Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জিএসটি-তে তেল, প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ রাজ্য

এই পরিস্থিতিতে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান প্রস্তাব দেন, সমস্যার সমাধানে দ্রুত জিএসটি-র আওতায় আসুক পেট্রোল-ডিজেল। আর তা নিয়েই রীতিমতো ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য। তার উপর আবার নতুন পর্যটনমন্ত্রীর ‘আলটপকা মন্তব্য’ অস্বস্তি বাড়াল মোদী সরকারের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর এখন যেখানে, তার তুলনায় অনেকখানি চড়া পেট্রোল-ডিজেলের দাম। এই অভিযোগ তুলে মোদী সরকারকে এখন প্রায় রোজ নিয়ম করে বিঁধছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান প্রস্তাব দেন, সমস্যার সমাধানে দ্রুত জিএসটি-র আওতায় আসুক পেট্রোল-ডিজেল। আর তা নিয়েই রীতিমতো ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য। তার উপর আবার নতুন পর্যটনমন্ত্রীর ‘আলটপকা মন্তব্য’ অস্বস্তি বাড়াল মোদী সরকারের।

এর আগে জ্বালানির দাম কমাতে রাজ্যগুলিকে একাধিক বার ভ্যাট কমানোর পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। অথচ নিজেরা উৎপাদন শুল্ক কমায়নি। এ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের আবহ এমনিতেই ছিল। এখন তাতে নতুন করে ঘি ঢেলেছে পেট্রোল-ডিজেলকে জিএসটিতে আনার প্রস্তাব।

পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রধান বলেছিলেন, ‘‘একেও জিএসটি-র আওতায় আনা হোক। তবেই তার দাম কমবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক জিএসটি পরিষদ।’’ এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ, কেরল এবং বিভিন্ন কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। এ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিতবাবুর প্রশ্ন, ‘‘এ নিয়ে কথা বলার উনি কে?’’

তিনি বলেন, ‘‘জিএসটি পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অরুণ জেটলি রাজ্যগুলির কাছে বিষয়টি নিয়ে আর্জি জানালে, তা-ও তার মানে হয়। তা ছাড়া পেট্রোল-ডিজেল জিএসটি-র আওতাতেই রয়েছে। শুধু তাতে করের হার শূন্য রেখেছে পরিষদ।’’ রাজ্যগুলি এখন যেমন ভ্যাট আদায় করছে, তেমনই করতে থাকবে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এরই মধ্যে শনিবার পর্যটনমন্ত্রী কে জে আলফোন্স বলেন, ‘‘কারা পেট্রোল কেনে? যাঁদের গাড়ি আছে, বাইক আছে। তাঁরা তো আর না খেয়ে মরছেন না। যাঁদের গাড়ি-বাইক রয়েছে, তাঁদের বেশি দাম মেটানোর ক্ষমতা রয়েছে। মেটাতেও হবে।’’

বিরোধীদের প্রশ্ন, বাইক-স্কুটার থাকা মানেই কেউ ধনী? কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর টুইট, ‘‘মোদীজি সাধারণ মানুষকে পেট্রোল-ডিজেলে বিপুল কর বসিয়ে শাস্তি দিচ্ছেন।’’ বুধবার থেকে দেশ জুড়ে বিক্ষোভের সিদ্ধান্তও নিয়েছে কংগ্রেস।

বিরোধীদের প্রশ্ন, আমজনতাকে সুহারা দিতে আগে উৎপাদন শুল্ক কেন কমাচ্ছে না কেন্দ্র? এই ক্ষোভে ঘি ঢেলেছে তেলকে জিএসটির অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে পেট্রোলিয়ামমন্ত্রীর দাবি। তেল মন্ত্রকের কর্তাদের যদিও ব্যাখ্যা, এখন উৎপাদন শুল্ক, ডিলারের কমিশন, রাজ্যের ভ্যাট মিলিয়ে প্রতি লিটার পেট্রোল বা ডিজেলে যে কর বসে, জিএসটি-তে ২৮% হারে তা চাপলেও, সেই বোঝা কমবে।

কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকের যুক্তি, ‘‘কেন্দ্র তিন বছরে পেট্রোপণ্যে ৩৮০% উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছে। আর এখন রাজ্যগুলিকে ভ্যাট কমাতে হলে, তাদের আর্থিক পরিস্থিতি করুণ হবে।’’ আক্রমণের মুখে তেলমন্ত্রীর যুক্তি, গত তিন মাসে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ১৩% বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোল-ডিজেলের দামও চড়েছে ১৮-২০ শতাংশ। সেখানে দেশে পেট্রোল-ডিজেলের দর ৩-৪ শতাংশ বেড়েছে বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE