টাটা স্টিল ব্রিটেনের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার পরেও তাদের কারখানার ঝাঁপ যাতে বন্ধ না-হয় তা নিশ্চিত করতে মরিয়া ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটেনবাসীর সামনে প্রতি মুহূর্তে সেই সদিচ্ছা প্রকাশে ত্রুটিও রাখছে না তারা। মঙ্গলবার যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ দক্ষিণ ওয়েলস-এ ভারতীয় ইস্পাত বহুজাতিকের পোর্ট ট্যালবট কারখানায় খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পা রাখা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন ক্যামেরন জানিয়েছেন, টুকরো টুকরো অংশ নয়, ব্রিটেনের পুরো সম্পত্তিই বেচতে হবে টাটাদের। সে জন্য যতটা সময় দরকার, নিক তারা।
তাঁর মুখপাত্রের দাবি, পরিদর্শনের উদ্দেশ্য, পোর্ট ট্যালবটের পরিস্থিতি সরেজমিনে বুঝে নেওয়া। কর্মীদের থেকে সমস্যা ও আশঙ্কার কথা শোনা। এবং ভবিষ্যতের দিশা স্থির করা। সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য বলছে, ইস্পাত শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের তাগিদ ও দায়বদ্ধতাকে সকলের সামনে তুলে ধরাও এর অন্যতম লক্ষ্য। কারণ, ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে, না বেরিয়ে যাবে, তা নিয়ে সামনেই গণভোট। ফলে টাটাদের কারখানাগুলি খুলে রাখা এবং সেখানে উৎপাদন চালু রাখার চাপ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপর। বাধ্যবাধকতা রয়েছে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার কর্মীর ছাঁটাই রোখার। যার মধ্যে পোর্ট ট্যালবটেই ৪,০০০। ওই মহলের মতে, টাটাদের সিদ্ধান্ত ব্রিটেনের গণভোটে ছাপ ফেলবে বুঝেই সতর্ক ক্যামেরন। বিশেষ করে, সস্তার চিনা ইস্পাতের দাপটে টাটারা ক্ষতির মুখে পড়লেও ওই পণ্যের বিক্রি আটকাতে সরকার তেমন পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগও যেখানে উঠেছে। অনেকেই তাই বলছেন, টাটাদের ব্যবসা রক্ষা করে কর্মীদের চাকরি বাঁচাতে বদ্ধপরিকর সরকার। চাঙ্গা হওয়ার রসদ জোগাতে তৎপর গোটা দেশের ইস্পাত শিল্পকেও। যাতে মুখরক্ষা হয় তাদের।
সরকারি মুখপাত্রের দাবি, ক্যামেরন এ দিন পোর্ট ট্যালবটে গিয়ে ব্লাস্ট ফার্নেস-সহ উৎপাদনের মূল জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন। বৈঠক করেন টাটার পদস্থ আধিকারিক ও কর্মী সংগঠনগুলির সঙ্গে। যেখানে ইস্পাত শিল্পে প্রাণ ফেরাতে সরকারের পদক্ষেপগুলিও তুলে ধরা হয়।
ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে দাবি, পোর্ট ট্যালবটে যাতে উৎপাদন চালু থাকে সে জন্য টাটাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে সরকারের দায়বদ্ধতার কথা বলেছেন ক্যামেরন। তবে একই সঙ্গে জোর দিয়েছেন গোটা প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য টাটাদের পুরো ইস্পাত ব্যবসা বিক্রির উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy