প্রতীকী ছবি।
সংসদে বিল পাশ হয়নি এখনও। তা আটকে সংসদীয় যৌথ কমিটিতে। কিন্তু তাতেই আর্থিক ক্ষেত্রের খসড়া বিল ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠছে সারা দেশে। বিরোধীদের অভিযোগ, শেষমেশ এই বিল আইন হলে, দেউলিয়া ঘোষণার মুখে দাঁড়ানো ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে আর একশো শতাংশ নিশ্চিত থাকতে পারবেন না সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রের পাল্টা দাবি, কোনও ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান লালবাতি জ্বাললেও আমজনতার টাকা যাতে মার না-যায়, তা নিশ্চিত করতেই কিন্তু এই নতুন আইন আনার তোড়জোড়।
বিতর্ক মূলত খসড়া বিলটির ৫২ নম্বর ধারা নিয়ে। সেখানে প্রস্তাব, কোনও ব্যাঙ্ক দেউলিয়া ঘোষণার মুখে থাকলে, ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা হিসেবে গ্রাহকের আমানতের টাকা তাঁদের অনুমতি না-নিয়েই বাড়তি সময় আটকে রাখতে পারবে। প্রয়োজনে তা বদলে দিতে পারবে শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড ইত্যাদিতে। অর্থাৎ, টাকা রাখার সময়ে ব্যাঙ্ক এবং গ্রাহকের মধ্যে তা সুদ সমেত ফেরতের যে চুক্তি থাকে, সেটিই ওই সঙ্কটের পরিস্থিতিতে কার্যত একতরফা ভাবে বদলে দিতে পারবে ব্যাঙ্কগুলি।
বর্তমান নিয়মে, কোনও একটি ব্যাঙ্কে যতগুলি অ্যাকাউন্টে যত টাকাই কারও থাকুক না কেন, সেই ব্যাঙ্কের ব্যবসা লাটে উঠলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে ফেরত পাবেন তিনি। কারণ, গ্রাহকপিছু ওই পরিমাণ টাকাই বিমা করা থাকে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বাকি টাকার পিছনেও থাকে কেন্দ্রের অলিখিত গ্যারান্টি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি নতুন আইন চালু হলে, ওই এক লক্ষ টাকা ফেরত পাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে? থাকবে না ওই গ্যারান্টি? কর্পোরেটের ঋণ খেলাপের খেসারত দিতে হবে সাধারণ মানুষকে?
অর্থ মন্ত্রকের দাবি, বিমার বন্দোবস্ত নতুন আইনেও থাকবে। তারা বরং ওই অঙ্ক বাড়ানোর পক্ষপাতী। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি এখনও। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সরকারি গ্যারান্টিও থাকবে আগের মতো। বিশ্বজোড়া মন্দার সময়ে মার্কিন মুলুকে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল লেম্যান ব্রাদার্সের মতো নামী ব্যাঙ্ক। দেউলিয়া ঘোষণা করেছিল তারা। সেই ধাক্কার অভিঘাতে তলিয়ে গিয়েছিল বিশ্ব অর্থনীতিও। সে রকম ঘটনা যাতে আগামী দিনে ভারতে না-ঘটে, আগেভাগে তা রুখতেই এই উদ্যোগ বলে মোদী সরকারের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy