নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ আসবাব ব্যবসায়ীদের।
শেষমেশ বিরোধীরা না-এলে, সংসদের সেন্ট্রাল হলে জিএসটি-চালুর অনুষ্ঠান কিছুটা জোলো হয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তার ভাঁজ মোদী সরকারের কপালে। মসৃণ ভাবে নতুন কর জমানা চালু করা নিয়ে তাদের সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ।
জিএসটি-র প্রতিবাদে টানা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তা আবার শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে। তার উপর ৩০ জুন আমদাবাদে ‘টেক্সটাইল ইন্ডিয়া’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন মোদী। এই পরিস্থিতিতে দেশ জুড়ে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ আর ধর্মঘট প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছে কেন্দ্রকে।
গত কাল নবান্নে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও বলেছেন, ‘‘বস্ত্র ব্যবসায়ীরা জিএসটি-র বিরুদ্ধে ধর্মঘট ডেকেছেন। আমরা গোড়া থেকেই পুরোপুরি তৈরি না-হয়ে জিএসটি না -চালু করার কথা বলেছিলাম। এখন বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের অনেকে এখনও নতুন কর জমানার জন্য তৈরি নন। সেই কারণে জিএসটি চালুর দিন পিছোতে রাজ্য ফের চিঠি দেবে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অবশ্য বস্ত্র ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যুক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতেই জিএসটি পরিষদে সমস্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু যে-কোনও সমস্যা শুনতে আমরা তৈরি।’’ অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে দাবি, আসলে বস্ত্র ব্যবসায়ীরা কর দিতেই রাজি নন।
শুধু বস্ত্রশিল্প নয়, সারা দেশে ব্যবসায়ী, বিশেষত ছোট ব্যবসায়ীদের অনেকে এখনও জিএসটি নিয়ে অথৈ জলে। নতুন ব্যবস্থার নথিভুক্তি, রিটার্ন ফাইল নিয়ে তাঁদের স্পষ্ট ধারণা নেই। যে-কারণে কোনও ব্যবসায়ী সংগঠন জিএসটি-র প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছে, তো কোনও সংগঠন বলছে নতুন করের খুঁটিনাটি সহজ করে বোঝাতে সহায়তা কেন্দ্র চালুর কথা। এমনকী জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতায় নেমেছে সঙ্ঘ পরিবারের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। তাদের নেতা অশ্বিনী মহাজনের অভিযোগ, এই কর চালু হলে, ছোট ব্যবসায়ীরা মার খাবেন। বাজার আরও বেশি করে ছেয়ে যাবে চিনা পণ্যে।
কৃষক বিক্ষোভের পরে এ বার জিএসটি-র জেরে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের আগুন যাতে না-জ্বলে, তা নিশ্চিত করতে অবশ্য কোমর বেঁধে মাঠে নামছে মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, জিএসটি চালুর পরে জুলাইয়ের প্রথমার্ধে মন্ত্রীদের নিজেদের রাজ্য, নির্বাচনী এলাকায় যেতে। যাতে করদাতাদের সমস্যার সমাধান হয়। জবাব দেওয়া যায় বিরোধীদের প্রশ্নের। সব মিলিয়ে, নতুন কর চালু করা নিয়ে আপাতত কিছুটা বিপাকে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy