নমস্কার: ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে। ছবি: এপি।
টুইটার, গুগ্ল, অ্যামাজনে যে ‘গল্প’ শুরু হল, তা শেষ হল মহাত্মা গাঁধী আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দিয়ে। মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) মঞ্চে দুনিয়ার তাবড় শিল্পপতিদের সামনে গত দু’দশকে আমূল বদলে যাওয়া ভারতের ছবি তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লক্ষ্য, তাঁদের বিনিয়োগ এ দেশের মাটিতে টেনে আনা।
তা শুনে ভারতের শিল্পমহলের একাংশ মুগ্ধ। আবার তেমনই অনেকের প্রশ্ন, যে স্বপ্নিল ভারতের ছবি মোদী এ দিন বিশ্বের দরবারে তুলে ধরলেন, এ দেশে টাকা ঢালতে এসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তার দেখা পাবেন তো? তাহলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নিয়ে এত ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচারের পরেও এখনও লগ্নিতে কেন হাত গুটিয়ে দেশীয় শিল্পমহল?
সেই ১৯৯৭ সালের পরে দু’দশক পার করে প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ বার সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে এই সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন মোদী। তিনি আসার আগে সোমবারই তাঁর কাছে আর্জি স্পষ্ট করে দিয়েছিল এখানে উপস্থিত ভারতীয় শিল্পমহল। তাদের বক্তব্য ছিল, শুধু বড় ও সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে নয়, বিশ্বের প্রথম সারির আর্থিক শক্তি হিসেবেও ভারতকে তুলে ধরুন মোদী। ফুটে উঠুক এক নতুন ভারতের ছবি। নতুন করে অর্থনীতিতে আগল উঠতে শুরু করা বিশ্বেও যেখানে বিদেশি লগ্নি সর্বতো ভাবে স্বাগত। এ দিন সেই চাহিদা পূরণেরই চেষ্টা করেছেন মোদী।
লগ্নিকারীদের সামনে ‘ভারতে আসুন’ বলেছেন। কিন্তু দেশকে তুলে ধরেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্বাভাবিক পছন্দ হিসেবে। তাঁর দাবি, বিশ্বায়নের সুফল সকলের দরজায় না পৌঁছনোয় তা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন অনেকে। উদার অর্থনীতির রাস্তা থেকে সরে গিয়ে এখন লগ্নি ও বাণিজ্যে আগল তোলার পথে হাঁটছে বহু দেশ। কিন্তু সেখানে ভারতে বিদেশি লগ্নি স্বাগত। অর্থনীতি উদার। শিল্পে সারা বিশ্বের জন্য দরজা খোলা।
শিল্পমহলের একাংশ বলছেন, এ বছর রেকর্ড বিদেশি লগ্নি এসেছে। কিন্তু সত্যিকারের লগ্নি (নতুন কারখানা গড়া, ব্যবসা শুরু ইত্যাদিতে) কম। বেশিরভাগ দেশীয় সংস্থায় শেয়ার কেনা, রুগ্ণ সংস্থায় বিনিয়োগ ইত্যাদিতে। মোদীর বক্তৃতায় সেই ছবি বদলাতে পারে। কিন্তু অনেকের প্রশ্ন, বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে। লাল ফিতে জারি। প্রশ্ন উঠছে সকলের উন্নয়ন বা সহিষ্ণুতা নিয়েও। এ অবস্থায় ফেরি করা স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তব মিলবে তো?
মোদী ফেরার বিমান ধরেছেন। উত্তর সম্ভবত বিদেশি লগ্নিকারীদের ভারতমুখী উড়ানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy