আগাছায় মুখ ঢেকেছে দার্জিলিঙের চা বাগানগুলি। দ্রুত হাল ফেরানোর জন্য অন্তত ৩০০ কোটি টাকা জরুরি দাবি করে, টি বোর্ডের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে সেই আর্থিক সাহায্য চেয়েছে চা শিল্প। কিন্তু বোর্ড চেয়ারম্যানের পাল্টা দাবি, খরচের সিংহভাগ বহন করুক শিল্পই। বোর্ড ইতিমধ্যেই এই খাতে ১০০ কোটির আর্থিক সাহায্যের জন্য সুপারিশ করেছে কেন্দ্রের কাছে। ফলে পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত বাগানগুলির পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য খরচের দায় নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রভাত বেজবড়ুয়া সোমবার জানান, গাছ কাটা-সহ বাগানের অবস্থা স্বাভাবিক করার খরচ খাতে ১০০ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছে বোর্ড। তিনি বলেন, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই, চা শিল্পের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বোর্ড চায় খরচের এক-তৃতীয়াংশ বহন করুক সরকার। বাকিটা বাগানগুলি।’’ প্রসঙ্গত, বেজবরুয়া অবশ্য শিল্পমহলেরই প্রতিনিধি। আগে আইএএস-রাই চেয়ারম্যান হলেও, সম্প্রতি নিয়ম বদলে চা শিল্প-কর্তাদেরই চেয়ারম্যান মনোনীত করা হচ্ছে। কিন্তু সরকারি ভাবে বোর্ডের কাজকর্মের ভার থাকে আইএএস পদমর্যাদার ডেপুটি-চেয়ারম্যানের হাতে।
আর্থিক সাহায্য নিয়ে অবশ্য বিতর্কে যেতে চায় না শিল্পমহলের সংগঠন দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিএ)। তবে ডিটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসুর দাবি, এই শিল্পের সার্বিক লোকসান ৮০০-৯০০ কোটি টাকা। এ বছরেই শুধু নয়, আগামী মরসুমের গোড়াতেও চা উৎপাদন ধাক্কা খাবে। সেই হিসেবেই আয় বাবদ বাগানগুলির ক্ষতির অঙ্ক ৪২৫-৪৫০ কোটি টাকা। উপরন্তু বাগানের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, অক্টোবর থেকে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত বাগানে কোনও চা তৈরি না-হলেও আগাছা সরিয়ে, গাছ কেটে বাগানকে উৎপাদন শুরুর যোগ্য করতে হবে। এর জেরে কাজ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অন্য দিকে, ভাঁড়ারে মজুত চা-ও ফুরিয়েছে। অর্থাৎ, আয় না-থাকলেও সাত মাসে বাগান পরিষ্কার করতে খরচ হবে কমপক্ষে ৩৫০ কোটি টাকা। অন্য বছরের তুলনায় তা প্রায় দ্বিগুণ। মোট খরচের এক-তৃতীয়াংশই তাঁরা এককালীন অনুদান হিসেবে চেয়েছেন।
অন্য চায়ের সঙ্গে দার্জিলিঙের চা উৎপাদন পদ্ধতি ও ব্র্যান্ডিং, উভয় ক্ষেত্রেই ফারাক রয়েছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্পের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy