সহাস্য: ফিকি-র অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী ও অরুন্ধতী ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে এখনও ব্রাত্য পশ্চিমবঙ্গ। এই অভিযোগ করে রাজ্যের শিল্প তথা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের ক্ষোভ, সারা দেশে ব্যাঙ্কগুলি যে-হারে ঋণ দেয়, পশ্চিমবঙ্গে তা তুলনায় বেশ কম। শুধু স্টেট ব্যাঙ্কের হিসেব ধরলে তা আরও কম।
মন্ত্রীর অভিযোগ মানলেও ব্যাঙ্কের চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষমতা তৈরিও জরুরি। তা না-থাকলে শুধু ঋণ দিলে তা অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে অরুন্ধতীদেবীর দাবি, রাজ্যগুলি সেই পরিবেশ তৈরির জন্য সচেষ্ট।
মঙ্গলবার বণিকসভা ফিকি ও এসবিআই-এর নতুন পরিষেবা সূচনার দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে ঋণের প্রসঙ্গ ওঠে। ভারতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার পরিবর্তন নিয়ে এ দিন সকালে ফিকি আয়োজিত সভায় হাজির ছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি যে ঋণ ও আমানতের অনুপাত কম থাকার প্রসঙ্গ তুলবেন, তা আঁচ করেই অরুন্ধতীদেবী জানিয়ে দেন, এ রাজ্যে সেই ছবিটা সম্পর্কে তাঁরা অবগত।
পরে সেখানে অমিতবাবু দাবি করেন, কিসান ক্রেডিট কার্ড, ছোট-মাঝারি শিল্প কিংবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া ঋণ, সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কটি। যেমন ২০১৬-’১৭ সালে এ রাজ্যে মোট ১৬.৩৪ লক্ষ কিসান ক্রেডিট কার্ডের জন্য ব্যাঙ্কগুলি মোট ৫৯৮৭ কোটি টাকা ঋণ দিলেও এসবিআই ১.৩৩ লক্ষ কার্ডের জন্য ঋণ দিয়েছে ২২১০ কোটি টাকা। তাঁর বক্তব্য, মোট টাকার হিসেবে এসবিআই ঋণের অঙ্ক বেশি হলেও তা পৌঁছেছে অনেক কম ঋণগ্রহীতার ঘরে। ছোট শিল্পকে ঋণ দেওয়ার নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে এসবিআই। কিন্তু সব ব্যাঙ্ক মোট ২৯ হাজার কোটির বেশি ঋণ দিলেও এসবিআই-এর অঙ্ক ৩১৯৪ কোটি। অন্য দিকে, মোট কৃষি ঋণ ৩৪,১৭৫ কোটি টাকা হলেও এসবিআই দিয়েছে ২২৭ কোটি। অবশ্য এসবিআই-এর কলকাতা সার্কেলের সিজিএম পার্থপ্রতিম সেনগুপ্ত জানান, সেটি হবে প্রায় ৩১০০ কোটি টাকা।
অমিতবাবুর আরও দাবি, বস্তুত, সারা দেশে যেখানে ঋণ ও আমানতের গড় অনুপাত ৭৩.৭৩%, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে তা ৬৪%। এসবিআই-এর তা আরও কম, ৫০.৫৮%। এ কথা মেনেই অরুন্ধতীদেবীর বক্তব্য, সার্বিক ভাবেই গোটা দেশে ঋণ বণ্টন বাড়ার হার কম। তবে তিনি জোর দিচ্ছেন ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও। পরে এসবিআই-এর নিজস্ব অনুষ্ঠানে তিনি জানান, ঐতিহাসিক ভাবেই এই ক্ষমতায় দক্ষিণ ও পশ্চিমা়ঞ্চলের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে পূর্ব ও উত্তর ভারত। বস্তুত, ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা বাড়াতে সহজে ব্যবসা করার সুযোগ বা জমি সংক্রান্ত তথ্যের ‘ডিজিটাল’ ভাণ্ডার তৈরির উপর জোর দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy