খাদ্যশস্য ভরতে চটের বস্তার বাধ্যতামূলক ব্যবহার ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার কথা সদ্য জানিয়েছে কেন্দ্র। বস্তা জোগানোয় দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যে ৭টি চটকলকে বরাত দেওয়া বন্ধ করেছে পঞ্জাবও। এই পরিস্থিতিতে খুব শীঘ্রই রাজ্যে পাটনীতি প্রণয়ন করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যার জন্য সেই বাম আমল থেকে আজ দীর্ঘ দিন রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করে আসছে চটকলগুলি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, রাজ্যে ধান এবং আলু রাখার ক্ষেত্রে চটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার কথা রয়েছে ওই নীতিতে।
তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন অনুমোদিত ন্যাশনাল ফেডারেশন অব জুট ওয়ার্কার্সের সভাপতি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, “খুব শীঘ্রই পাটনীতি চালু করতে চলেছে রাজ্য। নীতির খসড়া ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই তা প্রকাশ করা হবে।” প্রসঙ্গত, এর আগে শিল্পমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্য নিজের পাটনীতি তৈরির পথে হাঁটছে বলে দাবি করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা সামনে আসেনি।
অনেক দিন ধরেই রাজ্যের চটকল মালিকরা দাবি করছিলেন, চটের বস্তার ব্যবহার বাড়াতে শুধু কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। এগিয়ে আসতে হবে রাজ্যকে। তৈরি করতে হবে পাটনীতি। চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্তর কথায়, “রাজ্যের চটশিল্পকে চাঙ্গা করতে পাটনীতি প্রণয়ন একান্ত জরুরি। তাই এটি চালু হলে, রাজ্যের চটশিল্প উপকৃত হবে। সারা দেশে চটশিল্পে শ্রমিকের সংখ্যা সাড়ে ৩ লক্ষ। যার ৭৫ শতাংশই পশ্চিমবঙ্গে।” শোভনবাবুরও যুক্তি, “শুধু চটকল কর্মী নয়, দেশের পাটচাষির ৭০ শতাংশও এই রাজ্যে।”
সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে মনে করছেন, এ বার পাটশিল্পকে ঘিরেও নতুন করে তাল ঠোকাঠুকি শুরু হতে পারে কেন্দ্র ও রাজ্যের। গত মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় বস্ত্র সচিব জানিয়েছেন যে, খাদ্যশস্য ও চিনি রাখতে চটের বস্তার বাধ্যতামূলক ব্যবহার ধাপে ধাপে বন্ধ করা হবে। এ জন্য ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া হবে জেপিএম আইনটিকে। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেরও সমালোচনা করেছে কেন্দ্র।
এ দেশে পাট চাষ ও চটকলের কেন্দ্র এই রাজ্য। কেন্দ্রীয় পাট কমিশনারের সদর দফতর কলকাতায়। জুট কর্পোরেশন এবং জাতীয় পাট পর্ষদের সদর দফতরও এই শহরে। কিন্তু এ সব সত্ত্বেও বাম আমল কিংবা বর্তমান তৃণমূল সরকারের জমানায় পাট উৎপাদন এবং তা থেকে পণ্য তৈরি কখনও শিল্পের মর্যাদা পায়নি এ রাজ্যে। শুধু তা-ই নয়। চিনি কিংবা অন্যান্য খাদ্যশস্য বস্তাবন্দি করার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে চটের বস্তা ব্যবহারের যে কেন্দ্রীয় (জেপিএম) আইন ১৯৮৭ সাল থেকে রয়েছে, তা-ও কখনও মানেনি পশ্চিমবঙ্গ।
যদিও চটের বস্তার জন্য সংরক্ষণ কমানোর কেন্দ্রীয় নীতির প্রতিবাদে সম্প্রতি জুট কর্পোরেশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় আইএনটিটিইউসি। শোভনবাবু জানান, আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে জুট কর্পোরেশনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। রাজ্যে ন্যাশনাল জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কর্পোরেশনের বন্ধ পাঁচটি মিল চালু করার দাবি জানানো হয়েছে বলে দাবি আইএনটিটিইউসি-র নেতা সন্তোষ মজুমদারের। দাবি তুলে ধরার কথা জানান জেসিআই ফিল্ড এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বসুও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy