দুর্ভোগ: ভাল কাটেনি দুর্গা পুজো। তথৈবচ দেওয়ালির বিক্রি।
পুরোপুরি কাটেনি নোট বাতিলের জের। ফলে এখনও টান নগদে। জিএসটি চালুর পরে দাম বেড়েছে বহু পণ্যেরও। রাজধানী দিল্লি-সহ গোটা উত্তর ভারতে দীপাবলিতে তাই জামাকাপড়, আসবাব, গয়না হাত খুলে কেনার মতো টাকা নেই মানুষের। তার উপর সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা ধাক্কা দিয়েছে বাজির বাজারেও। সব মিলিয়ে বাজার সেজেছে দেওয়ালির পসরা নিয়ে। কিন্তু উধাও তার রোশনাই।
দেওয়ালির মূল বাজার উত্তর ভারতের এই ছবি তুলে ধরেছেন উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা। যেমন দুর্গা পুজোর প্রধান বাজার পশ্চিমবঙ্গেও নোটবন্দি ও জিএসটির জেরে ব্যবসা মার খাওয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। দেওয়ালির দিকে তাঁরাও তাকিয়ে ছিলেন। তবে দেশের যা প্রবণতা, তাতে হতাশ পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরাও। ব্যবসায়ী মহলের দাবি, সাধারণত সারা বছরের ব্যবসার ৪০% উঠে আসে উৎসব মরসুমে। সে বাজার ধাক্কা খাওয়া মানে গোটা বছরের হাল খারাপ হওয়া।
পুরনো দিল্লির সদর বাজার থেকে পূর্ব দিল্লির গাঁধীনগর মার্কেট। করোল বাগের গয়নার দোকান থেকে খারি বাওলির কাজু-কিসমিসের সম্ভার— বাজারে উৎসবের আমেজই উধাও। দেওয়ালিতে মূলত উত্তর ভারতের মানুষ ঘর-গেরস্থালির জিনিস কেনেন। ধনতেরসে গয়না কেনেন গিন্নিরা। উপহার পাঠানো হয় বাক্স-বন্দি কাজু-কিসমিস, মিষ্টি। সব ক্ষেত্রেই বাজার বেহাল। অথচ বছরের বিক্রির ১৫% হয় দেওয়ালির মরসুমে।
পুরনো দিল্লির খারি বাওলিতে এশিয়ার বৃহত্তম ড্রাই ফ্রুট ও মশলার পাইকারি বাজার। ফতেপুরী মসজিদের পাশেই ‘ড্রাই ফ্রুট কোম্পানি’র মালিক সন্দীপ জাঠিয়া বলেন, ‘‘অন্য বছরের তিন ভাগের এক ভাগ বিক্রি হচ্ছে।’’ করোল বাগের রেঘরপুরায় গয়নার বাজারে বছরের বিক্রির ৪০-৪৫% এ সময়ে হত। এ বছর তা অর্ধেক বলে পাইকারি সংস্থা প্রসূন জুয়েলার্সের মালিক পূর্ণেন্দু চৌধুরীর দাবি।
কেন এই দশা? ব্যবসায়ীদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিএআইটি-র সচিব প্রবীণ খান্ডেলওয়ালের ব্যাখ্যা, ‘‘বাজারে নগদই নেই। জমি-বাড়ি, সোনার বাজার ভাল চলছে না। এখান থেকেই নগদ অন্য বাজারে ঘুরত। তা আটকে। উল্টো দিকে ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুত করেছেন। বিক্রি নেই বলে তাঁদের টাকাও আটকে। উপরন্তু আছে জিএসটি-র ঝকমারি। ’’
খান্ডেলওয়ালের হিসেব, গোটা দেশেই গত বছরের থেকে বিক্রি ২০-৩০% কম। বছরে দেশে প্রায় ৪০ লক্ষ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়। তার মধ্যে ৫-৬ লক্ষ কোটি নবরাত্রি-দেওয়ালিতে। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘১ থেকে সওয়া ১ লক্ষ কোটির ব্যবসা মার যাবে।’’ শব্দ বাজিতে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার ফলেও ৫০০-৬০০ কোটির ব্যবসা মার খেতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy