Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘আমাকে সরানো হচ্ছে’, শেষ লগ্নে স্ত্রীকে বার্তা মিস্ত্রির

২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর। ঘড়ির কাঁটা দু’পুর দু’টো ছুঁইছুঁই। টাটা গোষ্ঠীর সদর দফতর বম্বে হাউসে পরিচালন পর্ষদের বৈঠক শুরু হতে মিনিট পাঁচেক বাকি। রুটিন মাফিকই তার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন টাটা গোষ্ঠীর তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি। হঠাৎই দরজায় টোকা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০২
Share: Save:

২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর। ঘড়ির কাঁটা দু’পুর দু’টো ছুঁইছুঁই। টাটা গোষ্ঠীর সদর দফতর বম্বে হাউসে পরিচালন পর্ষদের বৈঠক শুরু হতে মিনিট পাঁচেক বাকি। রুটিন মাফিকই তার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন টাটা গোষ্ঠীর তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি। হঠাৎই দরজায় টোকা।

বোর্ডের সদস্য নীতিন নোরিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঢুকে এলেন রতন টাটা। কোনও ভণিতা না-করে সাইরাসকে না কি নোরিয়া সপাট বলেছিলেন, রতন টাটার সঙ্গে বনিবনা না-হওয়ায় মিস্ত্রিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাটা ট্রাস্টস! টাটা গোষ্ঠীর হোল্ডিং সংস্থা টাটা সন্সের সিংহভাগ শেয়ার যাদের পকেটে। মিস্ত্রি বিদায়ের প্রায় এক বছর পরে নিজের ব্লগে সেই শেষ বেলার পুঙ্খানুপুঙ্খ এ ভাবেই তুলে এনেছেন নির্মাল্য কুমার। মিস্ত্রি জমানায় টাটা গোষ্ঠীর এগ্‌জিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন যিনি। সাইরাসের বিদায়ের পরে তাঁকেও সরতে হয়েছিল ওই পদ থেকে।

টাটা গোষ্ঠী থেকে সাইরাস এবং নিজেকে সরতে হওয়ার পরে ব্লগে এর আগেও টাটাদের খোলাখুলি আক্রমণ করেছেন কুমার। কিন্তু এ বারের লম্বা ব্লগ-পোস্টে যেন ‘শেষের সেই দিন’কে তুলে এনেছেন টানটান থ্রিলারের মতো। লিখেছেন, ওই দিনই সকালে পর্ষদের কয়েক জন সদস্যের নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসার কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তা বলে মিস্ত্রিকে এ ভাবে সরতে বলা ছিল যেন প্রায় বিনা মেঘে বাজ পড়ার মতো। টাটাদের তরফে না কি প্রস্তাব ছিল, নিজেই পদত্যাগ করুন মিস্ত্রি। কিন্তু সাইরাস তাঁর স্বভাবশান্ত স্বরে বলেছিলেন, যা বলার তা বোর্ডের বৈঠকেই বলবেন তিনি। বম্বে হাউসের পাঁচ তলায় সেই বৈঠকে রওনা দেওয়ার আগে শুধু স্ত্রী রোহিকা-কে পাঠিয়েছিলেন ছোট্ট বার্তা— ‘আমাকে সরানো হচ্ছে।’

প্রায় আট পাতার লম্বা এই ব্লগে কুমারের দাবি, কার্যত অনৈতিক ভাবে বোর্ডে সে দিন কোণঠাসা করা হয়েছিল মিস্ত্রিকে। দুপুর তিনটে নাগাদ নিজের ঘরে সাইরাস যখন ফিরলেন, তখন তিনি বিধ্বস্ত। অফিস থেকে নিজের জিনিস গোছানোর ফাঁকে জানতে চান পরের দিন আসার দরকার আছে কি না। রতন টাটার সঙ্গে কথা বলে টাটাদের তরফে জানানো হয়েছিল, তার প্রয়োজন নেই!

বাইরে ভিড় করে থাকা সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে সাইরাসকে সে দিন কী ভাবে বম্বে হাউস ছাড়তে হয়েছিল, তার সবিস্তার বর্ণনা দিয়েছেন কুমার। বলেছেন তাঁকে কী ভাবে সরানো হয়েছিল, তার কথা। শেষে তাঁর প্রশ্ন, মিস্ত্রির বিরুদ্ধে টাটারা এত অভিযোগ করা সত্ত্বেও কেন গত এক বছরে তাঁর বিরুদ্ধে সে ভাবে মুখ খুললেন না বিভিন্ন টাটা সংস্থার কর্ণধাররা (দু’এক জন ছাড়া)?

কুমারের কটাক্ষ, তবে কি বার্ষিক মূল্যায়নে ভাল নম্বরই পেতেন ‘চেয়ারম্যান সাইরাস’?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE