সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। ছবি: সংগ্রহ।
বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। উজান থেকে আসা জলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পাড় উপচে প্লাবিত হয়েছে সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা। শুধু সিলেট বা মৌলভীবাজারই নয়- কক্সবাজার, বান্দরবান, সিরাজগঞ্জ-সহ অন্যান্য জেলাতেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি। রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপর্যয়ের কারণে ত্রাণ পৌঁছাতেও অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
আরও খবর- বাংলাদেশে বৃষ্টি চলবে, পাহাড়ি এলাকায় ধসের সতর্কতা
সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, দুই জেলার ১,১৪৪টি গ্রামে ৩ লক্ষ ৩ হাজার ৭৫৫ জন মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। বন্যায় ডুবে যাওয়ায় বা সংযোগ সড়ক প্লাবিত হওয়ায় ইতিমধ্যে দু’জেলার জেলায় ৪৭৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এখানে ৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করেছে প্রশাসন, যাতে মোট ১০৯৬টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশের ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড’-এর দেওয়া তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার দুপুর ৩টে পর্যন্ত সুরমা নদীর জল কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর জল শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড’।
বন্যায় কবলিত বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ওসমানীনগর মতো সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকা
সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী সিলেটে বন্যা কবলিত উপজেলাগুলো হল জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ। এ ছাড়াও দক্ষিণ সুরমা ও কানাইঘাট উপজেলা আংশিকভাবে প্লাবিত। এ সব উপজেলার মোট ৪৬৬ গ্রামের প্রায় ১ লক্ষ ৩৯ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন আর জেলার ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৪৫টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা জলে কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, রামু ও সদরের শতাধিক গ্রামের ৩ লাখ মানুষ জলবন্দি। শষ্যের বীজতলা বন্যার জলে তলিয়ে যাওয়ায় চাষ নিয়ে শঙ্কায় আছেন কৃষকরা।
টানা দু’দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের লামা-আলীকদম সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। এখানেও জলে তলিয়ে গিয়েছে বাড়িঘর, দোকানপাট ও সরকারি বিভিন্ন দফতর। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় সর্তকতা জারি করেছে প্রশাসন। পাহাড়ের নীচে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে টানা আরও দু’দিন বৃষ্টি চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy