Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
খরচ বাড়ার ধাক্কা

স্মৃতির পাতায় ঠাঁই পেতে পারে মারি, গ্লুকোজ, মিল্ক বিস্কুট

চায়ের আড্ডা থেকে এ বার হারিয়ে যেতে পারে বহু যুগের তিন সঙ্গী— মারি, গ্লুকোজ ও মিল্ক বিস্কুট। হালে হাজারো বিস্কুটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যারা এখনও আদায় করে নেয় গেরস্তের ভরসা। বিস্কুট শিল্পের দাবি, আশঙ্কার প্রহর গোনা শুরু হয়েছে উৎপাদন খরচ বাড়া ও লাভ তলানিতে ঠেকাতেই।

গার্গী গুহঠাকুরতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১১
Share: Save:

চায়ের আড্ডা থেকে এ বার হারিয়ে যেতে পারে বহু যুগের তিন সঙ্গী— মারি, গ্লুকোজ ও মিল্ক বিস্কুট। হালে হাজারো বিস্কুটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যারা এখনও আদায় করে নেয় গেরস্তের ভরসা। বিস্কুট শিল্পের দাবি, আশঙ্কার প্রহর গোনা শুরু হয়েছে উৎপাদন খরচ বাড়া ও লাভ তলানিতে ঠেকাতেই। তাদের আশঙ্কা, এর উপর পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু হয়ে গেলে লোকসানের বহর এতটাই বাড়বে যে, উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হতে পারে।

যদিও দাম কম হওয়ার সুবাদে এই তিন বিস্কুটের চাহিদা এখনও বিপুল। এবং সেই সূত্রে ভারতে ৩৬ হাজার কোটি টাকার সংগঠিত বিস্কুট বাজারের অর্ধেকই এদের দখলে। কিন্তু বিস্কুট ম্যানুফ্যাকচারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, সেগুলি তৈরির উপাদানের দাম এত দ্রুত বাড়ছে যে, খরচ মাত্রা ছাড়াচ্ছে। ফলে লাভের মুখ প্রায় দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। যে-কারণে গত তিন বছর ধরে উৎপাদন ২০% ছেঁটে ফেলতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাগুলি।

আরও পড়ুন: নিখরচার পরিষেবা শেষে মাসুলের কুস্তি

সংগঠনের মুখপাত্র ময়াঙ্ক শাহ বলেন, ‘‘গত এক দশকে চিনি, ময়দা ও ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ৬২ শতাংশ। অথচ এই সব বিস্কুটের দাম এখনও কেজি প্রতি ১০০ টাকার কম।’’ আবার কাঁচামালের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে যে দাম বাড়ানো হবে, তেমন ভাবনাও অবাস্তব বলে মনে করছে বিস্কুট সংস্থাগুলি। কারণ, সস্তা দরই মারি, গ্লুকোজ, মিল্ক বিস্কুটের ব্যবসার ইউএসপি। এই অবস্থায় বিস্কুট দুিনয়া থেকে এগুলির পাট গোটানোর ভয় আরও চেপে বসছে জিএসটি জমানা চালুর দিন এগিয়ে আসায়।

ময়াঙ্কের দাবি, কাঁচামালের খরচ বইতে গিয়ে বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের লভ্যাংশ তলানিতে ঠেকেছে। এ বার জিএসটি এলে লোকসান আরও বাড়বে। কারণ, কম দামি বিস্কুটে উৎপাদন শুল্কে ছাড় মেলে। যা চালু ২০০০ সাল থেকে। জিএসটি কার্যকর হলে করের হিসাবে দামি বিস্কুটের সঙ্গে মারি বা গ্লুকোজের কোনও ফারাক থাকবে না। কম দামি বিস্কুটের বদলে দামি বিস্কুটে বেশি কর দিতে প্রস্তুত বিস্কুট প্রস্তুতকারকরা।

বিস্কুট শিল্পমহলের ক্ষোভ, মাত্র দুই বা তিন শতাংশ লভ্যাংশ হাতে পেয়ে এই চাপ নেওয়া অবাস্তব। সে ক্ষেত্রে এই সব বিস্কুটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য। তবে চূড়ান্ত এই পথ বেছে নেওয়ার আগে অ্যাসোসিয়েশন এই সব বিস্কুটে জিএসটি পুরো মকুব করতে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির দাবি, এই কম দামি অথচ পুষ্টিকর বিস্কুটগুলি হারিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়বেন।

তবে সেই দিন সত্যি আসছে কি না, তা জানতে আপাতত জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, ওই মাসেই জিএসটি চালুর চেষ্টা করছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Biscuit GST
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE