Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
আজ বৈঠক টাটা সন্স, টিসিএস পর্ষদের

মিস্ত্রির বিরুদ্ধে তোপ ভট্টের

টাটা-মিস্ত্রি সংঘাতে এ বার নতুন মোড়। টাটা গ্লোবাল বেভারেজেস-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার একদিনের মাথায় মুখ খুললেন হরীশ ভট্ট। এবং সরাসরি মিস্ত্রির বিরুদ্ধে টাটা সন্সের সঙ্গে ‘শত্রুতা’র অভিযোগ আনলেন।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৬
Share: Save:

টাটা-মিস্ত্রি সংঘাতে এ বার নতুন মোড়।

টাটা গ্লোবাল বেভারেজেস-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার একদিনের মাথায় মুখ খুললেন হরীশ ভট্ট। এবং সরাসরি মিস্ত্রির বিরুদ্ধে টাটা সন্সের সঙ্গে ‘শত্রুতা’র অভিযোগ আনলেন। বুধবার ভট্টের তোপ, ‘‘গোষ্ঠীর মূল সংস্থা টাটা সন্সের বিরুদ্ধে মিস্ত্রি যে-শত্রুতার মনোভাব দেখিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই টাটা গ্লোবাল বেভারেজেসের কর্ণধারের ভূমিকা থেকে তাঁকে সরিয়ে দিতে আমি মঙ্গলবার প্রস্তাব আনি। কারণ এই ধরনের কেউ চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকলে তা সংস্থার পক্ষে যথেষ্ট ঝুঁকির হত।’’

যে-সব কারণে এই ঝুঁকি বাড়ে, ভট্টের মতে সেগুলি হল:  টাটাদের ট্রেডমার্ক ব্যবহার  দক্ষ কর্মী ধরে রাখা  সহযোগীদের সঙ্গে অংশীদারি  সংস্থার আর্থিক ফলাফল  বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ  মূল্যায়ন সংস্থার তরফে রেটিং কমানো।

তবে টাটা গ্লোবাল বেভারেজেস পরিচালন পর্ষদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে এখনও তিনি অভিযোগ দায়ের করেননি বলে বুধবার দাবি করেছেন সাইরাস মিস্ত্রি, যদিও সংবাদমাধ্যমের একাংশে এ নিয়ে কিছুটা জল্পনা এ দিন ছিল। মঙ্গলবারই সাইরাস মিস্ত্রিকে টাটা গ্লোবাল বেভারেজেস (টিজিবিএল) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গেই টাটাদের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে অভিযোগ আনেন মিস্ত্রি। ঠিক যে-অভিযোগ তিনি এনেছিলেন টাটা সন্সের কর্ণধার পর থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পরে। পাশাপাশি, তাঁর দাবি, আর্থিক ফলাফল পেশ করার জন্য ডাকা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল না তাঁকে সরানোর প্রস্তাব। তবে ১০ জনের মধ্যে ৭ জন ডিরেক্টরই তাঁকে সরানোর পক্ষে রায় দিয়েছেন বলে জানিয়ে দেয় টিজিবিএল। এর আগে টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মিস্ত্রিকে।

মিস্ত্রির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন ভট্ট। তিনি বলেন, ‘‘প্রস্তাবটি পুরোপুরি আইন মেনেই পর্ষদের সামনে তোলা হয়।’’ আগে থেকে আলোচ্য-সূচিতে না-থাকলেও কোম্পানি আইন অনুসারে এ ধরনের প্রস্তাব আনা যায় বলেই দাবি ভট্টের। তিনি জানান, এ নিয়ে তিনি ‘মিস্ত্রিকে সম্মান দিয়েই’ তাঁর বিরোধিতা করছেন। তিনি জানান, বৈঠক চলাকালীন নন-এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর সন্তানকৃষ্ণনকে তা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে সময়েই ভট্টকে চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব ওঠে। এই পদ্ধতি নিয়েই আপত্তি তুলেছেন মিস্ত্রি। তাঁর দফতরের দাবি, মিস্ত্রিই বৈঠক পৌরোহিত্যের দায়িত্বে ছিলেন। তাই আর কাউকে সেই দায়িত্ব দেওয়া বেআইনি। প্রস্তাবটি তিনি খারিজও করে দেন।

টাটাদের সঙ্গে মিস্ত্রির এই সংঘাতের মধ্যেই আগামী কাল বম্বে হাউসে দুপুরের দিকে বৈঠকে বসছে টাটা সন্সের পরিচালন পর্ষদ। মিস্ত্রি বিদায়ের পরে এই প্রথম। তবে বৈঠকে মিস্ত্রি হাজির থাকবেন বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত। তার কারণ, চেয়ারম্যান পদ থেকে সরতে বাধ্য হলেও তিনি এখনও টাটা সন্সের ডিরেক্টর। পাশাপাশি, কাল সকালেই মুম্বইয়ে বৈঠকে বসছে টিসিএস পর্ষদ। লক্ষ্য সাইরাস মিস্ত্রির টিসিএস চেয়ারম্যান পদ খারিজ করার পরে তাঁকে সংস্থার পর্ষদ থেকে সরানো। এ ব্যাপারে শেয়ারহোল্ডারদের বিশেষ সাধারণ সভা ডাকা নিয়েই বৈঠকে কথা হবে। কারণ, শেয়ারহোল্ডারদের সায় ছাড়া পর্ষদ থেকে তাঁকে সরানো যাবে না।

টাটা গ্লোবাল বেভারেজেসের নন-এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবেই সংস্থার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন ভট্ট। ২০১২-’১৪ পর্যন্ত তিনি ছিলেন টিজিবিএলের সিইও-এমডি। এর আগে তিনি টাইটান ইন্ডাস্ট্রিজেও ছিলেন। মিস্ত্রি টাটা সন্সের চেয়ারম্যান হওয়ার পরে গড়া ৫ জনের গ্রুপ এগ্‌জিকিউটিভ কাউন্সিলেও ছিলেন তিনি। কাউন্সিল ভেঙে দেওয়ার পরে তিন জনকে ছেঁটে ফেলা হলেও ভট্ট থেকে যান।

তাঁর দাবি, গোষ্ঠীর একটি সংস্থার সঙ্গে যখন মূল সংস্থার বিরূপ সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন তা বিশেষ করে ছোট শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণেই মিস্ত্রিকে সরানোর প্রস্তাব আনেন ভট্ট। এ প্রসঙ্গেই জুলিয়াস সিজার নাটকে ব্রুটাসের বিখ্যাত উক্তি, ‘নট দ্যাট আই লাভ্‌ড সিজার, বাট দ্যাট আই লাভ্‌ড রোম মোর’...-এর প্রতি ইঙ্গিত করেন তিনি। মিস্ত্রিকে ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করলেও সংস্থার স্বার্থেই তাঁকে সরানোর প্রস্তাব আনতে হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Harish Bhatt TATA beverages Cyrus Mistry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE