Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশিদের ঠকানোর জাল চক্র গাইঘাটায়

পশু-পাখিদের স্বাধীনতা কেড়ে খাঁচায় পোরার ষড়যন্ত্র। পারলে বিক্রি করে বিশাল অঙ্কের উপার্জন। অরণ্যে দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির প্রাণী নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। থাকতে না দিলে থাকবে কী করে। দুনিয়ায় নজরদারি চালিয়েও রেজাল্ট শূন্য। মানুষ মানুষকে শিকার করছে অনায়সে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ১৭:৫৮
Share: Save:

ফাঁদে ফেলে শিকার ধরা আদিম অভ্যাস। শিশুকে টোপ করে বাঘ মারার কথা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পেও। নিষ্ঠুরতা কমলেও শিকার বন্ধ হয়নি। চোরা শিকারীরা বনে জঙ্গলে ঘুরছে। বাঘ থেকে গণ্ডার, সাপ হোক বা কুমির কোনও কিছুই তাদের নাগাল এড়াতে পারে না। কঠোর আইনেও ঠেকান যাচ্ছে না সব সময়। কড়া পাহারাতেও রোখা অসম্ভব।

পশু-পাখিদের স্বাধীনতা কেড়ে খাঁচায় পোরার ষড়যন্ত্র। পারলে বিক্রি করে বিশাল অঙ্কের উপার্জন। অরণ্যে দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির প্রাণী নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। থাকতে না দিলে থাকবে কী করে। দুনিয়ায় নজরদারি চালিয়েও রেজাল্ট শূন্য। মানুষ মানুষকে শিকার করছে অনায়সে। পদ্ধতিটা একটু আলাদা। প্রলোভন দেখিয়ে পকেটে পুরছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গজাচ্ছে বেআইনি চক্র। যাদের কাজ বাংলাদেশিদের ধরে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার টোপ দেওয়া। চোখের সামনে মেলে ধরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। ভাল করে বোঝনো, ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়া মানে ইদের চাঁদ হাতে, নিরাপদ ছাদের নীচে জীবনধারণ। জালে পড়ে হাঁসফাঁস করার পর ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা বুঝতে পারেন সবটাই ফাঁকি। পকেটে বাকি যেটুকু থাকে সেটা নিয়ে দেশে ফিরতে পারলে হয়। সর্বস্বান্ত হয়ে সে সামর্থ থাকে না অনেকেরই। দূতাবাসের শরণাপন্ন হন স্বদেশে ফেরার তাগিদে। যন্ত্রণাকর অভিজ্ঞতা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর আইনি ঝামেলার মোকাবিলা। তাঁদের হাতে যত কাগজপত্র সবই তো অবৈধ। প্রচুর অর্থ দিয়ে বৈধ হিসেবে গ্রহণ করার পর জেনেছে সব ভুয়ো। দালালরা ঠকিয়ে ফাঁদে ফেলেছে।

আরও পড়ুন: ‘সত্যিকারের বন্ধু’র সঙ্গে দেখা হওয়ার অপেক্ষায় ট্রাম্প, ধন্যবাদ মোদীর

উত্তর ২৪ পরগণার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগর-শিমুলপুর এলাকায় জাল তথ্য বিক্রির কারবার চলছিল রমরমিয়ে। টাকা ফেললেই আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার পরিচয় পত্র। কোনওটাই যে আসল নয়, দেখে বোঝার উপায় নেই। চড়া টাকায় গছিয়ে দেওয়া বাংলাদেশিদের হাতে। সেই সঙ্গে ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভের গ্যারান্টি। দু'হাজার টাকার নকল নোটও ছাপা হত স্ক্যানারে। ৪ জন গ্রেফতার হওয়ার পর অবৈধ ব্যবসা বন্ধ। বাংলাদেশের লিঙ্কম্যান হিসেবে কাজ করত রুমালা মণ্ডল।

নথি জায়গা মতো পেশ করে যখন নাগরিকত্ব দাবি করা হত, তখন বোঝা যেতো সব মিথ্যে। উল্টে মিলত শাস্তি। জেল জরিমানা। পুলিশের ধারণা, জঙ্গিরাই ভুয়ো কারবার চালু করেছিল। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে নকল নথি দিয়ে যাতে ভারতে বসবাস করা যায় তার ব্যবস্থা। সব কিছু এমন নিখুঁত ভাবে তৈরি, একবারে ধরা কঠিন। চেক-রিচেক করতেই স্পষ্ট। এ ঘটনায় যারা ধরা পড়েছে তাদের জেরা করে, গা ঢাকা দেওয়া জঙ্গিদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। জঙ্গিরা গভীর জলের মাছ, তাদের ধরা কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE