Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
লগ্নি-প্রতিশ্রুতি সঞ্জীব গোয়েন‌্‌কাদের

শিল্প টানতে শহরে স্বপ্ন ফেরি তেলঙ্গানার

পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিনিয়োগ টানতে কলকাতার বুকে দাঁড়িয়েই নিজেদের শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তি চুটিয়ে বিপণন করে গেল তেলঙ্গানা। আর হাতেগরম পাওনা হিসেবে সঙ্গে নিয়ে গেল ‘ঘরের ছেলে’ সঞ্জীব গোয়েন্‌কা গোষ্ঠীর লগ্নি-প্রতিশ্রুতি। সঙ্গে তার জন্য সমঝোতাপত্রে (মউ) সইও।

কে টি রাম রাও

কে টি রাম রাও

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিনিয়োগ টানতে কলকাতার বুকে দাঁড়িয়েই নিজেদের শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তি চুটিয়ে বিপণন করে গেল তেলঙ্গানা। আর হাতেগরম পাওনা হিসেবে সঙ্গে নিয়ে গেল ‘ঘরের ছেলে’ সঞ্জীব গোয়েন্‌কা গোষ্ঠীর লগ্নি-প্রতিশ্রুতি। সঙ্গে তার জন্য সমঝোতাপত্রে (মউ) সইও।

সোমবার কলকাতায় ঝটিতি সফরে এসেছিলেন ২০১৪ সালে রাজ্যের স্বীকৃতি পাওয়া তেলঙ্গানার শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী কে টি রাম রাও। তিনি জানান, এ দিন সঞ্জীব গোয়েন্কার সংস্থার সঙ্গে মউ সই হয়েছে তাঁদের। তেলঙ্গানায় প্যাকেটবন্দি খাবারের উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে গোয়েন্‌কার ওই সংস্থা।

বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকেই এ দিন স্থানীয় শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাও। ইমামি, কেভেন্টার্স, শ্রেয়ী গোষ্ঠী, টিটাগড় ওয়াগনসের মতো বেশ কিছু সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিমেন্ট কারখানা, জৈব জ্বালানি থেকে শুরু করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প— বিভিন্ন ক্ষেত্রে লগ্নি টানার আগ্রহ দেখিয়েছে ‘নতুন’ এই রাজ্য। রাও জানান, ইমামির সঙ্গে সিমেন্ট ও জৈব জ্বালানি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ‘ফুড ল্যাবরেটরি’ তৈরির আগ্রহ দেখিয়েছে কেভেন্টার্স।

এখন অধিকাংশ রাজ্যই লগ্নি টানতে শিল্প সম্মেলন আয়োজন করে। আর বিনিয়োগের খোঁজে অন্য রাজ্যে গিয়ে কথা বলে সেখানকার শিল্পপতিদের সঙ্গে। সে দিক থেকে রাওয়ের শহরে আসা কোনও নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে কেন্দ্র ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠিতে (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) প্রথম স্থানে রয়েছে তেলঙ্গানা। আর শুরুতে পিছিয়ে থাকলেও হালে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ। তাই ‘থার্ড বয়ের’ উঠোনে এসে ‘ফার্স্ট বয়ের’ নিজেকে জাহির করে যাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত যেখানে এ রাজ্যে লগ্নি খরার জন্য তার ভাবমূর্তির সমস্যাকে দায়ী করেন অনেকে।

আর ঠিক সেখানেই জোর দিয়ে রাও তুলে ধরেছেন তেলঙ্গানার শিল্পনীতি। তাঁর দাবি, শুধু নীতি তৈরি করা নয়, তা কার্যকর করতে তৈরি হয়েছে আইনও। তিনি বলেন, ‘‘১৫ দিনের মধ্যে ব্যবসা শুরুর অনুমোদন সরকার না-দিয়ে উঠতে পারলে, ১৬ দিনের মাথায় ধরে নেওয়া হবে অনুমোদন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ‘ডিমড্‌ অ্যাপ্রুভাল’। এবং সেই দেরির জন্য কোনও আধিকারিক দায়ী হলে, তাঁকে জরিমানা হিসেবে প্রতিদিন গুনতে হবে ১,০০০ টাকা।’’

তাঁর দাবি, এই সক্রিয় ভূমিকা তুলে ধরার সুফল হিসেবেই গত তিন বছরে ৪,৪০০ প্রকল্প ছাড়পত্র পেয়েছে। বিনিয়োগ এসেছে ৮০ হাজার কোটি টাকা। দু’ লক্ষের বেশি প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের অন্যান্য রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সেখানে টাকা ঢেলেছে অ্যাপল, গুগ্‌ল, অ্যামাজন, বোয়িং, মাইক্রোসফট, ডনিয়ার, ফেসবুকের মতো বহুজাতিক। অনেকে অবশ্য সেই সূত্রে শিল্পবান্ধব হিসেবে পরিচিত অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের কথা বলছেন।

মন্ত্রীর সামনে প্রশ্ন ছিল, দেশ জুড়ে যখন বিনিয়োগের খরা, তখন তেলঙ্গানা লগ্নি টানছে কী ভাবে? তাঁর জবাব, প্রথম সারির পাঁচ-ছ’টি রাজ্যে লগ্নি আসছে। উন্নয়নও হচ্ছে। কিন্তু বাকি পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলির ছবি ম্লান। সেই প্রথম সারির রাজ্য হিসেবেই শিল্পমহলকে তেলঙ্গানায় লগ্নির ডাক দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE