চা উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় হলেও চা পানের হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে ভারত। সাম্প্রতিক কালে দেশের সর্বত্র তৈরি হওয়া নিত্য নতুন ‘কফি-শপ’-এর সঙ্গেও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে দেশের চা শিল্প। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে চায়ের গ্রহণযোগ্যতা বেশ কম। ঘুরে দাঁড়াতে তাই সেই তরুণ প্রজন্মের দুয়ারেই যাচ্ছে চা শিল্পমহল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চা উৎসবে সামিল হতে ‘বিজনেস টু ইযুথ’ কর্মসূচি নিয়েছে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ)। আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিন ব্যাপী ছাত্র উৎসবে সামিল হচ্ছে তারা।
আইটিএ-র তথ্য অনুয়ায়ী, ভারতে বার্ষিক মাথাপিছু চা পানের পরিসংখ্যান প্রায় ৭৩০ গ্রাম। সেখানে অন্যান্য দেশ অনেক এগিয়ে। যেমন তুরস্ক ২ কেজি, আয়ার্ল্যান্ড ১.৯০ কেজি, চিলি ১.২৪ কেজি, মিশর ১.১ কেজি, পাকিস্তান ১.১ কেজি, রাশিয়া ১ কেজি ইত্যাদি।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ভারতে চা পানের বৈচিত্র্য কম। হালে গ্রিন বা আইস্ড-টি খাওয়ার প্রবণতা কিছুটা তৈরি হলেও সার্বিক ভাবে তা নগণ্যই। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে কফি পান করতে যতটা আগ্রহ, চায়ের ক্ষেত্রে ততটা নয়। অথচ দেশের বাজারে চায়ের ব্যবসা বাড়াতে হলে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে চা পানের আগ্রহ বাড়ানো জরুরি বলেই মনে করছে চা শিল্পমহল। কারণ এক দিকে যেমন তাঁদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, তেমনই বদল আসছে তাঁদের জীবনযাত্রাতেও। সেই বদলে যাওয়া আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকেই ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য পাখির চোখ করছে চা শিল্প।
আইটিএ-র বক্তব্য, অন্যান্য পানীয়ের মতোই চায়ের বৈচিত্র্যেরও কমতি নেই। যেমন চায়ের ক্ষেত্রেও ‘মকটেল’ তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘অর্থোডক্স মোহিতো’ বা ‘ইস্ট মিটস ওয়েস্ট’-এর মতো বিভিন্ন ধরনের মকটেল। তেমনই রকমারি আইস্ড-টি-ও রয়েছে। পাশাপাশি, চা পান স্বাস্থ্যের পক্ষেও যে ভাল, তার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যাও আছে। এই সব তথ্যই যুব সম্প্রদায়ের সামনে হাজির করে তাঁদের কাছে টানতে উদ্যোগী আইটিএ।
আইটিএ জানিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালযের ছাত্র উৎসবে (সংস্কৃতি) পড়ুয়াদের কাছে চায়ের ওই সব বৈচিত্র্যের ভাণ্ডার নিয়ে হাজির হবে তারা। থাকবে তাদের জন্য নানা ধরনের খেলার ব্যবস্থাও। চায়ের পেয়ালা নিয়ে যুব সম্প্রদায়কে আকর্ষণ করাই সংগঠনের মূল লক্ষ্য।
প্রথম পর্যায়ের এই কর্মসূচিতে এর আগে দিল্লি, চণ্ডীগড়ের ছ’টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সামিল হয়েছে আইটিএ। দ্বিতীয় পর্যায়ে পুজোর মরসুমের পরে ফের তারা অন্যান্য কলেজের উৎসবে সামিল হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy