Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গুজরাতে ভোটের টানেই কমলো জিএসটি

বাকি যে ৫০টি পণ্যে এখনও ২৮ শতাংশ কর চাপবে, তার মধ্যে সিমেন্ট, রংয়ের মতো কিছু পণ্য ছাড়া বাকি সবই বিলাসসামগ্রী, দামি ভোগ্যপণ্য বা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্য। রেস্তোরাঁয় খাওয়ার খরচ কমাতেও জিএসটি-র হার হল মাত্র ৫ শতাংশ। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

খোদ নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে বিধানসভার ভোট দোরগোড়ায়।

এত দিন বিরোধীদের দাবি সত্ত্বেও অনড় মোদী সরকার গুজরাতের আমজনতার ক্ষোভ বুঝে জিএসটি-র হার কার্যত ঢেলে সাজল। এত দিন যে ২২৮টি পণ্যে ২৮ শতাংশ জিএসটি ছিল, তার ১৭৮টির ক্ষেত্রেই করের হার কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে।

বাকি যে ৫০টি পণ্যে এখনও ২৮ শতাংশ কর চাপবে, তার মধ্যে সিমেন্ট, রংয়ের মতো কিছু পণ্য ছাড়া বাকি সবই বিলাসসামগ্রী, দামি ভোগ্যপণ্য বা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্য। রেস্তোরাঁয় খাওয়ার খরচ কমাতেও জিএসটি-র হার হল মাত্র ৫ শতাংশ।

বিরোধীদের অভিযোগ, এ সবই গুজরাতের দিকে তাকিয়ে। টুইটারে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘ধন্যবাদ গুজরাত। সংসদ বা সাধারণ বুদ্ধি যা করতে পারেনি, তোমার ভোট তা-ই করে দিল।’ আর বিরোধীদের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মন্তব্য, ‘‘গুজরাত নির্বাচনের জেরে যদি গোটা ভারতের মানুষের কল্যাণ হয় তবে তো ভাল কথা।” প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, ‘‘জিএসটি পরিষদের সিদ্ধান্তে মানুষের আরও সুবিধা হবে।’’

বিরোধীরাও অবশ্য কৃতিত্ব দাবির চেষ্টায় কসুর করেনি। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যেমন বলেন, ‘‘আমি চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে বলেছিলাম, ভোগ্যপণ্য বা হানিকর পণ্য ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে জিএসটি কমিয়ে ১৮% করা হোক।’’ পরিষদের সিদ্ধান্তকে তাঁদের জয় বলে দাবি করেছেন কংগ্রেসের অর্থমন্ত্রীরাও।

রাজনীতির বাইরে চিন্তার বিষয় হল, একসঙ্গে এতগুলি পণ্যে কর কমায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় কম হওয়ার আশঙ্কা। এমনিতেই জুলাই থেকে চালুর পর জিএসটি আদায় ধাপে ধাপে কমেছে। তার উপরে, ছোট ব্যবসায় নির্দিষ্ট হারে কর মেটানোর সুবিধা কম্পোজিশন স্কিমে ব্যবসায়ীদের মতো উৎপাদনকারীদের জন্যও করের হার ২ থেকে কমিয়ে ১% করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এর পরিসীমা ১ কোটি থেকে বাড়িয়ে ১.৫ কোটি টাকা করা হবে। এতে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে। জেটলির যুক্তি, ‘‘করের হার কমলে কর মেটানোর পরিমাণ বাড়বে।’’

‘কম্পোজিশন স্কিম’-এ থাকা ব্যবসায়ীদের অন্য রাজ্যে পণ্য পাঠাতে দেওয়ার বিষয়ে আজ ঐকমত্য হয়নি। তবে কর রিটার্ন ফাইলের জটিলতা কমাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আপাতত সবাইকেই শুধু জিএসটি রিটার্নের ১ নম্বর ও ৩বি ফর্ম জমা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে পণ্য বিক্রি ও কাঁচামাল কেনার হিসেব মিলিয়ে কাঁচামালে মেটানো কর ফেরতের হিসেব কী ভাবে হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE