Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কাজ কই, তড়িঘড়ি বুদ্ধি তলব নীতি আয়োগের

কিন্তু গোল বেঁধেছে সেখানেও। এত দিন কাজের সুযোগ তৈরির জন্য শ্রম আইন ঢেলে সাজার কথা বলছিল সরকার।

ভিড়: প্রার্থী বহু। চাকরি কই? লাইন এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে। —ফাইল চিত্র।

ভিড়: প্রার্থী বহু। চাকরি কই? লাইন এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে। —ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

ঘুম ছুটেছে মোদী সরকারের। সামনেই গুজরাত আর হিমাচলে ভোট। ধীরে হলেও দরজায় কড়া নাড়ছে পরের লোকসভার ব্যালট-যুদ্ধ। অথচ কাজের নতুন সুযোগ তৈরির যে প্রতিশ্রুতিতে সওয়ার হয়ে গতবার দিল্লি দখল, হিমসিম খেতে হচ্ছে তার ধারে-কাছে পৌঁছতেও। এই অবস্থায় দিশেহারা কেন্দ্র চটজলদি সমাধান খুঁজছে এই সমস্যার। পরামর্শ চাইছে বিশেষজ্ঞদের। সেই ফরমান সম্প্রতি এসে পৌঁছেছে নীতি আয়োগেও।

ফলে চাপে পড়ে গিয়েছেন উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার। কর্তাদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে, পাঁচ দিনের মধ্যে যে ভাবে হোক মাথা থেকে বুদ্ধি বার করে টেবিলে হাজির করার! সেই সঙ্গে শিল্পমহল থেকে ট্রেড ইউনিয়ন, চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইটের কর্তা থেকে এনজিও— সকলকেই বৈঠকে ডেকে পরামর্শ চেয়েছেন তিনি।

কিন্তু গোল বেঁধেছে সেখানেও। এত দিন কাজের সুযোগ তৈরির জন্য শ্রম আইন ঢেলে সাজার কথা বলছিল সরকার। কিন্তু কুমারের ডাকা বৈঠকে ছোট-মাঝারি শিল্প প্রতিনিধিরা বলেছেন, তাতে কিছু হবে না। বরং সস্তার চিনা পণ্যে বাজার ছেয়ে যাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠছে তাদের। সরকার আগে সে দিকে নজর দিক।

সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের জাতীয় সভাপতি সাজি নারায়ণনও বৈঠকে হাজির ছিলেন। বিএমএসের যুক্তি, শ্রম আইন বদলালেই চাকরির সুযোগ তৈরি হবে, এমন ভাবা ভুল। কেন্দ্রের ‘শ্রমিক বিরোধী নীতি’র বিরুদ্ধে ১৭ নভেম্বর সংসদ অভিযানের কথাও জানিয়ে এসেছে তারা। বামপন্থী শ্রমিক নেতারা আবার মজা পেয়েছেন এত দিন পরামর্শ উপেক্ষা করার পরে এখন সরকার তাঁদের ডেকে পরামর্শ চাওয়ায়। এআইটিইউসি নেতা সুকুমার দামলে বলন, কেন্দ্র মানল যে, তারা মানুষকে রোজগার দিতে পারছে না। এ দিন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও এক টিভি সাক্ষাৎকারে কার্যত মেনেছেন যে, জিএসটি চালুর পরে গোড়ায় ব্যবসায়ীদের সমস্যা হচ্ছে। কর্মসংস্থান সে ভাবে হচ্ছে না।

নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বছরে ২ কোটি চাকরি হবে। সে জায়গায় ২০১৫ সালে নতুন চাকরি হয়েছিল ১.৫৫ লক্ষ। যেখানে মনমোহন-জমানায় বিশ্বজোড়া মন্দার পরেও ২০০৯ সালে ১০ লক্ষের বেশি নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। ২০১৬-তে নতুন চাকরি হয়েছে ২.৩১ লক্ষ জনের। কিন্তু তেমনই তার পরে নোট বাতিলের ধাক্কায় প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেনও।

এত দিন কেন্দ্র, নীতি আয়োগ বলেছে কাজের বাজারের আসল ছবি ফুটে উঠছে না লেবার ব্যুরোর তথ্যে। অথচ বৈঠকে তারা জানিয়ে এসেছে, ওই নিয়ে প্রশ্ন না তোলাই ভাল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE