Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গন্তব্য বাংলা, ৬৫০ কোটি ফ্লিপকার্টের

সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানান, পশ্চিমবঙ্গে ৮০ একর জমিতে ‘লজিস্টিক্স হাব’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সম্ভাব্য লগ্নির অঙ্ক ৬৫০ কোটি টাকা। পরিকাঠামো তৈরি হবে ৪০ লক্ষ বর্গ ফুটে। প্রথম ধাপে ১৫ লক্ষ বর্গ ফুট।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৪
Share: Save:

বিনিয়োগের ঝুলি হাতে রাজ্যে পা রাখার প্রস্তাব দিল ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্ট। এ দেশে নতুন উদ্যোগের (স্টার্ট আপ) অন্যতম মুখ যারা।

সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানান, পশ্চিমবঙ্গে ৮০ একর জমিতে ‘লজিস্টিক্স হাব’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সম্ভাব্য লগ্নির অঙ্ক ৬৫০ কোটি টাকা। পরিকাঠামো তৈরি হবে ৪০ লক্ষ বর্গ ফুটে। প্রথম ধাপে ১৫ লক্ষ বর্গ ফুট। তাঁদের দাবি, এর দরুন প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে ৫,০০০ জনের। পরোক্ষ ভাবে কাজের সুযোগ তৈরি হবে আরও ১৫ হাজার।

মঙ্গলবার কলকাতায় ফ্লিপকার্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট অমিতেশ ঝা জানান, সংস্থার ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এই সিদ্ধান্ত। সংস্থার ব্যবসা বৃদ্ধির হারের নিরিখে পূর্বাঞ্চল প্রথম। তিনি বলেন, ‘‘দ্রুততম হারে বাড়তে থাকা ব্যবসার কারণেই এই অঞ্চলে হাব তৈরি জরুরি। পরিকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার সুবাদেই এ রাজ্যকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’’

সংস্থার মতে, পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্ব ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বাড়াতে এই কেন্দ্রই হবে তাদের বাজি। এখন পর্যন্ত কর্নাটক ও পশ্চিমবঙ্গে এ ধরনের দু’টি কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা।

কিন্তু একলপ্তে ৮০ একর পেতে সমস্যা হবে না? ফ্লিপকার্ট কর্তৃপক্ষ জানান, জমি বাছার ক্ষেত্রে সড়ক ও রেল যোগাযোগের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। শিল্প দফতর সূত্রে খবর, মাস খানেক আগেই রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের পক্ষ থেকে ফ্লিপকার্টের প্রতিনিধিদলকে জমি দেখানো হয়েছে। নিগমের খড়্গপুর ও পানাগড় শিল্পতালুকে জমি দেখেছে সংস্থা।

অর্থ তথা শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘জমি সমস্যা হবে না। রাজ্যের বিনিয়োগ পরিবেশ যে অনুকূল, তা প্রমাণ করছে এই লগ্নি।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, নির্দিষ্ট লজিস্টিক্স নীতিও লগ্নির সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, মার্কিন সংস্থা অ্যামাজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বন্টন ব্যবস্থাকেই বাজি ধরছে ২০০৭ সালে তৈরি ফ্লিপকার্ট। তাদের ব্যবসায়িক কৌশলে ছোট ও মাঝারি শহর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরে ব্যবসা বেশি করার দৌলতেই নেটবাজারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে অন্যদের টেক্কা দিতে পেরেছে সংস্থা। আর এই ব্যবসা ছড়াতে বরাবরই পণ্য পৌঁছনোর উপরে জোর দিয়েছে তারা। সমীক্ষা বলছে, ৫ বছরে ছোট শহর থেকে ব্যবসা ১৭% বাড়বে। ২০২০ সালে এ সব শহর থেকেই মোট ব্যবসার ৪০% আসবে। কিন্তু ব্যবসার এই রমরমার সঙ্গে বাড়বে পৌঁছে দেওয়ার ঝক্কিও।

তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, এই ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার শেষ ধাপই সবচেয়ে খরচসাপেক্ষ। গোটা প্রক্রিয়ার ৯০% খরচ হয় এই ধাপে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের হিসেব, ভারতে পণ্য পরিবহণের খরচ জিনিসের দামের ১৪%। লজিস্টিক্স হাব বা পণ্য পরিবহণ কেন্দ্র তৈরি করে সেই খরচ অনেকটাই কমানো যাবে বলে আশা করছেন ফ্লিপকার্ট কর্তৃপক্ষ।

লজিস্টিক্স হাব

• একই সঙ্গে পণ্য মজুত করা, সেখান থেকে বরাত অনুসারে বাছাই এবং সেই অনুযায়ী পরিবহণের বড় মাপের কেন্দ্র

• প্রস্তাবিত পণ্য রাখার এই জায়গা (গুদাম) সম্পূর্ণ যন্ত্রচালিত

• জিনিস বাছাই, তা মোড়কবন্দি করা, বণ্টন থেকে শুরু করে ট্রাক মারফত তার পরিবহণ— সমস্তই সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত

সংস্থার প্রস্তাব

• পশ্চিমবঙ্গে লজিস্টিক্স হাব। জমি লাগবে ৮০ একর। সমস্যা হবে না, প্রতিশ্রুতি রাজ্যের

• মোট ৪০ লক্ষ বর্গ ফুটের পরিকাঠামো। প্রথম দফায় ১৫ লক্ষ বর্গ ফুট

• সম্ভাব্য বিনিয়োগ ৬৫০ কোটি

• প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান ৫,০০০। পরোক্ষ আরও ১৫,০০০

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flipkart ফ্লিপকার্ট
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE