Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

গ্রিসে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত

সরু সুতোয় ঝুলছে গ্রিসের ভবিষ্যৎ। আগামী রবিবারের গণভোটে গ্রিক জনগণ কোন পথ বেছে নেবেন, তার উপরই নির্ভর করছে এই ইউরোপীয় রাষ্ট্রটির ভবিষ্যৎ। সরকারি খরচ কমানো ও কর বাড়ানোর শর্তে ত্রাণের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ‘না’ ভোট, নাকি তা মেনে নিয়ে ‘হ্যাঁ’ ভোট, কোনটি তাঁদের পছন্দ, তা স্পষ্ট নয় এখনও।

হ্যাঁ-না বিতর্কের মধ্যেই আথেন্সে পুড়ছে ইউরোপের পতাকা। ছবি: এএফপি।

হ্যাঁ-না বিতর্কের মধ্যেই আথেন্সে পুড়ছে ইউরোপের পতাকা। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৬
Share: Save:

সরু সুতোয় ঝুলছে গ্রিসের ভবিষ্যৎ।

আগামী রবিবারের গণভোটে গ্রিক জনগণ কোন পথ বেছে নেবেন, তার উপরই নির্ভর করছে এই ইউরোপীয় রাষ্ট্রটির ভবিষ্যৎ। সরকারি খরচ কমানো ও কর বাড়ানোর শর্তে ত্রাণের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ‘না’ ভোট, নাকি তা মেনে নিয়ে ‘হ্যাঁ’ ভোট, কোনটি তাঁদের পছন্দ, তা স্পষ্ট নয় এখনও। তবে শুক্রবার প্রকাশিত জনমত সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। ৩টি সমীক্ষায় ‘হ্যাঁ’ ভোট এগিয়ে রয়েছে একচুল। চতর্থটিতে ‘না’ ভোট সামান্য এগিয়ে।

গণভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে শুক্রবারই ছিল এই উপলক্ষে দু’পক্ষের প্রচারের শেষ দিন। আর, এ দিনই প্রকাশিত ‘অ্যালকো’-র সমীক্ষায় ধরা পড়েছে ‘হ্যাঁ’ ভোটের সমর্থকরা ০.৬ পয়েন্ট এগিয়ে। ‘এথনস’ সংবাদপত্র জানিয়েছে, ‘হ্যাঁ’ শিবিরে আছেন ৪৪.৮%, ‘না’ ভোটের দলে ৪৩.৪%। ১১.৮% এখনও দোলাচলে। মেগা টিভি-র সম্প্রচার অনুযায়ী ৪৪.১% দেবেন ‘হ্যাঁ’ ভোট, ৪৩.৭% ‘না’। শুধু চতুর্থটিতে রয়েছে ‘না’-এর পক্ষে ৪৩%। ‘হ্যাঁ’ ৪২.৫%। পাশাপাশি, অ্যালকো জানিয়েছে ৭৪% গ্রিক ইউরোপীয় মুদ্রা ইউরো-কেই পছন্দ করেন। মাত্র ১৫% পুরনো নিজস্ব মুদ্রা ড্রাকমাতে ফিরে যেতে চান। ১১% এখনও দ্বিধায়।

সংস্কারের শর্তে ত্রাণ প্রকল্প মেনে নিতে নারাজ গ্রিসের বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। এ দিন তিনি ‘না’ শিবিরের প্রচারে যোগ দেন আথেন্সে পার্লামেন্টের সামনে সিন্টাগমা স্কোয়ারে। ‘হ্যাঁ’ শিবিরের জমায়েত হয় কাছেই অবস্থিত প্যানাথেনিয়াম স্টেডিয়ামে, যেখানে আধুনিক অলিম্পিকের সূচনা হয় ১৮৯৪ সালে। পরে টেলিভিশনে এক ভাষণে সিপ্রাস আবারও ইউরোপ ও আইএমএফের শর্ত মানার বিপদ নিয়ে হুঁশিয়ার করে দেন জনগণকে। তিনি বলেন, শর্ত প্রত্যাখ্যান করে ‘না’ ভোট দিলে ঋণদাতাদের সঙ্গে অনেক বেশি দর কষাকষি করতে পারবে গ্রিস। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রিস ইউরোপের সদস্য থাববে কি না, সেটা রবিবারের ভোটের বিচার্য বিষয় নয়। সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা ঋণদাতাদের এই ‘ব্ল্যাকমেল’ করার নীতি মেনে নেব কি না, আমরা দেশের অর্থনীতিকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দেব কি না।’’

এ দিকে, গ্রিস সঙ্কটের জেরে কিছুটা অনিশ্চিত বাজারে ভারতে শেয়ার সূচকের ওঠাপড়া অব্যাহত। আগের দিন ৭৫ পয়েন্ট পড়ার পরে শুক্রবার সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিন সেনসেক্স বেড়েছে ১৪৬.৯৯ পয়েন্ট। যে-বিষয়টি শেয়ার বাজার মহলকে আশার আলো দেখিয়েছে তা হল গ্রিস সঙ্কট সত্ত্বেও, বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি শেয়ার কিনতে শুরু করে বৃহস্পতিবার ভারতে ৫৭৫.৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

সাহায্যে বেসরকারি প্রয়াস

গ্রিসকে বাঁচাতে বেসরকারি উদ্যোগে তহবিল সংগ্রহ শুরু হয়েছে, যার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ইন্টারনেট মারফত তহবিল সংগ্রহের সংস্থা ইন্ডিগোগো। ১৬০ কোটি ইউরো সংগ্রহ করতে প্রচার চালাচ্ছে তারা। শুক্রবার সংগ্রহের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ লক্ষ ইউরো, দাবি সংস্থার। ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চল সাহায্য করছে। দ্বিতীয় স্থানে জার্মানি, যদিও সে দেশের সরকার গ্রিস শর্ত না-মানলে ত্রাণ নিয়ে রফায় আসতে নারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE