Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পেটে আঠা, পড়তে পারে চিংড়ি ব্যবসা

এই ‘কলকাতা ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প’ বা বাগদা চিংড়ি যাচ্ছে আমেরিকা, জাপান, ভিয়েতনামে এবং ইউরোপের নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামের মতো দেশে। একবার তারা চিংড়ির ভেজাল ধরে ফেললে গোটা দেশ থেকেই এই রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা কেন্দ্রের।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৯
Share: Save:

বাগদা চিংড়ির পেটে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঢোকানো হচ্ছে সাবু বা অ্যারারুটের আঠা। ওজন বেড়ে যাচ্ছে, তারপর তা পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে চিংড়িতে ভেজাল মেশানোর এই ‘কুটির শিল্প’ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। কারণ, এই ‘কলকাতা ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প’ বা বাগদা চিংড়ি যাচ্ছে আমেরিকা, জাপান, ভিয়েতনামে এবং ইউরোপের নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামের মতো দেশে। একবার তারা চিংড়ির ভেজাল ধরে ফেললে গোটা দেশ থেকেই এই রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা কেন্দ্রের। রাজ্য সরকারের কাছে তাই বাণিজ্য মন্ত্রকের জরুরি বার্তা, অবিলম্বে ভেজাল মেশানো বন্ধ করতে হবে। উল্লেখ্য, দেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার টন দেশি বাগদা রফতানি হয়, যার জেরে আয় ১৮.৫ কোটি ডলার।

প্রশ্ন হল, বাংলার মাছ নিয়ে হঠাৎ মোদী সরকারের এত মাথাব্যথা কেন?

আর্থিক বৃদ্ধির হারকে টেনে তুলতে রফতানি বাড়াতে মরিয়া কেন্দ্র। তাই সব রাজ্যকেই রফতানি বাড়াতে আর্জি জানিয়েছে তারা। পশ্চিমবঙ্গের রফতানির প্রায় ৫% চিংড়ি। গোটা দেশের চিংড়ি রফতানির ১১% যায় এ রাজ্য থেকে। সেই কারণেই হুঁশিয়ারি।

এক ঝলকে

কোথায় রফতানি

• আমেরিকা, জাপান, ভিয়েতনাম, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম

রাজ্যের ছবি

• ভারতের মোট চিংড়ি রফতানিতে রাজ্যের ভাগ ১১%

• রাজ্যের রফতানিতে চিংড়ি ৫%

অস্বস্তির কারণ

• বাগদা চিংড়ির ওজন বাড়াতে পেটে ইঞ্জেকশন

• রাজ্যে দেশি বাগদার চাষ নামমাত্র

• রাজ্যের রফতানি মার খেলে মলিন হবে দেশের ছবিও

কেন্দ্রের অন্যতম দাওয়াই, মাছ ধরার নৌকোয় স্বাস্থ্যকর ভাবে চিংড়ি রাখা না হলে লাইসেন্স বাতিল করুক রাজ্য। নতুন লাইসেন্স দেওয়ার শর্তও বেঁধে দেওয়া হোক। কারণ, আমদানিকারী দেশগুলির সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, নৌকোয় নিম্নমানের বরফ, জল ব্যবহার হচ্ছে। সঠিক ভাবে মাছ মজুতও হচ্ছে না।

এ দিকে ইঞ্জেকশন দিয়ে চিংড়ির পেটে ভেজাল ঢোকানো নিয়ে নাজেহাল সমুদ্রপণ্য রফতানিকারীরা। তাঁদের সর্বভারতীয় সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমনিতেই দেশি বাগদার চাষ কমছে। জায়গা নিচ্ছে মার্কিন প্রজাতির ‘ভ্যানামেই’ বা হোয়াইট শ্রিম্প। রাজ্যে ৫০ হাজার টন চিংড়ি চাষে দেশি বাগদা ২-৩ হাজার। সেখানেও ভেজাল। অথচ এটি অর্গ্যানিক শ্রিম্প হিসেবে ব্র্যান্ডিং হলে বিশ্বে কদর হত।’’

কী করছে রাজ্য? মৎস্য দফতরের এক কর্তা বলেন, পুলিশি অভিযান হয়েছে। সচেতনতা তৈরিরও চেষ্টা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Black Tiger Prawns Export Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE