আবেদন করে কেন্দ্রের কাছ থেকে ছ’টি খনি হাতে পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ৩১ মার্চের পর থেকে ওই খনিগুলি থেকে কয়লা তোলা আপাতত বন্ধ। ফলে কর্মহীন বেশ কয়েক হাজার মানুষ।
রাজ্য অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্গাপুজোর পর থেকেই ওই খনিগুলি থেকে ফের কয়লা তোলা শুরু হবে। যার জন্য বাজারে দরপত্র চেয়ে নতুন ‘মাইনিং ডেভেলপার অ্যান্ড অপারেটর’ বা এমডিও বাছাই করা হবে। আর, বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, যে এমডিও-ই বরাত পাক, তাকে বর্তমান শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়েই কাজ করতে হবে বলে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজ্যের পাওয়া ছ’টি খনির মধ্যে এত দিন ৫টিতে কয়লা তোলার কাজ চলছিল। বেঙ্গল এমটা সেই কয়লা তুলে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে বিক্রি করত। ওই সংস্থার অধীনেই কয়েক হাজার কর্মী এত দিন ধরে কাজ করছিলেন। বণ্টন নীতির নতুন ব্যবস্থায় খনিগুলির লিজ মালিক এখন বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। আপাতত বেঙ্গল এমটার কোনও অধিকার নেই। ফলে শ্রমিকরা বুঝতে পারছেন না, তাঁদের ভবিষ্যৎ কী।
নিগম সূত্রে খবর, এমডিও খোঁজার জন্য ‘পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন ও ব্যাপার নিগম’-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই সংস্থাটি একটি পরামর্শদাতা সংস্থা নিয়োগ করবে। তার সঙ্গে আলোচনা করে বাজারে দরপত্র চেয়ে এমডিও বাছাই করা হবে।
নতুন নিয়মে রাজ্য ফের যে-খনিগুলি হাতে পেয়েছে, সেগুলি হল: গঙ্গারামচক, তারা, বড়জোড়, বড়জোড়া, কাস্তা ও ঝাড়খণ্ডের পাচোয়াড়া। এর মধ্যে কাস্তা খনিটি নতুন। বাকি পাঁচটি থেকে কয়লা তোলা হচ্ছিল। নিগম কর্তারা জানাচ্ছেন, পুরনো খনিগুলির মধ্যে পাচোয়াড়া খনিটির গর্ভেই সব থেকে বেশি কয়লা মজুত রয়েছে। বাকিগুলিতেও যা আছে, তাতে আরও বছর দশেক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য কয়লা পাওয়া যাবে।
নিজেদের খনি বন্ধ থাকার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিগমকে এখন নির্ভর করতে হচ্ছে মজুত কয়লা এবং কোল ইন্ডিয়ার উপর। নিগম-কর্তাদের দাবি, তাতে অবশ্য এ বছর গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে কয়লার অভাব হবে না। কিন্তু নিজেদের স্বার্থেই যত দ্রুত সম্ভব পুরনো খনিগুলি চালু করতে হবে।
বিদ্যুৎ নিগমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য এখন বছরে গড়ে ১.৬০ কোটি টনের মতো কয়লা লাগে। যার মধ্যে কোল ইন্ডিয়া দেয় ১.৪০ কোটি টন। বাকি ২০ লক্ষ টন কয়লা নিগমের ওই বন্ধ থাকা খনিগুলি থেকে আসত।
রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব গোপালকৃষ্ণ বলেন, ‘‘খনিও চালু হবে, আবার কেউ যাতে কাজ না-হারান সে দিকে নজর রেখেই যাবতীয় পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy