Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের মূল্যায়ন ৮০০ কোটি

উজ্জ্বল হল ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা

পাওনাদারদের নিয়ে তৈরি ওই কমিটির মূল্যায়ন অনুযায়ী, বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের সম্পদের মোট মূল্য ৮০০ কোটি টাকা। যা সংস্থার দায়ের (২০০ কোটি) প্রায় চার গুণ।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৪
Share: Save:

পুনরুজ্জীবন না কি ব্যবসা গোটানো। বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের ভবিষ্যৎ কোন খাতে বইবে, তা সম্ভবত বোঝা যাবে নভেম্বর নাগাদ। কিন্তু তার আগে ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলটি) নিয়োজিত ক্রেডিটর্স কমিটির মূল্যায়নে কিছুটা অন্তত উজ্জ্বল হল তার পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা। যদিও না-গুটিয়ে ওয়াগন তৈরির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে রেল আদৌ কতটা আগ্রহী, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে কর্মীদের মধ্যে।

পাওনাদারদের নিয়ে তৈরি ওই কমিটির মূল্যায়ন অনুযায়ী, বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের সম্পদের মোট মূল্য ৮০০ কোটি টাকা। যা সংস্থার দায়ের (২০০ কোটি) প্রায় চার গুণ। আগে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছিল, যদি শেষমেশ দেখা যায় যে, সংস্থার সম্পদ তার দায়ের দ্বিগুণ, তাহলে তার পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। আর দায় সম্পদের থেকে বেশি হলে উল্টোটা। তাই এখন মূল্যায়ন ৮০০ কোটি হওয়ায় সংস্থাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর সম্ভাবনা বাড়ল বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।

তবে কর্তৃপক্ষ মনে করলেও, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড যার আওতায়, সেই রেল মন্ত্রক সংস্থাটির পুনরুজ্জীবনে কতটা আগ্রহী, তা নিয়ে সংশয়ী কর্মীরা। এমনকী এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি গোপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কমিটির আশাজনক মূল্যায়নের পাশাপাশি সম্প্রতি সংস্থার উৎপাদন ও আয় উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। তাই আমাদের বিশ্বাস সংস্থাটিকে পুনরুজ্জীবন সম্ভব। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু রেলের তরফে কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’’ তাঁদের মতে, এ বিষয়ে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে।

বিআইএফআর উঠে যাওয়ার পরে নতুন দেউলিয়া বিধি মেনে মে মাসে এনসিএলটি-তে গিয়েছে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড। নভেম্বরের মধ্যে সংস্থার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে তারা। কিন্তু তার জন্য একের পর এক ধাপ পেরোনো শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। তারই অঙ্গ হিসেবে একটি মূল্যায়ন সংস্থাকে দিয়ে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের মূল্যায়ন করিয়েছে ক্রেডিটর্স কমিটি। যার শরিক মূলত ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক-সহ ঋণদাতারা।। তাতেই দেখা গিয়েছে সংস্থার সম্পদ ৮০০ কোটির। যদি জরুরি ভিত্তিতে তাড়াহুড়োয় সম্পত্তি বিক্রি হয়, তাতেও হাতে আসার কথা অন্তত ৬০০ কোটি।

মূল্যায়নের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংস্থা পুনরুজ্জীবনের জন্য কী কী করা জরুরি, তার পরিকল্পনা (রেজলিউশন প্ল্যান) তৈরির নির্দেশ দিয়েছে এনসিএলটি। ওই পরিকল্পনায় পাওনাদারদের বকেয়া মেটানোর পাশাপাশি সংস্থা পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনার বিশদ বিবরণ তৈরি করতে হয়। এ জন্য শীঘ্রই রেজলিউশন প্রফেশনাল বা এজেন্সি ক্রেডিটর্স কমিটি নিয়োগ করবে বলে সংস্থা সূত্রে খবর। সেই পরিকল্পনা খতিয়ে দেখেই সংস্থা পুনরুজ্জীবন বা গোটানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এনসিএলটি।

দেউলিয়া আইন অনুযায়ী, কোনও সংস্থা পুনরুজ্জীবিত করা হবে না কি গুটিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে আবেদনের ৬ মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে এনসিএলটি। বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের ক্ষেত্রে ওই সময় পূরণ হবে ২৭ নভেম্বর। কিন্তু প্রক্রিয়া যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে বাড়তি ছ’মাস সময় মিলতে পারে। যদিও সিদ্ধান্ত দ্রুত জানার বিষয়ে আশাবাদী তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE