জেসপ গুটিয়ে যাওয়া (লিকুইডেশন) রুখতে রাজ্য আদালতে যাবে কি না, এ বার ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে তা ঘিরেও।
কর্মী সংগঠনের দাবি, এ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে রাজ্য আদালতে আপিল করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। একই আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায়ও। কিন্তু শনিবার এ বিষয়ে মলয়বাবুকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘রায়ের বিরোধিতা করার ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের দিকে আক্রমণ শানাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের মুখে ঢাকঢোল পিটিয়ে জেসপ অধিগ্রহণের কথা বলেছিল রাজ্য। অথচ যখন সেই সংস্থা গুটিয়ে দেওয়ার জন্য কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হল, তখন সরকার তার বিরোধিতা করল না। এখন লিকুইডেশন নিয়ে রায়ের বিরুদ্ধে তারা আদালতের কড়া নাড়বে কি না, ধন্দ রয়েছে তাকে ঘিরেও।
জেসপ গোটাতে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বসানো হয়েছে অফিসিয়াল লিকুইডেটর। জেসপের এক পাওনাদার কক্স অ্যান্ড ওয়েন্স তাদের ১২ লক্ষ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য জেসপের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে। তার রায়েই জেসপ গোটানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
ওই রায় দেওয়ার আগে আবেদনকারী সংস্থাকে আদালত বলেছিল কলকাতার দু’টি বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জেসপ গোটানোর কথা জানাতে। যাতে তা নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে, পরবর্তী শুনানির দিনে (৬ মার্চ) আদালতে এসে তা জানানো যায়। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরেও রাজ্য সরকার বা অন্য কেউ আদালতে উপস্থিত হয়নি।
অথচ জেসপ অধিগ্রহণের জন্য গত বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে (২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি) বিল পাশ করে রাজ্য সরকার। তারপরেও বিনা বাধায় জেসপ কী ভাবে লিকুইডেশনে গেল, তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেসপের কর্মীরা। সংস্থার সিটু অনুমোদিত মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অসিত সেন বলেন, ‘‘এত ঘটা করে অধিগ্রহণের বিল পাশের পরে কী কারণে রাজ্য সংস্থা গোটানোর বিরোধিতা করল না, তা জানি না।’’
সম্প্রতি জেসপের ইউনিয়নগুলির যৌথ ফোরাম মলয়বাবুর সঙ্গে দেখা করে এই প্রশ্নের উত্তর চান। অসিতবাবুর দাবি, তখনই আদালতে আপিল করার আশ্বাস দেন মলয়বাবু। জেসপের চারটি ইউনিয়নের যৌথ ফোরামের চেয়ারম্যান সৌগতবাবুও একই কথা দিয়েছেন।
কিন্তু এ নিয়ে মলয়বাবুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য এই মামলার কোনও পক্ষ (পার্টি) নয়। তাই চটজলদি আদালতে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। আমরা এখনও সরকারি ভাবে এই রায়ের কিছু জানি না। কপি হাতে এলে, তা খতিয়ে দেখে রাজ্য সিদ্ধান্ত নেবে।’’
কিন্তু এই যুক্তি মানতে একেবারেই নারাজ অসিতবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারও তো জেসপের অন্যতম পাওনাদার। কারণ, জেসপের কাছে কর ইত্যাদি বাবদ প্রায় ৫০ কোটি টাকার উপর পাওনা রয়েছে তাদের। তাই আমাদের দাবি, আদালতে জেসপ গুটিয়ে নেওয়ার নির্দেশের বিরোধিতা করতে রাজ্য যেন চেষ্টার কোনও ত্রুটি না রাখে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy