পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে আর্থিক প্রতারণার ঘটনায় অডিটরদের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁদের সজাগ থাকার জন্য হুশিয়ারি দিয়েছেন। এই অবস্থায় এ বার ব্যাঙ্কে অডিটর নিয়োগের পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলল তাঁদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।
সংগঠনের তরফে যুক্তি, যাদের হিসাব পরীক্ষা করা হবে, তারাই যদি অডিটর নিয়োগের দায়িত্বে থাকে, তা হলে হিসেব পরীক্ষার মান নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। আর এই কারণ দেখিয়েই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে অডিটর নিয়োগের পদ্ধতি আমূল পাল্টানোর দাবি করেছেন তারা।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কিংশুক দত্ত জানান, আগে আইসিএআইয়ের তৈরি অডিটরদের তালিকা থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঠিক করে দিত কোন ব্যাঙ্কে কোন অডিট সংস্থা নিযুক্ত হবে। কিন্তু ২০১৪-’১৫ সাল থেকে ওই ব্যবস্থা বদলেছে মোদী সরকার। নতুন বন্দোবস্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আর অডিটর নিয়োগ করে না। আইসিএআইয়ের ওই তালিকা প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাছে পাঠায়। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কই সেখান থেকে পছন্দ মতো অডিটর সংস্থাকে বেছে নেয় হিসাব পরীক্ষার জন্য।
কিংশুকবাবুদের প্রশ্ন, ‘‘ব্যাঙ্কের হিসেব অডিটররা পরীক্ষা করেন। অথচ যদি ব্যাঙ্ক পরিচালকরাই তাঁদের নিয়োগের দায়িত্বে থাকেন, তা হলে যাচাইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।’’
ফোরাম অব ফিনান্স প্রফেশনালস অ্যান্ড ইকনমিস্টসের আহ্বায়ক সুনীল কুমার গাঁধীর অভিযোগ, ‘‘এমন নজিরও রয়েছে, অডিটর হিসাব নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্ন তোলার পর, পরের বছর আর সেই অডিট সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়নি।’’
সুনীলবাবুদের বক্তব্য, অডিটর নিয়োগের ভার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর থাকলে, তাঁরা আরও স্বাধীন ভাবে হিসাব পরীক্ষা করতে পারবেন।
সংগঠনের কর্তারা জানান, ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ক্ষেত্রে কিন্তু অডিটর নিয়োগের দায়িত্ব সিএজির। নথিভুক্ত বেসরকারি সংস্থার অডিটর নিযুক্ত হয় সংস্থার শেয়ারহোল্ডারদের বার্ষিক সাধারণ সভায়। তা হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে কেন কর্তৃপক্ষের হাতেই তাঁদের নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া থাকবে?
তবে অনেকের বক্তব্য, এই প্রশ্ন অডিটরদের আরও আগে তোলা উচিত ছিল। পিএনবি কেলেঙ্কারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল কেন?
কিংশুকবাবুরা অবশ্য জানান, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে অডিটর নিয়োগের ক্ষমতা সরিয়ে নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের হাতে দেওয়ার চেষ্টা আগেই করেছিল কেন্দ্র। ২০০৬ ও ২০০৯ সালে ওই প্রস্তাব প্রতিবাদের জন্য স্থগিত রাখা হয়। ২০১৪-’১৫ সালেও প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু কানে নেয়নি কেন্দ্র।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy