প্রতীকী ছবি।
বাঙালির স্বাধীনতা স্পৃহার কাছে পরাস্ত পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু নতুন দেশটি যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না-পারে, মাটি ছেড়ে যাওয়ার আগে পরিকল্পনা মাফিক তার সব রকম ব্যবস্থা করে দিয়েছিল পাকিস্তানি শাসকেরা। শোনা যায়, আমেরিকার তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঙ্গার সে বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে বলেছিলেন ‘বটমলেস বাস্কেট’ বা তলাবিহীন ঝুড়ি। অর্থাৎ সাহায্য দেওয়াটাও হবে অপচয়!
তার পরে ৪৪ বছর কেটে গিয়েছে। পরিস্থিতি এখন কেমন?
বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ম্ভর দেশ। সামাজিক উন্নয়নের নানা খাতে তাদের স্থান ভারতেরও ওপরে। বিশ্বব্যাঙ্ক পিছিয়ে যাওয়ার পরে বিস্ত়ীর্ণ পদ্মা নদীর ওপরে সড়ক ও রেল সেতু তৈরির কাজ বাংলাদেশ সরকার করতে এগিয়েছে নিজেদের রাজকোষের টাকায়। ঢাকায় মেট্রো রেল চলবে কয়েক বছরের মধ্যে। মস্ত সব উড়ালপুল রাজধানীর নিসর্গটিই বদলে দিচ্ছে। সর্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুযোগ পৌঁছে যাচ্ছে সমাজের প্রত্যন্ত তৃণমূল পর্যন্ত। রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছ থেকে সার্বিক টেঁকসই উন্নয়নের পথে এগোনোর সার্টিফিকেট পাচ্ছে সরকার। এ বাংলার বাঙালিরা সেই পথ চলার কাহিনি শুনবে আজ, সোমবার। বলবেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। আলোচনা সভাটি হচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উদ্যোগে।
শুধু মানবিক বিপর্যয়ই নয়, দেশটিকে ফের পাকিস্তানে ফেরাতে সক্রিয় দেশের ভিতর-বাইরের নানা চক্র। বারে বারে আঘাত এসেছে। গণতন্ত্রের যাত্রাপথ বিঘ্নিত হয়েছে নিয়মিত। তা সত্ত্বেও বারে বারে জয় ছিনিয়ে এনেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঋদ্ধ বাংলাদেশের মানুষ। মৌলবাদ আছে, রয়েছে জঙ্গি উপদ্রবও। তার সঙ্গে লড়াইও চলছে।
স্বাধীনতায় ভারতের অবদানের কথা বাংলাদেশ বরাবর শ্রদ্ধার সঙ্গেই স্মরণ করে। একই উপমহাদেশের প্রতিবেশী দুই দেশের ভাষা-সংস্কৃতির ঐতিহ্যের গ্রন্থি বাঁধা হয়েছে আবহমান কাল ধরে। সীমান্তের কাঁটাতার রয়েছে, রয়েছে তিস্তার জলচুক্তি বা সমুদ্রের অধিকার নিয়ে মনান্তরও। কিন্তু সনাতন এই বন্ধন অস্বীকার করার উপায় নেই। মৌলবাদের সঙ্গে লড়াইয়ে এই সংস্কৃতি বারে বারে হয়ে উঠেছে বাঙালির হাতিয়ার। ধর্মের চোখরাঙানি অস্বীকার করে বাংলাদেশের মানুষ হেলায় মাতেন নববর্ষ পালনে। একুশের ভাষা-শহিদ দিবস পালন তো আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে। সংস্কৃতির সে লড়াইয়ের কথা শোনাবেন দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলি। সম্পর্কে যিনি দু’বাংলারই আদরের লেখক সৈয়দ মুজতবা আলির ভাইপো তিনি। বলবেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, অধ্যাপক শফি আহমেদ। আলোচনায় থাকছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি, তুলনামুলক সাহিত্য ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপকেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy