Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কোরিয়ার হুমকির জের বহাল বাজারে

তবে এই ধরনের সংস্থা হিসেবে সরকারের খাতায় নাম ওঠায় সেবি-র আপিল ট্রাইব্যুনালে আর্জি জানিয়েছিল বেশ কিছু সংস্থা। অভিযুক্ত ৩৩১টি সংস্থার তালিকায় থাকা ওই সব সংস্থার যুক্তি ছিল, তাদের ব্যবসা বৈধ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৫
Share: Save:

অব্যাহত রয়েছে শেয়ার বাজারের পতন। আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক উত্তেজনার জেরে বৃহস্পতিবারও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব বাজার। ব্যতিক্রম নয় ভারতও। প্রশান্ত মহাসাগরীয় মার্কিন দ্বীপ গুয়ামে মাঝারি থেকে দীর্ঘ পাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র হানা নিয়ে উত্তর কোরীয় সামরিক নেতা কিম জং হুনের হুমকি এ দিনও টেনে নামায় সেনসেক্স ও নিফ্‌টিকে। পাশাপাশি, সন্দেহজনক ভুয়ো সংস্থা নিয়ে সেবির কড়াকড়ি ঘিরে আতঙ্ক তো ছিলই।

তবে এই ধরনের সংস্থা হিসেবে সরকারের খাতায় নাম ওঠায় সেবি-র আপিল ট্রাইব্যুনালে আর্জি জানিয়েছিল বেশ কিছু সংস্থা। অভিযুক্ত ৩৩১টি সংস্থার তালিকায় থাকা ওই সব সংস্থার যুক্তি ছিল, তাদের ব্যবসা বৈধ। ফলে শেয়ার লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া সমেত সেবি-র কড়াকড়ি অর্থহীন। এই আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে দু’টি সংস্থাকে বৃহস্পতিবার কিছুটা স্বস্তি দিল আপিল ট্রাইব্যুনাল (এসএটি)। জে কুমার ইনফ্রা প্রোজেক্টস এবং প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজ-এর বিরুদ্ধে সেবি-র জারি করা বিধিনিষেধে স্থগিতাদেশ জারি করল তারা।

আগামী কাল থেকেই শুরু হবে স্টক এক্সচেঞ্জগুলিতে এই দুই সংস্থার শেয়ার কেনাবেচা। আপিল আদালত আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে এটা স্পষ্ট যে, সেবি কোনও রকম তদন্ত না-করেই সংস্থাগুলিকে ভুয়ো সন্দেহ করে তালিকা তৈরি করেছে। সংস্থাগুলির শেয়ার লেনদেন বন্ধ রাখার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জগুলি যে-সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ফিরিয়ে নিতে বলেছে স্যাট। বস্তুত স্যাটের এই মন্তব্যের পরে ভুয়ো বলে অভিযুক্ত ওই সব সংস্থার লেনদেন বন্ধ করার ব্যাপারে সেবির নির্দেশটিই এখন প্রশ্নের মুখে পড়ল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দিনভর

দুই সংস্থা জে কুমার ও প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজের উপর সেবি-র নিষেধাজ্ঞা আপাতত তুলতে নির্দেশ আপিল ট্রাইব্যুনালের

এনএসই, বিএসই-তে এই দুই সংস্থার শেয়ার লেনদেন শুরু আজ থেকেই

আমেরিকাকে উত্তর কোরিয়ার হুমকির জেরে এখনও আতঙ্ক বিশ্ব বাজারে

সেবির কাছে কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক ৩৩১টি সন্দেহভাজন ভুয়ো সংস্থার নামের তালিকা পাঠিয়েছিল গত ৯ জুন। আর স্টক এক্সচেঞ্জগুলিকে বাজার নিয়ন্ত্রক নির্দেশ পাঠিয়েছে ৭ অগস্ট। এই দু’মাস দেরি নিয়েও এ দিন মন্তব্য করেছে এসএটি। তারা বলেছে, ‘‘এর থেকেই স্পষ্ট যে, এই নির্দেশ জারির ব্যাপারটিকে সেবি কোনও গুরুত্ব দেয়নি। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের কারণে ১৬৪টি সংস্থার শেয়ার লেনদেন আগে থেকেই বন্ধ ছিল। বাকি ১৬৭টির শেয়ার লেনদেনে রাশ টানা হয় চলতি সপ্তাহে। এর পরই বুধবার আপিল ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হয় বেশ কিছু সংস্থা।

এ দিন সেনসেক্স পড়েছে ২৬৬.৫১ পয়েন্ট। নিফ্‌টি ৮৭.৮০ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স থামে ৩১,৫৩১.৩৩ এবং নিফ্‌টি ৯,৮২০.২৫ অঙ্কে।

গত এক মাসের মধ্যে এ দিনই সূচকের পারা ছিল সব থেকে নীচে। এই নিয়ে টানা চার দিনে সেনসেক্স খুইয়েছে ৭৯৪ পয়েন্ট। শেয়ার বাজার পড়ার জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করা হলেও বিশেষজ্ঞরা এই পতনকে ‘করেকশন’ বা দামের সংশোধন হিসাবেই দেখছেন।

এ দিকে শেয়ার বাজার ফের কবে ঘুরে দাঁড়াবে সেটাই জানতে চাইছেন লগ্নিকারীরা। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই অবশ্য মত, সূচকের কারেকশন যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। এ বার তার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।

এ দিকে ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রির বহর এখনও তেমন কমেনি বলে শেয়ার বাজার সূত্রের খবর। এই দিনও ওই সব সংস্থা শেয়ার বিক্রির করেছে ৮৪১ কোটি টাকার। তবে অন্য দিকে মিউচুয়াল ফান্ড সহ ভারতীয় র্আথিক সংস্থাগুলি কিন্তু এই দিন ক্রেতার ভূমিকাতেই ছিল। তারা এই দিন শেয়ার কিনেছে ৫৩৩ কোটি টাকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE