অজয় পিরামল
এক দিকে, ঋণ খেলাপের জেরে তৈরি হওয়া বিপুল বাজার। আর অন্য দিকে, দেউলিয়া আইন দ্রুত চালু হওয়ার আশা। এই জোড়া কারণে কার্যত বিনিয়োগের ঢল নেমেছে ঋণখেলাপি সংস্থা চাঙ্গা করা এবং শোধের সম্ভাবনা ক্ষীণ, এমন ঋণ (ব্যাড লোন) কিনে নেওয়ার ব্যবসায়। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল পিরামল এন্টারপ্রাইজেসের নামও। এর জন্য বেন ক্যাপিটালের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে তারা।
অজয় পিরামলের সংস্থা পিরামল এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবসা ছড়িয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা, কৌশলী লগ্নির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে। অন্য দিকে, বেন ক্যাপিটালের যাত্রা শুরু আমেরিকার বস্টনে। ১৯৮৪ সালে। প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থা হিসেবে। এক যৌথ বিবৃতিতে এই দুই সংস্থা জানিয়েছে, তাদের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হলে, এ দেশে ঋণ খেলাপের জেরে তৈরি হওয়া বিপুল বাজারে বিনিয়োগ করবে তারা।
আর্থিক হাল ভাল নয়। বাকি পড়েছে ধার। কিন্তু তা বলে ফুরিয়ে যায়নি ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা। এমন ঋণখেলাপি সংস্থা চাঙ্গা করতে সেখানে সরাসরি টাকা ঢালার পরিকল্পনা করছে পিরামল ও বেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে ওই ধরনের সংস্থার বাকি পড়া ধারও কিনে নিতে পারে তারা। শুধু আগামী কয়েক বছরেই এই বাজারে তাদের ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি (৬,৭০০ কোটি টাকা) লগ্নি করার সুযোগ রয়েছে বলে দুই সংস্থার দাবি।
ঋণ খেলাপের সমস্যা থেকে তৈরি এই বাজার দেশি-বিদেশি সংস্থার কাছে কতটা আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা স্পষ্ট তাদের আগ্রহ থেকে। কিছু দিন আগেই এই বাজারে টাকা ঢালার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ব্রুকফিল্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। প্রাথমিক ভাবে তাদের পরিকল্পনা ১০০ কোটি ডলার লগ্নির। এ জন্য যৌথ উদ্যোগে সামিল হতে স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমঝোতাপত্রও (মউ) সই করেছে কানাডার সংস্থাটি।
এই একই বাজার ধরতে প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থা অ্যাপোলো গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। কোটাক-মহীন্দ্রা গোষ্ঠী জোট বেঁধেছে কানাডার পেনশন ফান্ডের সঙ্গে। তেমনই আবার ঋণ ঢেলে সাজার (অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন) ব্যবসায় পা রাখতে অ্যাম্বিট হোল্ডিংয়ের হাত ধরেছে নিউ ইয়র্কের জে সি ফ্লাওয়ার্স। ওই একই কারণে ভারতে লগ্নির আগ্রহ দেখিয়েছে হংকঙের এসএসজি ক্যাপিটাল, বিশ্বব্যাঙ্কের শাখা আইএফসি-ও।
ঋণ খেলাপের সমস্যা সামাল দিতে আজ বহু দিনই নাভিশ্বাস রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির। ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ১.৪ লক্ষ কোটি টাকার ধার মুছে ফেলতে হয়েছে হিসেবের খাতা থেকে। সময়ে শোধ না-হওয়া ধার পৌঁছেছে ৮ লক্ষ কোটিতে। এখন এই বিপুল বাজার ধরতেই ঝাঁপাচ্ছে দেশি-বিদেশি সংস্থা। তার উপর দেউলিয়া আইন চালু হলে, সময়ে ধার শোধ করতে সমস্যায় পড়া সংস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্রুত। সে ক্ষেত্রেও ঋণখেলাপি সংস্থায় লগ্নির ব্যবসার সম্ভাবনা বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy