে দমকা হাওয়া ও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে পারে। আশঙ্কা রয়েছে কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বা অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
তবে আগামী বৃহস্পতিবারের পরে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম। তিনি আরও জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির রেকর্ড টাঙ্গাইল জেলার, এখানে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy