সহজে ব্যবসা কিংবা বিনিয়োগ করার নিরিখে সব রাজ্যেকে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলা। নম্বর? ‘একশোয় একশো’। রাজ্যের দাবি, লগ্নি আসার পথ মসৃণ করতে নাগাড়ে সংস্কারের রাস্তায় হাঁটার কারণেই মুঠোয় এসেছে এই সাফল্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, শিল্পের পরিবেশে প্রথম এই রাজ্যে গত কয়েক বছরে বড় লগ্নি সে ভাবে কোথায়? অনেকে বলছেন, এখানে এক লপ্তে বড় জমি পাওয়াই তো কঠিন এখনও।
গত কয়েক বছরে রাজ্যে বড় শিল্পে লগ্নি এসেছে হাতে গোনা। যা বিনিয়োগ আসছে, তা মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে। কিন্তু বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সংস্কারে কেন্দ্রের বিচারে পশ্চিমবঙ্গ আপাতত দেশে প্রথম। বাণিজ্য মন্ত্রকের মূল্যায়নে এ মাসের শেষে পশ্চিমবঙ্গ একশোয় একশো পেয়ে গুজরাত, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যকে পিছনে ফেলেছে তারা। প্রশাসনের একটি অংশ বলছে, শুধু শিল্প সম্মেলন আয়োজন নয়। বড় লগ্নিকারীরা যাতে এখানে শিল্প গড়তে পারেন, তার পথও মসৃণ করা হচ্ছে।
রাজ্যের শিল্পমহল এই সাফল্যকে স্বাগত জানালেও অনেকেরই প্রশ্ন, শিল্পের জন্য এ রাজ্যের জমি-নীতি বহু সংস্থাকেই লগ্নিবিমুখ করে রেখেছে। সেজ বিরোধিতার কারণে উইপ্রো, ইনফোসিসের মতো তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার লগ্নি বহু বছর ধরে আটকে। এ ছাড়া, সিন্ডিকেট রাজ-সহ জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়ে গিয়েছে। তার মাঝেও কেন্দ্রের কাছে একশো পেয়ে রাজ্য যদি বড় লগ্নির দরজা খুলতে পারে, তবে তা বড় সাফল্য হবে বলে মনে করছে শিল্প।
শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে দেশে ক্ষুদ্র শিল্পে প্রথম স্থান (ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণে) ধরে রেখেছি। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক ও বিশ্বব্যাঙ্কের মূল্যায়নে এ বার যে প্রথম স্থান পেলাম, তাতে দেশ-বিদেশের বড় বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি করে পশ্চিমঙ্গে আসার কথা ভাববেন।’’ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, সব দফতরের যৌথ প্রয়াসেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে।
রাজ্যের দাবি, শিল্প পরিবেশ এ রাজ্যে এখন অনেক বেশি স্থিতিশীল। কোনও কর্মদিবস নষ্ট হয় না। ধর্মঘট, লকআউট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক বছরে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। লাল ফিতের ফাঁসও আলগা করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশ্ন সেই থাকছেই। অনেকে বলছেন, লগ্নি আসার পথ মসৃণ হয়তো হচ্ছে। কিন্তু তাতে ফল মিলছে কি না, সেই পরীক্ষার নম্বর এখনও বেরোয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy