Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মহাপতন সুদ-হারে, ধারের চাহিদা বাড়বে কি

এক দিন আগেই তাঁর দেওয়া বক্তৃতায় ব্যাঙ্কিং শিল্পের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন চিরাচরিত নিয়মের বাইরে গিয়েও সাধারণ মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিতে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

এক দিন আগেই তাঁর দেওয়া বক্তৃতায় ব্যাঙ্কিং শিল্পের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন চিরাচরিত নিয়মের বাইরে গিয়েও সাধারণ মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিতে। আর, নোট বাতিলের পঞ্চাশ দিনের মাথায় নরেন্দ্র মোদীর সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে রবিবারই ঋণে সুদ কমানোর পথে হাঁটল বেশ কিছু ব্যাঙ্ক। এর জেরে খরচ কমবে গাড়ি-বাড়ির ঋণে এবং সেই সঙ্গে কম সুদে ঋণ নিতে পারবে শিল্পও।

এ দিন সুদ কমানোর পথে হেঁটেছে অনেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই। তবে দৌড়ে সবাইকে পিছনে ফেলে এক বছরের ঋণে সুদের হার এক ধাক্কায় ৮.৯০ থেকে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনল দেশের বৃহত্তম ঋণদাতা স্টেট ব্যাঙ্ক। এক বছরের এই হারের ভিত্তিতেই গাড়ি-বাড়ির ঋণে সুদের হার স্থির করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। নতুন বছরের প্রথম দিনটি থেকেই এই হার চালু হল বলে ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর।

এক লপ্তে এতটা সুদ কমানোর নজির সাম্প্রতিক সময়ে নেই বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু স্টেট ব্যাঙ্কই নয়, রবিবার এক বছরের ঋণে ৬৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছাঁটাই করেছে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক। সুদের হার নেমে এসেছে ৮.৬৫ শতাংশে। একই পথে হেঁটে আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)-ও এক বছরের সুদের হার কমিয়েছে ৭০ বেসিস পয়েন্ট।

অন্যান্য মেয়াদি ঋণেও ৯০ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। দু’বছরের ঋণে তা দাঁড়িয়েছে ৮.১০ শতাংশ, তিন বছরে ৮.১৫ শতাংশ। এর আগে শনিবারই সুদের হার ৬০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমিয়েছে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক এবং গত সপ্তাহে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ত্রিবাঙ্কুর।

এ সবের ফলে গাড়ির তো বটেই, বাড়ি কেনায় সুদের হারও এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাসন শিল্পে এখন যে মন্দা চলছে, এর ফলে তাতে নতুন প্রাণ সঞ্চার হতে পারে। এক হিসেবে তাঁরা দেখিয়েছেন, কেউ যদি ২০ বছরের মেয়াদে ২৫ লক্ষ টাকা ধার নেন, তা হলে এত দিন তিনি যে টাকা ইএমআই দিতেন, এ বারে দিতে হবে তার থেকে প্রায় ১৪০০ টাকা কম।

স্টেট ব্যাঙ্কের এই সুদ কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রের আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস। টুইটে তিনি জানান, নোট বাতিলের পরে ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়েছে বিপুল তহবিল। তার জেরেই সুদ কমছে। তাঁর কথায়, ‘‘এ বারে লোকে বেশি ধার করবে বলেও আশা করা যায়। এটা অর্থনীতির জন্য ভাল লক্ষণ।’’

ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্তা ভাস্কর সেন জানান, ‘‘নোট-বন্দির ফলে যে টাকা ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়েছে, তা সরকারি ঋণপত্রে রাখতে বাধ্য হয়েছে তারা। সেখানে আয় তুলনায় কম। এখন মানুষকে ঋণ নিতে উৎসাহ দিয়ে নিজেদের আয় বাড়ানোর পথই নিতে চাইছে ব্যাঙ্কগুলি।’’ ভাস্করবাবু অবশ্য মনে করেন, শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্কগুলি ঋণের পরিমাণ কতটা বাড়াতে পারবে, তা নির্ভর করবে শিল্পে ঋণের চাহিদার উপর। তবে ধার করে গাড়ি-বাড়ি কেনায় মানুষের স্বস্তি মিলবে বলে আশা ব্যাঙ্কিং মহলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Interest Demand Investors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE