শলা: জিএসটি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জেটলি ও আঢিয়া। ছবি: পিটিআই ।
নোটবন্দি আর তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর জোড়া ধাক্কায় বেজায় চটেছিলেন গুজরাতের হিরে ব্যবসায়ীরা। সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছিল নতুন বছরের গোড়ায় কর দফতরের হানা। প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে ব্যালটের লড়াইয়ে ধাক্কা খাওয়ার পরে বৃহস্পতিবার সেই ক্ষোভে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করল কেন্দ্র। কমলো হিরেতে চাপা জিএসটির হার।
একই সঙ্গে, জিএসটি জমানাতেও কর ফাঁকি যে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা সরাসরি মেনে নিল কেন্দ্র। আনল কম্পোজিশন প্রকল্পের কথা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ই-ওয়ে বিল চালু হলে, এই ফাঁকির অঙ্ক অনেকটাই কমবে বলে মোদী সরকারের দাবি।
এ দিন জিএসটি পরিষদের বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যে ভাবে হিরে ও দামি পাথরে জিএসটি ৩% থেকে কমিয়ে ০.২৫% করার কথা বলেছেন, তাতে অবাক অনেকেই। সূত্রের খবর, হিরে পালিশের জন্য মুম্বই থেকে গুজরাতে যায়। পালিশ শেষে ফেরে মুম্বইয়ে। যে সমস্ত সংস্থা এই হিরে নিয়ে যাওয়া-আসার কাজ করে, জানুয়ারির শুরুতে তাদের অফিসে হানা দেয় কর দফতর। তার জেরেই গত কয়েক দিন হিরের লেনদেন প্রায় বন্ধ। ফুঁসছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ দিন জেটলি কার্যত তাঁদের মান ভাঙানোর চেষ্টা করলেন বলে মনে করছেন অনেকে। সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন অর্থ সচিব হাসমুখ আঢিয়াও।
এ বার অবশ্য কর ছাঁটাইয়ের দাবি তুলতে শুরু করেছে স্বর্ণশিল্পও। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘হিরের গয়নায় কর যদি এত কমে, তবে সোনার ক্ষেত্রে তা হবে না কেন?’’
আরও যা...
জিএসটি চালু হলে কোথাও কোনও কর ফাঁকির সুযোগ থাকবে না বলেই প্রথম থেকে দাবি করে আসছিল মোদী সরকার। কিন্তু এ দিন জেটলি মেনেছেন, কর ফাঁকি চলছে। অর্থ মন্ত্রকের অনুমান, কম্পোজিশন প্রকল্পে দেদার কর ফাঁকি চলছে। যে সব ছোট ব্যবসায়ীর বছরে ব্যবসা দেড় কোটির কম, এই প্রকল্পে তাঁদের ১% হারে কর মেটালেই চলে। সেখানে ১৭ লক্ষ ব্যবসায়ীর থেকে এখনও পর্যন্ত আয় ৩০৭ কোটি টাকা! ১৭ লক্ষের মধ্যে ৫ লক্ষ ব্যবসায়ীই বলেছেন, তাঁদের বছরে ব্যবসা ৫ লক্ষ টাকার কম। যা কার্যত অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি শুরু করবে কেন্দ্র।
সেই সঙ্গে সরকারের আশা, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ই-ওয়ে বিল চালু হলে কর ফাঁকি অনেকটাই বন্ধ হবে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি, ‘‘আমাদের রাজ্যে আগেই এই প্রযুক্তি চালু। তাই সমস্যা নেই।’’
অমিতবাবু জেটলিকে চিঠিতে জানিয়েছেন, জিএসটি নেটওয়ার্কে সমস্যার জন্য ছোট ব্যবসায়ীরা কর জমা করতে পারছেন না। এই প্রক্রিয়া সরল করতে ইনফোসিস চেয়ারম্যান নন্দন নিলেকানির প্রস্তাব, ব্যবসায়ীরা জিএসটিআর ৩-বি ফর্ম জমা করুন। যাঁরা অন্য সংস্থাকে পণ্য সরবরাহ করছেন, তাঁরা ইনভয়েস জমা করবেন। তা জিএসটিআর-১ ফর্মের সাহায্যে ক্রেতাদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে কর ফাঁকি বা কর ছাড়ের দাবি যাচাই করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে পরিষদের পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। সে ক্ষেত্রে শুধু জিএসটিআর-১ ও জিএসটিআর ৩-বি চালু থাকবে।
ছোট শহরে বিমান পরিষেবায় কেন্দ্রের ‘উড়ান’ প্রকল্পে সংস্থাকে প্রথম তিন বছর জিএসটি দিতে হবে না বলেও এ দিন জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy