কয়লা ব্লক নিলাম নিয়ে অবশেষে নয়া নির্দেশিকা ঘোষণা করল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হওয়া ব্লক বণ্টন নতুন করে ব্যবহারকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই বৈদ্যুতিন নিলামের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করছে তারা।
কয়লা ব্লক বণ্টনের লক্ষ্যে প্রথম দফার নিলাম পর্ব শুরু হবে ১১ ফেব্রুয়ারি নাগাদ। ওই বৈদ্যুতিন নিলামের মাধ্যমে ৭৪টি ব্লক বণ্টন করা হবে বলে আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান কেন্দ্রীয় কয়লা সচিব অনিল স্বরূপ। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুত্ সংস্থার মতো নির্দিষ্ট কিছু ব্যবহারকারীকেই নয়া প্রক্রিয়ায় খনি বণ্টন করা হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নতুন করে কয়লা ব্লক নিলামের জেরে বিদ্যুতের মাসুল বাড়বে না। নিলামে ওঠা ব্লকের দর যাতে অত্যধিক না-চড়ে, তার জন্যও ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্র। কারণ, তাদের দাবি, নিছক বাড়তি রাজস্ব ঘরে তোলা নয়, বরং সরকারের উদ্দেশ্য ব্লক বণ্টনে একটি দক্ষ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
প্রসঙ্গত, অনিয়ম বা কয়লা ব্লক হাতে নিয়ে তা ফেলে রাখার অভিযোগে ১৯৯৩ সাল থেকে ২০৪টি কয়লা ব্লকের বণ্টন গত সেপ্টেম্বরে বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই কারণেই এই নয়া নির্দেশিকা। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই অর্ডিন্যান্স জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যয়। বৈদ্যুতিন নিলামের ব্যাপারে অনুমোদনও দিয়েছেন তিনি।
কয়লা ব্লকের এই বৈদ্যুতিন নিলামের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে:
• কোনও একটি সংস্থা একচেটিয়া ভাবে কয়লা ব্লক হাতে নিতে পারবে না। একটি সংস্থা কতগুলি খনির জন্য দরপত্র দিতে পারবে, তা বেঁধে দেবে কেন্দ্র।
• কাদের দেওয়া দরপত্র শেষ পর্যন্ত গৃহীত হচ্ছে, তা চূড়ান্ত করা হবে ৩ মার্চের মধ্যে।
• ১৬ মার্চের মধ্যেই খনি বণ্টন নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্র।
• নিলামে সফল হওয়া সংস্থাকে কয়লা ব্লকের জন্য নির্ধারিত দাম তো দিতেই হবে। পাশাপাশি ওই সমস্ত খনিতে বসানো যন্ত্রপাতি খাতেও ন্যায্য মূল্য মেটাতে হবে তাদের।
• ৭৪টি খনির মধ্যে ৪২টি বর্তমানে চালু রয়েছে। এগুলির জন্যই ৩১ মার্চ পর্যন্ত খনন চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বাকি ৩২টি খনিতে এখনও উত্পাদন শুরু হয়নি।
যে-সমস্ত খনি ইতিমধ্যেই ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা তার লগ্নির ন্যায্য মূল্য ফেরত পাবে। তবে নতুন করে নিলামে তার প্রথমে না-বলার অধিকার থাকবে না। এমনকী নিলামের সর্বোচ্চ দর মিটিয়ে খনিটি ধরে রাখতেও পারবে না তারা।
৪২টি চালু খনির বার্ষিক উত্পাদন ৯ কোটি টন কয়লা। বাকি ৩২টির সম্ভাব্য উত্পাদন ক্ষমতা ১২ কোটি টন। নিলাম দেখভালের ব্যাপারে কয়লা মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব বিবেক ভরদ্বাজকে ‘মনোনীত কর্তৃপক্ষ’ স্থির করেছে কেন্দ্র। এই কর্তৃপক্ষই স্থির করবেন, সর্বোচ্চ সংখ্যক কতগুলি খনি একটি সংস্থা বা ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy