Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দায় নেই ব্যাঙ্কের, লকারের ভাড়া গোনা কি তবে নেহাতই বাজে খরচ?

সোনার গয়না বা বাড়ির দলিল। লকারে রাখা জিনিস খোয়া গেলে দায় নাকি ব্যাঙ্কের নয়। প্রশ্ন নেই ক্ষতিপূরণের। তবে কি লকার ভাড়া গোনা বাজে খরচ? উত্তর খুঁজলেন অমিতাভ গুহ সরকারশুরুতেই বলে রাখি, এই নিয়ম কিন্তু নতুন নয়। ব্যাঙ্কগুলি তা জানিয়েওছে। লকার ভাড়ার চুক্তিতে অনেক আগে থেকেই এই কথা লেখা থাকে। আমরা যে জানি না, তার মূল কারণ সেই খুদে হরফের লেখা মন দিয়ে না-পড়ার বদ অভ্যেস।

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ১৩:৩৬
Share: Save:

বেশ চলছিল। হঠাৎ করে যেন বাজ পড়ল। তথ্যের অধিকার আইনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ব্যাঙ্কের লকার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন এক আইনজীবী। উত্তরে শীর্ষ ব্যাঙ্ক যা জানিয়েছে, শোরগোল তাকে ঘিরেই। সেখানে বলা হয়েছে, লকারের জিনিস সুরক্ষিত রাখতে ব্যাঙ্ক চেষ্টা করবে ঠিকই। কিন্তু, সেখানে রাখা সোনা-দানা, জরুরি কাগজ কিংবা দামি জিনিস খোয়া গেলে, তার দায় গ্রাহকেরই। সে জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ দেবে না ব্যাঙ্ক। ফলে অনেকেরই প্রশ্ন, তা হলে আর লকার-ভাড়া গুনব কেন?

শুরুতেই বলে রাখি, এই নিয়ম কিন্তু নতুন নয়। ব্যাঙ্কগুলি তা জানিয়েওছে। লকার ভাড়ার চুক্তিতে অনেক আগে থেকেই এই কথা লেখা থাকে। আমরা যে জানি না, তার মূল কারণ সেই খুদে হরফের লেখা মন দিয়ে না-পড়ার বদ অভ্যেস। আসুন আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বলা কথার মানেটা বুঝে রাখি। সঙ্গে জেনে রাখি, লকারের অন্য খুঁটিনাটিও।

জানা-অজানা

সাধারণ ভাবে আমরা সবাই জানি লকারে সোনা-দানা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস রাখা অত্যন্ত নিরাপদ। ধরে নিই এই সব জিনিসের সুরক্ষার পুরো দায়িত্ব ব্যাঙ্কের। কিন্তু সত্যি কি তাই?

আইনের দিক থেকে দেখতে গেলে পুরো ব্যাপারটা কিন্তু একটু অন্য রকম। ব্যাঙ্কের থেকে যখন আমরা লকার নিই, তখন একটি চুক্তিপত্রে সই করতে হয়। ছোট ছোট হরফে ছাপা এই চুক্তিপত্র পড়ে দেখার সময় বা ধৈর্য আমাদের থাকে না। নির্ধারিত জায়গায় তড়িঘড়ি সই করে লকারের চাবি হাতে পাই। কিন্তু এই চুক্তিপত্রে অনেক শর্ত থাকে, যা গ্রাহকের অবশ্যই জানা উচিত।

এর মধ্যে প্রধান শর্ত হল, লকারে রাখা বিভিন্ন জিনিসের সুরক্ষার ব্যাপারে ব্যাঙ্কের কোনও দায়িত্ব নেই। লকার আসলে আমরা ব্যাঙ্ক থেকে ভাড়া নিই। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের সঙ্গে ব্যাঙ্কের সম্পর্ক অনেকটা বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের মতো। ভাড়া বাড়িতে চুরি হলে যেমন বাড়িওয়ালার কোনও দায়িত্ব থাকে না, তেমনই লকার থেকে কোনও জিনিস হারালে ব্যাঙ্কও তার দায়িত্ব নেবে না। এ ছাড়া লকারে কী কী রাখা হচ্ছে, তা তো ব্যাঙ্ক জানে না। তাই সত্যিই কিছু খোয়া গিয়েছে কি না, বা গেলে কী হারিয়েছে, তা ঠিক করাও তাদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব।

এখন বিষয়টি নিয়ে বিস্তর হইচই হচ্ছে বটে। কিন্তু এই নিয়মটি নতুন নয়। বহু বছর ধরে এই নিয়ম মেনেই চলে আসছে লকার গ্রাহক ও ব্যাঙ্কের সম্পর্ক। তবে হ্যাঁ, যদি দেখা যায় যে, লকারে রাখা জিনিস হারানোর ব্যাপারে ব্যাঙ্ককর্মীদের কোনও গাফিলতি অথবা যোগসাজশ রয়েছে, তা হলে অবশ্যই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যায়।

ব্যাঙ্কের যুক্তি

লকারের সাধারণত দু’টি চাবি থাকে। একটি (মাস্টার কি) থাকে ব্যাঙ্কের কাছে। অন্যটি লকার ব্যবহারকারীর জিম্মায়। এক সঙ্গে দু’টি চাবি ব্যবহার করে তবেই লকার খোলা যায়। কেউ লকার খুলতে এলে, ব্যাঙ্কের অফিসার প্রথমে ‘মাস্টার কি’ ঘুরিয়েই লকার রুম থেকে বেরিয়ে আসেন। এর পরে নিজের চাবি ঘোরান গ্রাহক। তাই লকারে কী আছে, তা ব্যাঙ্কের জানার কথা নয়। এই যুক্তিতেই ক্ষতিপূরণ না-দেওয়ার কথা বলে ব্যাঙ্ক।

তাদের যুক্তি, ধরুন কোনও গ্রাহক লকার খুলে দাবি করলেন যে, সেখানে ৫০ লক্ষ টাকার গয়না ছিল। কিন্তু এখন রয়েছে মেরেকেটে পাঁচ লক্ষের। ব্যাঙ্ক তাঁর কথার সত্যতা যাচাই করবে কী ভাবে? গোড়ায় কত টাকার জিনিস সেখানে ছিল, তা তো ব্যাঙ্কের জানাই নেই।

আবার বাড়িতে বিয়ে বা অনুষ্ঠান থাকলে প্রায়ই লকার থেকে গয়না নিয়ে পরার পরে ফের তা রেখে আসা হয়। কী বার করা হচ্ছে বা ফেরত যাচ্ছে, তার হিসেব কিন্তু ব্যাঙ্কের কাছে নেই। তাই ক্ষতিপূরণ না-দেওয়ার খবর সামনে আসার পরে গ্রাহকরাও নড়েচড়ে বসেছেন। অনেকের প্রশ্ন, লকারে কী রাখা হচ্ছে ব্যাঙ্ক তার হিসেব রাখলে আপত্তি কোথায়?

তা হলে উপায়?

এ নিয়ে চর্চা শুরু হওয়ার পরে অনেক গ্রাহকই এখন বেশ আতান্তরে। তাঁদের প্রশ্ন, লকারের ভাড়া গোনা কি তবে নেহাতই বাজে খরচ? আমার মতে, তা বোধহয় নয়। কারণ প্রথমত, লকারের সুরক্ষা অন্তত বাড়ির থেকে তো অনেক বেশি। বাড়ির আলমারিতে গয়নাপত্তর রাখা আর ব্যাঙ্কের হেফাজতে তা রেখে আসা যে এক নয়, তা তো আমরা বিলক্ষণ জানি। তা ছাড়া, ব্যাঙ্কের লকার থেকে শুরু করে স্ট্রং রুম— এ সমস্ত কিছু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা মেনে তৈরি করতে হয়। রাখতে হয় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত। অঘটন ঘটার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ঠিকই। কিন্তু তা বলে লকারে জিনিস রাখার থেকে তা বাড়িতে রাখা ভাল, এমনটা ভাবা বোধহয় একটু বাড়াবাড়ি। তাই কথা যখন উঠেইছে, তখন লকারের খুঁটিনাটি সম্পর্কে একটু জেনে রাখাই ভাল। আসুন সেই চেষ্টা করি। বিশেষত লকার পাওয়া আজকের দিনে যেখানে মুখের কথা নয়। আলোচনা না-হয় সেখান থেকেই শুরু করা যাক।

পাওয়া সহজ নয়

এখন একটা লকার পাওয়ার জন্য প্রায় ওত পেতে বসে থাকতে হয়। যৌথ পরিবার ভেঙে অসংখ্য ছোট পরিবার সৃষ্টি হওয়ায় ভীষণ ভাবে বেড়ে উঠেছে এর চাহিদা। তার উপর ব্যাঙ্কের সব শাখায় লকারের সুবিধাও থাকে না। তা ছাড়া একবার লকার পেলে সাধারণত কেউ ছাড়তে চান না। আর তা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় কাছাকাছি কোনও ব্যাঙ্ক লকারের সুবিধা-সহ শাখা খুললে, তবেই।

তীব্র চাহিদার এই সুযোগ নিয়ে কোনও কোনও ব্যাঙ্ক আবার লকার খোলার ‘শর্ত হিসেবে’ গ্রাহকের থেকে মোটা টাকার আমানত দাবি করে। এমনকী জীবনবিমা করার শর্ত আরোপেরও অভিযোগ রয়েছে। তবে হ্যাঁ, ওই সব শর্ত অবশ্যই অ-লিখিত।

প্রথম পাঠ

লকার খোলার কথা ভাবলে, শুরুতেই কিছু কথা মনে রাখা ভাল। যেমন—

• লকার কেনা যায় না

• ব্যাঙ্কের থেকে শর্তসাপেক্ষে তা ভাড়া নিতে হয়

• ভাড়া সব সময়েই আগাম দিতে হয়

• তা বকেয়া থাকলে কিন্তু ব্যাঙ্ক লকার খুলতে না-ও দিতে পারে

• যে-ব্যাঙ্কে লকার খুলবেন, সেখানে একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকা প্রয়োজন। লকারের ভাড়া সাধারণত সেই অ্যাকাউন্ট থেকে সময় মতো কেটে নেওয়া হয়

• লকার ব্যবহারের সময় সাধারণত সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো এবং দুপুর ৩টে থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে শনিবার শুধু দিনের প্রথম অর্ধেই লকার খোলার সুযোগ পাওয়া যায়

• বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে লকার ব্যবহারের সময় আলাদা হতে পারে

• কোনও ব্যক্তি নিজের একক নামে অথবা অন্য কারও সঙ্গে যুগ্ম নামে লকার ভাড়া নিতে পারেন

• যুগ্ম অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে এক জনের মৃত্যু হলে অন্য জন লকার ব্যবহার করার অধিকারী থাকবেন

• একক অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে গ্রাহকের মৃত্যু হলে তাঁর উত্তরাধিকারীদের উপর এই অধিকার বর্তাবে

• এই সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের নিয়ম মেনে তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে হবে

• লকার ব্যবহারের ব্যাপারে নমিনেশনেরও সুবিধা নেওয়া যায়। গ্রাহকের লিখিত সম্মতি-সহ নমিনিও তা ব্যবহারের অনুমতি পেতে পারেন

• অন্য কিছু বলা না-থাকলে, যুগ্ম নামের প্রত্যেকে একক ভাবে সেটি খোলার অধিকারী

• প্রয়োজনে গ্রাহক অন্য কোনও ব্যক্তিকে লিখিত ভাবে নিজের লকারটি ব্যবহারের অনুমতিও দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য এই অনুমতি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে নথিবদ্ধ করাতে হবে

কখন চুক্তি বাতিল?

কিছু ক্ষেত্রে সতর্ক না-থাকলে, ব্যাঙ্ক আপনার সঙ্গে লকার ভাড়ার চুক্তি বাতিল করে দিতে পারে। সেই পরিস্থিতি এড়াতে নীচের বিষয়গুলি মাথায় রাখা ভাল—

• সোনা, গয়না, দলিল-দস্তাবেজ ইত্যাদি মূল্যবান দ্রব্য লকারে রাখা যেতে পারে। কিন্তু নিষিদ্ধ কোনও বস্তু রাখা যাবে না

• গ্রাহক তাঁর লকার অন্য কাউকে ভাড়া দিতে পারবেন না

• লকারের ভাড়া বাড়ানোর অধিকার ব্যাঙ্কের থাকবে

• লকারের চাবি যদি হারিয়ে যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে। এ ক্ষেত্রে লকার খোলা এবং নতুন চাবি তৈরির খরচ বহন করতে হবে গ্রাহককে

• লকারের ব্যাপারে ব্যাঙ্কের কাছে কোনও দায় থাকলে, লকারে রাখা জিনিসের উপর ব্যাঙ্কের বন্ধকী অধিকার জন্মায়

• ভাড়ার শর্ত কোনও গ্রাহক না-মানলে ব্যাঙ্ক চুক্তি খারিজ করে লকার ফিরিয়ে নিতে পারবে

• ব্যাঙ্ক শর্ত বদলাতেও পারবে।

লেখক: বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ

(মতামত ব্যক্তিগত)

জানেন কি?

আমাদের অনেকেরই ধারণা, ব্যাঙ্কে টাকা রাখা মানেই একেবারে নিশ্চিন্তি। তা আর কখনও মার যাওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই। বিশেষত, সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। মনে রাখবেন, লকারের মতোই এই টাকারও খাতায় কলমে কিন্তু সুরক্ষা তেমন নেই। কোনও ব্যাঙ্কে গ্রাহকের সব অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা ডিপোজিট ইনশিওরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন দ্বারা গ্যারান্টি প্রদত্ত। বাকি টাকার উপরে কিন্তু কোনও গ্যারান্টি নেই। অর্থাৎ, ‘ক’ ব্যাঙ্কে হয়তো আপনার অ্যাকাউন্টে পাঁচ লক্ষ টাকা রয়েছে। কোনও কারণে ব্যাঙ্কে লালবাতি জ্বললে কিংবা জমা টাকা ফেরত পাওয়ায় সমস্যা তৈরি হলে, ব্যাঙ্কের কাছে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার হকদার আপনি। দেখবেন, এ নিয়ে বাজারে কিন্তু কোনও হইচই নেই। হয়তো অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ শিখেছে ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে তা চট করে মার যায় না। আসলে পুরো ব্যাপারটাই চলে বিশ্বাসের উপর। অনেকটা লকারেরই মতো।

মাথায় রাখুন

লকার খোলা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি জিনিস মনে রাখলে সুবিধা। যেমন—

• বাড়ির যত কাছাকাছি ব্যাঙ্কের শাখায় লকার খোলা যায়, ততই ভাল। দূরে হলে মূল্যবান জিনিস নিয়ে যাতায়াতে চিন্তা বাড়ে

• সম্ভব হলে লকার যুগ্ম নামে খোলাই ভাল

• চাবি রাখতে হবে অত্যন্ত সুরক্ষিত জায়গায়। হারিয়ে গেলে ঝক্কি অনেক। খরচও কম নয়

• কোনও পাসওয়ার্ড থাকলে, আগলে রাখতে হবে সেটিকেও

• ঠিকানা পাল্টালে তা দ্রুত জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে

• লকারের চাবি বাইরের কারও হাতে না-দেওয়াই বাঞ্ছনীয়

• সময়ের আগেই ভাড়া মিটিয়ে দিলে ভাল হয়। ভাড়ার টাকা আগে থেকেই জমা রাখা যেতে পারে লকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে

• সব সময়ে কাজে লাগে এমন জিনিস লকারে না-রাখাই ভাল

• যে-সব জিনিস রেখেছেন, তার একটি তালিকা বাড়িতে রাখলে সুবিধা হয়। কোনও জিনিস লকারে রাখা হয়েছে কি না, পরবর্তী কালে তা এই তালিকা থেকে বোঝা যাবে

• যদি দলিল বা অন্য কোনও নথি লকারে রাখা হয়, তবে তার একটি ফোটোকপি বাড়িতে রাখলে সুবিধা হয়

• লকার বিভিন্ন মাপের হয়। কী ধরনের এবং কী পরিমাণ জিনিস রাখা হবে, তা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় মাপের লকারের জন্য আবেদন করতে হবে

• অনেকে লকারে অতিরিক্ত একটি তালা লাগান। এতে মানসিক শান্তি বাড়ে। তবে চাবি হারিয়ে গেলে বিপত্তিও কম নয়

• অতিরিক্ত তালা লাগানোর আর একটি কারণ হল, পাশের লকারের গ্রাহক যাতে ভুল করে আপনার লকারে তালা লাগাতে না পারেন

• লকারে রাখা মূল্যবান জিনিসের ভাগ-বাটোয়ারা যদি আগে থেকেই লিখিত ভাবে করে রাখা যায়, তবে ভবিষ্যতে অনেক পারিবারিক অশান্তি এড়ানো সম্ভব

পাঠকের প্রশ্ন ?

প্রঃ আমার ৩২ বছর বয়স। সরকারি স্কুলে সহকারী শিক্ষক। মাইনে পাই ২৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রভিডেন্ট ফান্ডে রাখি ৩,০০০ টাকা। ১০ হাজার খরচ হয় এক বছরের ছেলের পেছনে। নিজের মাসিক খরচ ৭,০০০। বাকি পড়ে থাকা সামান্য টাকা কী ভাবে জমাব?

নাসরিন ইসলাম

আপনার মাসে ২৯ হাজার টাকা বেতন থেকে সব খরচ বাদ দিলে থাকে আরও ৯,০০০ টাকা—

• পরিবারের মাথায় সুরক্ষার ছাতা ধরতে একটা টার্ম পলিসি করান

• পরিবার ও নিজের চিকিৎসা খরচ সামলাতে স্বাস্থ্যবিমা কিনুন

• দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্যগুলি পূরণের জন্য একটি এসআইপি শুরু করুন। দেখবেন সেটি যেন ইকুইটি ফান্ডে হয়। আর মিউচুয়াল ফান্ডটির তহবিল বিভিন্ন ধরনের শিল্পের একাধিক সংস্থায় ছড়ানো-ছিটোনো (ডাইভার্সিফায়েড) থাকে

• পিপিএফ অ্যাকাউন্ট না-থাকলে অবিলম্বে খুলে ফেলুন এবং ভাল পরিমাণে টাকা রাখতে থাকুন

• একটি আপৎকালীন তহবিল গড়ুন। সেভিংস অ্যাকাউন্টে হাতের বাড়তি টাকা কিছুটা করে ফেলে রাখলে সেটা বেড়ে যাবে। ক্যাশ ফান্ডেও জমা করতে পারেন।

প্রঃ আমার বয়স ৩০ বছর। সিগারেট খাই না। বার্ষিক আয় ১.৯ লক্ষ টাকা। আমি কি টার্ম পলিসি কিনতে পারি?

প্রশান্ত মণ্ডল

নিজের জন্য অবশ্যই আপনি টার্ম পলিসি কিনতে পারেন। সাধারণত, সংস্থাগুলি কারও আয়ের ২০ গুণ বেশি বিমামূল্যের কোনও প্রকল্প বেচে না। আর অন্য দিকে, সিগারেট খান না বলে আপনাকে টার্ম পলিসির প্রিমিয়ামও ধূমপায়ীদের তুলনায় বেশ খানিকটা কম দিতে হবে। এ ছাড়া, কেনার আগে যে-দু’টি জিনিস দেখে নিতে হবে এবং বিভিন্ন পলিসির মধ্যে তুলনামূলক বিচার করে সিদ্ধান্ত হবে, সেগুলি হল— প্রিমিয়াম এবং টাকা মেটানোর অনুপাত।

পরামর্শদাতা: শৈবাল বিশ্বাস

পরামর্শের জন্য লিখুন:

‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,

আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১।

ই-মেল: bishoy@abp.in

ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bank Locker Safety Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE