Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আশা জাগিয়ে ১৯ মাসে সর্বোচ্চ শিল্প বৃদ্ধির হার

কিছুটা হলেও অর্থনীতির চাকা ঘোরার ইঙ্গিত দিয়ে সাড়ে চার শতাংশ ছাড়াল শিল্প বৃদ্ধির হার। শুক্রবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসে তা দাঁড়িয়েছে ৪.৭%। গত ১৯ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ২০১২ সালের অক্টোবরে (৮.৪%) শেষ বার এর থেকে বেশি বেড়েছিল শিল্পোৎপাদন। আর ঠিক আগের মাসে (গত এপ্রিল) তা ছিল ৩.৪%। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দু’মাসে শিল্প বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৪%।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৪ ০৩:০২
Share: Save:

কিছুটা হলেও অর্থনীতির চাকা ঘোরার ইঙ্গিত দিয়ে সাড়ে চার শতাংশ ছাড়াল শিল্প বৃদ্ধির হার। শুক্রবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসে তা দাঁড়িয়েছে ৪.৭%। গত ১৯ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ২০১২ সালের অক্টোবরে (৮.৪%) শেষ বার এর থেকে বেশি বেড়েছিল শিল্পোৎপাদন। আর ঠিক আগের মাসে (গত এপ্রিল) তা ছিল ৩.৪%। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দু’মাসে শিল্প বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৪%।

মূলত উৎপাদন শিল্প, খনন, বিদ্যুৎ ও মূলধনী পণ্য এই চারটি ক্ষেত্র ভাল করার কারণেই শিল্প বৃদ্ধির হার বেড়েছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে প্রকাশ। মে মাসে উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধির হার ৪.৮%। শিল্পোৎপাদন সূচকের ৭৫% জুড়ে থাকে এই শিল্প। ফলে তার বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে সূচকে। এর বাইরে খনন, বিদ্যুৎ এবং মূলধনী পণ্যের উৎপাদনও বেড়েছে যথাক্রমে ২.৭%, ৬.৩% এবং ৪.৫%। ভাল ফল করেছে ভোগ্যপণ্য শিল্পও। এই সূচকের আওতায় থাকা উৎপাদন ক্ষেত্রের মোট ২২টি শিল্পের মধ্যে ১৬টিই উত্থানের মুখ দেখেছে।

আর এই সংখ্যাই উৎসাহী করে তুলেছে বিশেষজ্ঞদের। গত দু’বছর ধরে ৫ শতাংশের নীচে আটকে থাকার পর, দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি ফেরার আশা করছেন তাঁরা। তাঁদের ধারণা, টানা দু’মাস শিল্পোৎপাদনের এই বৃদ্ধি এর প্রথম ধাপ হতে পারে। বণিকসভা সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, অর্থনীতি তার সব থেকে খারাপ সময় পেরিয়ে এসেছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বৃহস্পতিবারই যে বাজেট পেশ করেছেন, তার প্রকল্পগুলি ঠিকমতো কার্যকর হলে শিল্পমহলের আস্থা ফিরবে। সে ক্ষেত্রে দেশে আগামী দিনে আরও বেশি লগ্নি আসবে এবং আর্থিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

যদিও অনেকে আবার এখনই এতটা আশাবাদী হতে নারাজ। তাঁদের মতে, মে মাসের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ হয়েছে, তার পুরোটাই হিসাব করা হয়েছে ২০১৩ সালের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে। আর যেহেতু গত বছর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন শিল্পে সঙ্কোচন হয়েছিল, তার জেরেই এ বারের শিল্প বৃদ্ধি এতটা বেশি মনে হচ্ছে। ফিকির প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ বিড়লার যেমন অভিমত, উৎপাদন শিল্প এখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে। মূলধনী পণ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি তেমন আশাজনক নয়। তবে বাজেটে অর্থমন্ত্রী বেশ কিছু প্রস্তাব এনেছেন। তা কার্যকর হলে ওই শিল্পগুলিতে প্রাণ ফিরবে বলে চন্দ্রজিৎবাবুর সঙ্গে একমত তিনিও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতীয় আয়ের সাপেক্ষে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো জরুরি। কারণ, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জাতীয় আয় বাড়তে হবে। আর তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিতে হবে শিল্পকে। যে কারণে উৎপাদন, পরিকাঠামো, বিদ্যুৎ তৈরি ইত্যাদিতে জোর দেওয়ার কথা বাজেটে বলেছেন জেটলি। এখন বাজেট প্রস্তাব কী ভাবে কার্যকর হয়, তার দিকেই তাকিয়ে সব মহল। কারণ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মূলত বৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করার উপর বাজি ধরেই রাজকোষ ঘাটতিকে ৪.১ শতাংশে বেঁধে রাখার ‘চ্যালেঞ্জ’ নিয়েছেন জেটলি। ফলে শিল্প ঘুরে দাঁড়ালে সেই ‘কথা রাখা’ও তাঁর পক্ষে কিছুটা সুবিধাজনক হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

industrial growth high in nineteen month
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE