Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিনিয়োগ চেয়েও না সেই সেজ-এ

এই সেজ তকমা না-পাওয়ার কারণেই এ রাজ্যে আটকে গিয়েছে ইনফোসিসের লগ্নি। থমকে উইপ্রোর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। কিন্তু নিজেদের দলীয় অবস্থান ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনেই মুখ্যমন্ত্রী তা দিতে নারাজ।

মধ্যমণি: ন্যাসকমের সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের নক্ষত্রদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার শহরে। —নিজস্ব চিত্র।

মধ্যমণি: ন্যাসকমের সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের নক্ষত্রদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার শহরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৬
Share: Save:

ছ’বছর পরে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে আলাদা করে দেখা হল। কিন্তু অবস্থান বদলাল না। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কাণ্ডারিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, লগ্নি টানতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের যাবতীয় চাহিদা মেটাতে তাঁর সরকার রাজি। শুধু বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (এসইজেড বা সেজ) ছাড়া। নীতিগত কারণে তা দেওয়া সম্ভব নয়।

এই সেজ তকমা না-পাওয়ার কারণেই এ রাজ্যে আটকে গিয়েছে ইনফোসিসের লগ্নি। থমকে উইপ্রোর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। কিন্তু নিজেদের দলীয় অবস্থান ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনেই মুখ্যমন্ত্রী তা দিতে নারাজ। তবে শুধু ওই তকমাটুকু ছাড়া সমগোত্রীয় সমস্ত সুবিধা দেওয়ার কথা বারবার বলেছেন তিনি। এ দিন তার সঙ্গে আবার জুড়ে দিয়েছেন যে, কেন্দ্রই তো বলছে সেজ-এর দিন এ বার ‘শেষ হওয়ার পথে’। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের দাবি, তাদের কাছে সেজ এখনও গুরুত্বপূর্ণ।

২০১১ সালে ইনফোকমের পরে বৃহস্পতিবার প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমের অনুষ্ঠানে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঋশদ প্রেমজি (উইপ্রো), রেখা মেনন (অ্যাক্সেঞ্চার), বণিতা নারায়ণন (আইবিএম), রমন রায় (কোয়াত্রো), মোহিত ঠুকরাল (জেনপ্যাক্ট), সি পি গুরনানি (টেক মহীন্দ্রা), ন্যাসকম কর্তা আর চন্দ্রশেখর প্রমুখ। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেজ ভুলে যান। নীতির কারণে তা সম্ভব নয়। এ ছাড়া যা চাইবেন, দেব।’’

তবে সেজ দিতে না-পারার কথা সরাসরি বললেও, রাজ্যকে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের লগ্নির পছন্দের গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরতে কসুর করেননি মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন দক্ষ মানবসম্পদ, পরিকাঠামো, জমি-সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা।

সেজ প্রকল্প যে আর বেশি দিন নেই, তা-ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে মনে করিয়েছেন মমতা। কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে সেজ চালু না-করলে, সেই সূত্রে করছাড় আর মিলবে না। সরকারি পরিভাষায় যাকে বলে ‘সানসেট ক্লজ’। মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতায় শব্দটি উল্লেখও করেন। অনুষ্ঠান শেষে চন্দ্রশেখর জানান, সেজ-এর মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ।

সেজ নিয়ে টানাপড়েনে এ রাজ্যে আজ অনেক দিন আটকে ইনফোসিস ও উইপ্রোর লগ্নি। সমাধান হিসেবে সেজ-এর বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল রাজ্যের তরফে যাবতীয় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা। কিন্তু তাকে সেজ-এর সমান লাভজনক বিকল্প কখনও মনে করেনি সংস্থাগুলি। সংশ্লিষ্ট শিল্পের বক্তব্য ছিল, তা বাস্তবে সম্ভব নয়। কর্পোরেট কর, আমদানি শুল্ক, পরিষেবা কর, উৎপাদন শুল্ক, কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর ছাড়ই সেজ-এ ব্যবসা করার প্রধান আকর্ষণ। যা রাজ্যের দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ফের বোঝালেন সেজ নিয়ে পুরনো অবস্থানেই অনড় তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Wipro SEZ সেজ Investment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE