চড়চড়িয়ে উঠতে গিয়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার শঙ্কা কম নয়। সংগঠন এমনই। মানুষ জয়ের অভিযান বলে কথা। ফাঁকি চলে না। ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়তে গিয়ে ডুবেছে অনেক রাজনৈতিক দলই। ক্ষমতায় আসার পরেও পালে হাওয়া লাগাতে পারেনি। পথের বাঁকে হারিয়েছে। আবার ফিরে আসতে মরিয়া। ২০১৯-এ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে সব দলেরই তাই অতিরিক্ত সতকর্তা। প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে গিয়ে নিজেরাই না ফাঁদে পড়ে। আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যুযুধান একের পর এক দল। কোন দেশ পাশে থাকলে সুবিধে, কাদের দূরে ঠেললে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি, বুঝতে ভুল হতে পারে। বাংলাদেশ এখন বিশ্ববন্দিত। তাদের উন্নয়নের দিকে নজর সবার। এই স্বীকৃতিটা কম নয়। এটা এক দিনে হয়নি। দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পরিণতি। বাঁকে বাঁকে পরীক্ষা। পছন্দ করেনি পাকিস্তান। সন্ত্রাসী হামলায়, উন্নত হওয়ার ছন্দে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। সার্ক ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সম্পর্ক জোড়া লাগছে পারস্পরিক উদ্যোগে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জুনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে ফাঁক ভরাটের চেষ্টা করবেন। শান্তি ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব। সন্ত্রাস বাঁচিয়ে রাখলে আরও ডুবতে হবে পাকিস্তানকে। সমঝোতায় সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে চান শরিফও।
অনেক সময়ে ভারত, আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকেনি। সব দাগ মুছে আবার যোগাযোগ মসৃণ হয়েছে। এটাই হয়। বিষয়টা খুবই সংবেদনশীল। অকারণ খোঁচাখুঁচিতে যা বাড়তে পারে। বাংলাদেশের দরকার সবার সহযোগিতা। উন্নয়নকে পাখির চোখ করে তারা এগোচ্ছে। পুরোন কাসুন্দি ঘেঁটে কোনও দেশকে বিরুপ করলে ক্ষতি। বেশি আটকাবে বিদেশি বিনিয়োগ।
আরও পড়ুন: ভাষাই ধরিয়ে দিল হায়দরাবাদে লুকিয়ে থাকা বাংলাদেশি জঙ্গি ইদ্রিশ আলিকে
গণতন্ত্রের শক্ত ভিতের উপর বাংলাদেশ দাঁড়াচ্ছে। শান্তিতে অবাধ নির্বাচন হচ্ছে একের পর এক। ছোট আর মাঝারি ভোটে রায় দিচ্ছে মানুষ। কোন দলকে বেশি পছন্দ জানাচ্ছে। মানুষের মন বোঝার এমন সহজ উপায় আর কোথায়। নতুন নির্বাচন কমিশনার দায়িত্ব নিয়েছেন। নিখাদ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ১৬ এপ্রিল ১৮৫ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। ৮৩টিতে সাধারণ নির্বাচন, যার মধ্যে ২৮টিতে ভোট আটকে ছিল আইনি জটিলতায়। বাকি ১০২টিতে বিভিন্ন পদে উপনির্বাচন।
ইউনিয়ন পরিষদ বা ইউপি-র ভোটের ধারা বদলেছে। আগে যে যার মতো লড়াই করত। কোনও দলের বালাই ছিল না। হারজিতটা তখন একবারেই ব্যক্তিগত প্রাপ্তি। ইউপি, দলীয় নেতৃত্বের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকত। কাজে সার্থকতা বা ব্যর্থতার দায় কোনও রাজনৈতিক দল নিত না। গত বছর ২২ মার্চ ইউপি নির্বাচন শুরু হয় অভিনব ছন্দে। প্রার্থীরা জড়ো হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকার নীচে। দলের মনোনয়ন নিয়েই নির্বাচনে দাঁড়ায়। নির্দল প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকলেও দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে পাল্লা দেওয়াটা কঠিন হয়ে পড়ে। ছ'ধাপে ৪ হাজার ২৭৯ ইউপি-র ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এবার আইনি জটিলতায় আটকে থাকা, মেয়াদ শেষ না হওয়া আর নতুন হওয়া ৫৫টি ইউপি-র সাধারণ নির্বাচন। রাজনৈতিক শিকড় আরও গভীরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy