Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জিএসটি-র আগে ফ্ল্যাটের দাম মেটাতে চাপ দিলে ব্যবস্থা

তবে নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই-এর পাল্টা দাবি, জোর করে কোনও সংস্থা অগ্রিম টাকা চাইছে না। ক্রেতাদের স্বার্থেই বলা হচ্ছে, বাড়তি করের বোঝা এড়াতে ইচ্ছুক কেউ এই টাকা জিএসটি চালু হওয়ার আগে দিয়ে দিতে পারেন। কারণ এখন যে-কর সাড়ে চার শতাংশ, তা জুলাই থেকে দাঁড়াবে প্রায় তিন গুণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০৩:১৭
Share: Save:

জিএসটি চালু হলে বেশি কর দিতে হবে বলে ভয় দেখিয়ে ১ জুলাইয়ের আগেই ফ্ল্যাটের পুরো দাম আদায়ের চেষ্টা করছেন প্রোমোটারদের একাংশ। বিভিন্ন রাজ্য সরকার মারফত এবং কেন্দ্রের কাছে সরাসরি এই অভিযোগ এসে পৌঁছেছে। আর তার পরেই এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দিল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।

ওই সব প্রোমোটার, বিল্ডার, আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার উদ্দেশে আজ বিবৃতি দিয়ে অর্থ মন্ত্রক বলেছে, জিএসটি জমানায় করের বোঝা কমলে ফ্ল্যাটের দাম, মাসিক কিস্তির পরিমাণও কমবে। তাই নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ক্রেতার থেকে পুরনো চড়া হারে কর ধরে নিয়ে দাম আদায় করতে নিষেধ করছে অর্থ মন্ত্রক। সরকারের হুঁশিয়ারি, করের বোঝা কমলে ক্রেতাকেও তার সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। না-হলে জিএসটি আইনে বেআইনি মুনাফা ঠেকানোর ধারায় ওই সব প্রোমোটার-বিল্ডারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই-এর পাল্টা দাবি, জোর করে কোনও সংস্থা অগ্রিম টাকা চাইছে না। ক্রেতাদের স্বার্থেই বলা হচ্ছে, বাড়তি করের বোঝা এড়াতে ইচ্ছুক কেউ এই টাকা জিএসটি চালু হওয়ার আগে দিয়ে দিতে পারেন। কারণ এখন যে-কর সাড়ে চার শতাংশ, তা জুলাই থেকে দাঁড়াবে প্রায় তিন গুণ। জিএসটি চালু হলে, বাড়ির দাম কমবে না বলেই দাবি করছে নির্মাণ শিল্পমহল।

অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, তাঁদের কাছে আসা অভিযোগ অনুযায়ী যাঁরা প্রথমে কিছু টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট বুকিং করে কিস্তিতে দামের একাংশ মিটিয়েছেন, তাঁদের এখন কিছু প্রোমোটার ১ জুলাইয়ের আগেই পুরো দাম মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। বলা হচ্ছে, জিএসটি চালু হলে আরও বেশি হারে কর মেটাতে হবে। কিন্তু বাস্তব হল, কেন্দ্র ও রাজ্যে চালু থাকা বিভিন্ন করের বোঝার বদলে জিএসটিতে করের চাপ কমবে। অধিকাংশ নির্মাণ-সামগ্রীতেই এখন ১২.৫ শতাংশ হারে কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক দিতে হয়। সিমেন্টে তা আরও বেশি। তারপর রাজ্য অনুযায়ী ১২.৫ থেকে ১৪.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বসে। এ ছাড়া অনেক নির্মাণ সামগ্রীতেই প্রবেশ কর দিতে হয়। এর পরে পরিষেবা কর দিতে গিয়ে এই সব আগে মেটানো কর ফেরত পাওয়া যায় না। ফলে করের উপর কর চাপে। জিএসটিতে মাত্র ১২ শতাংশ হারে কর বসবে। ফ্ল্যাটের দামে শুধুমাত্র এই করই প্রযোজ্য হবে। কাঁচামালে মেটানো কর ক্রেতাকে কর দিতে হবে না। তবে প্রোমোটার-বিল্ডাররা কাঁচামালে মেটানো কর ফেরত পাবেন না। কারণ তা হলে ১২ শতাংশ হারে মেটানো করের থেকেও বেশি ফেরত পেয়ে যেতেন তাঁরা।

জিএসটি পিছোনোর পক্ষে বিমান মন্ত্রক: সংবাদ সংস্থার খবর, জিএসটি রূপায়ণ আরও দু’মাস পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত জানিয়েছে বিমান মন্ত্রক। কেন্দ্র যখন ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করতে বদ্ধপরিকর, তখন তাদেরই একটি মন্ত্রক তা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। মন্ত্রকের দাবি, বিমান সংস্থাগুলির পরিকাঠামো নতুন ব্যবস্থা চালুর জন্য এখনও তৈরি নয়। বিভিন্ন বিমান সংস্থার অফিসাররা জানিয়েছেন, জিএসটি জমানায় বিশ্ব জুড়ে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ।

সই কেশরীনাথের: কলকাতার খবর, জিএসটি অর্ডিন্যান্সে সই করেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনি সই করে দেওয়ায় এ দিনই তা আইনে পরিণত হল। জিএসটি চালু হলে আরও কিছু কর আদায়ের জন্য অন্য একটি অর্ডিন্যান্সও প্রয়োজন। সেটি আজ, শুক্রবার রাজ্যপাল সই করবেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GST Real Estate জিএসটি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE