Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশের পণ্য রফতানিতে বার বার ইউরোপের কাঁটা

এ বারে অভিযোগ আরও মারাত্মক। ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে 'হাই রিস্ক কান্ট্রি' বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইউরোপের সব দেশই বিষয়টি মানবে। বিমান বা জাহাজে বাংলাদেশ যা পাঠাবে তল্লাশি না করে গৃহীত হবে না।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ১৮:৫০
Share: Save:

কেন এমন করে ইউরোপ! মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের রাস্তায় কাঁটা ছড়ায়। আটকায় অবাধ গতি। কারণ না থাকলেও বাণিজ্যে বারণ। বিমানে পণ্য পরিবহণ বন্ধ। ব্রিটেন, জার্মানি আগে বাংলাদেশকে জানিয়েছিল- বিমানে পণ্য পাঠানোর দরকার নেই। পাঠাতে হলে জাহাজে পাঠানোই ভাল। কথাটা যুক্তিহীন। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা শাকসব্জি যায় ইউরোপে। একমাত্র বিমানে পাঠালে সময় মতো পৌঁছতে পারে। জাহাজে পৌঁছবে ঠিকই। পচে গলে নষ্ট হওয়ার পর। ঢাকার শাহজালান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নাকি পণ্য সুরক্ষার সুব্যবস্থা নেই। কথাটা মানার মতো নয়। যে দেশে পণ্য যাচ্ছে, খারাপ হলে তারা নেবে কেন। ফেরত পাঠাবে। দামও দেবে না। বাংলাদেশের পণ্য প্রত্যাখ্যান করেছে কোনও দেশ, এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। ভুল করে শুধরে নিয়ে ফের পণ্য নেওয়া শুরু করেছে অনেক দেশ।

এ বারে অভিযোগ আরও মারাত্মক। ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে 'হাই রিস্ক কান্ট্রি' বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইউরোপের সব দেশই বিষয়টি মানবে। বিমান বা জাহাজে বাংলাদেশ যা পাঠাবে তল্লাশি না করে গৃহীত হবে না। আনলোড ট্রানজিট বা ট্রান্সফারে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে গভীর ভাবে। এক্সরে স্ক্যানিং, এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন ছাড়াও কুকুর দিয়ে কার্গো তদন্ত হবে। নিরাপত্তা তল্লাশির শর্ত পূরণ না হলে বাংলাদেশের কোনও বিমান বা জাহাজ ইউরোপে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্য কোনও দেশে কার্গো পরীক্ষা করে ইউরোপে পাঠান যাবে, তার খরচ বাংলাদেশকেই বহন করতে হবে।

আরও খবর: বাংলাদেশিদের ঠকানোর জাল চক্র গাইঘাটায়

ঢাকার শাহজালান বিমানবন্দরে ব্রিটেনের নিরাপত্তা সংস্থাকে সুরক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে প্রশ্নের মুখে ঠেলছে কেন ইউরোপ। বাংলাদেশ থেকে বিপজ্জনক অস্ত্রশস্ত্র বা বিস্ফোরক ইউরোপে যায় এমন কোনও প্রমাণ নেই। বরং জঙ্গিরা ইউরোপ থেকে অস্ত্র পেয়েছে এমন নজির রয়েছে। ইউরোপের দেখাদেখি অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও আরও কিছু দেশ একই রাস্তায় হাঁটছে। ইটালি, সুইডেন, সুইৎজারল্যান্ড, ফ্রান্সে বাংলাদেশের বিপুল পোশাক যায়। পাট, কাঁচা পণ্য, চিংড়ি রফতানির পরিমাণ যথেষ্ট। বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্য যখন হু-হু করে বাড়ছে সে সময় ইউরোপের বিরোধিতা কেন। তারা কি বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে, যে কোনও মূল্যে, বাংলাদেশকে রুখতে চাইছে! ইউরোপে বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হলে অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে। বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার কমবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক ভাল। সেখানকার প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে'র সঙ্গে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা। হাসিনা-টেরেসার আলোচনায় সমাধানের রাস্তা মিলতে পারে। এখন সেই চেষ্টাই হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE