Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জিএসটি-র চার বিল পেশ সংসদে

শেষ পর্বে পা দিল পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি রূপায়ণ। এই কর সংক্রান্ত চার-চারটি বিলই একসঙ্গে সংসদে পেশ করলেন অরুণ জেটলি। কেন্দ্রীয় জিএসটি, আন্তঃ-রাজ্য জিএসটি, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জিএসটি এবং রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ —এই চারটি বিলই আজ অর্থমন্ত্রী লোকসভায় পেশ করেছেন।

প্রত্যয়ী: সংসদ ভবনে ঢোকার মুখে অরুণ জেটলি। পিটিআই

প্রত্যয়ী: সংসদ ভবনে ঢোকার মুখে অরুণ জেটলি। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০২:৫৮
Share: Save:

শেষ পর্বে পা দিল পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি রূপায়ণ। এই কর সংক্রান্ত চার-চারটি বিলই একসঙ্গে সংসদে পেশ করলেন অরুণ জেটলি।

কেন্দ্রীয় জিএসটি, আন্তঃ-রাজ্য জিএসটি, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জিএসটি এবং রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ —এই চারটি বিলই আজ অর্থমন্ত্রী লোকসভায় পেশ করেছেন। বুধবার এগুলি নিয়ে আলোচনা হবে। তার আগে আগামী কাল মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যাতে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁদের আরও ভাল ভাবে অবহিত করা যায়। কিন্তু বিল পেশের ক্ষেত্রেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ উঠেছে।

আজ লোকসভায় কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপাল, তৃণমূলের সৌগত রায়রা অভিযোগ তোলেন, এই বিল পেশের প্রসঙ্গ কার্যসূচিতে ছিল না। ফলে তাঁরা বিলগুলি খতিয়ে দেখার যথেষ্ট সময় পাননি। কেন্দ্র ‘মাঝরাতে কারসাজি’ করেছে বলে অভিযোগ তোলেন সৌগতবাবু। চিকিৎসা সেরে লোকসভায় ফেরা সনিয়া গাঁধীও তাঁদের অভিযোগে সায় দেন।

সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার অবশ্য যুক্তি, শুক্রবার মাঝরাতেই সরকারি ওয়েবসাইটে বিল তুলে দেওয়া হয়। তাতে বিরোধীদের প্রশ্ন, কেন্দ্র কী ভাবে আশা করে যে, সাংসদরা রাত জেগে সেখানে নজর রাখবেন! তবে লোকসভার অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন বিরোধীদের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বলেন, শনিবারই সাংসদদের কাছে বিল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কাজেই তাঁদের হাতে যথেষ্ট সময় ছিল।

শেষ পর্ব

• পরিষদ বসছে ৩১শে

• তার আগেই লোকসভায় বিলটি পাশের উদ্যোগ

• চারটিই অর্থ বিল। তাই আটকাতে পারবে না রাজ্যসভা

• কেন্দ্রের আশা রাজ্য বিধানসভাগুলিও ১ জুলাইয়ের আগে পঞ্চম বিলে অনুমোদন দিয়ে দেবে।

• লক্ষ্য ১ জুলাই থেকেই নতুন কর জমানা চালু করা

২০০০ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার প্রথম জিএসটি চালুর কাজ শুরু করে। ১৭ বছর পরে আজ লোকসভায় পেশ করা বিলে জিএসটি-র সর্বোচ্চ করের হার ৪০ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ ভাবে বাকি হারগুলি হল: ৫, ১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশ।

জিএসটি চালু হওয়ার পরে করের বোঝা কমে গেলে আমজনতাকে দামে সুবিধা না-দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কর ফাঁকির ক্ষেত্রে গ্রেফতারির নিদান রয়েছে। ক্ষতিপূরণ বিল অনুযায়ী, রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি হলে প্রতি দু’মাসে কেন্দ্র তা মিটিয়ে দেবে। সেই লক্ষ্যেই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক সামগ্রী, তামাক ও কিছু ভোগ্যপণ্যের উপর সেস বসিয়ে আদায় করা অর্থে একটি তহবিল তৈরি হবে। ৫ বছর পরে তহবিলে টাকা বেঁচে গেলে তার সিংহভাগ পাবে কেন্দ্র।

এই চারটি বিলেই জিএসটি পরিষদ ছাড়পত্র দিয়েছিল। পরিষদের ৩১ মার্চের বৈঠকে নতুন কর ব্যবস্থার নিয়ম-কানুন নিয়ে আলোচনা হবে। তার আগেই মোদী সরকার লোকসভায় জিএসটি বিলগুলি পাশ করাতে চাইছে। চারটি বিলই অর্থ বিল হিসেবে পেশ করা হয়েছে। তাই লোকসভায় পাশ হওয়ার পর রাজ্যসভায় বিরোধীদের পক্ষে তা আটকানো সম্ভব হবে না। তবে পঞ্চম বিলটি রাজ্য বিধানসভাগুলিতে পাশ করাতে হবে। তা হলে স্বাধীনতার পরে এ পর্যন্ত পরোক্ষ কর ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সংস্কারে সিলমোহর দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

মোদী সরকারের লক্ষ্য, ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করা। কিন্তু পেট্রোপণ্যকে বাইরেই রাখা হয়েছে। ফলে জিএসটি চালু হলে কতখানি সুফল মিলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আজ তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, অল্প সময়েই পেট্রোপণ্য জিএসটি-র আওতায় আসবে। কেন্দ্র সেই চেষ্টা করবে। তবে রাজ্যগুলির আশঙ্কা, তাদের পরিষেবা কর ও ভ্যাট বাবদ আয় মার খাবে।

জিএসটি চালুর পরে মার্কিন বহুজাতিক অ্যাপল-এর জন্য করছাড়ের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ দেশে কারখানা তৈরির জন্য অ্যাপল মোদী সরকারের কাছে করছাড় দাবি করেছে। সীতারামন বলেন, জিএসটি চালু হলে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha GST Bills Arun Jaitley
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE