Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বিপাকে ফ্রি বেসিকস, এয়ারটেল জিরো

নেটে মাসুল বৈষম্য নয়: ট্রাই

ফেসবুকের ফ্রি বেসিকস বা এয়ারটেল জিরো-র মতো পরিষেবায় সায় দিল না টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

ফেসবুকের ফ্রি বেসিকস বা এয়ারটেল জিরো-র মতো পরিষেবায় সায় দিল না টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)।

নতুন নিয়ম জারি করে সোমবার ট্রাই জানাল, ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মাসুল নিতে পারবে না কোনও সংস্থাই। নিরপেক্ষ নেটের শর্ত মানতে সবাইকেই এক সুবিধা দিতে হবে। ফলে ফেসবুকের ‘ফ্রি বেসিকস’ বা ‘এয়ারটেল-জিরো’-র মতো পরিষেবা দিতে পারবে না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি।

এ দিন ‘প্রোহিবিশন অব ডিস্ক্রিমিনেটরি ট্যারিফস ফর ডেটা সার্ভিসেস রেগুলেশন্স, ২০১৬’ শীর্ষক ওই বিধি ঘোষণা করে ট্রাই চেয়ারম্যান আর এস শর্মা বলেন, ‘‘কোনও সংস্থাই নেট পরিষেবার জন্য বৈষম্যমূলক মাসুল নিতে পারবে না।’’ এ দিন থেকেই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। অমান্য করলে দিনে ৫০ হাজার টাকা (সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা) জরিমানা দিতে হবে সংস্থাকে। তবে ট্রাই বলেছে, এখন এই নিয়মের পরিপন্থী যে-সব প্রকল্প আছে, সেগুলি চালু হওয়া থেকে ছ’মাস পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এই সিদ্ধান্তে অবশ্য হতাশ সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া ও ফেসবুক। ফেসবুকের দাবি, ‘‘ফ্রি-বেসিকসের লক্ষ্য, নিখরচায় বেশি মানুষকে অনলাইন ব্যবস্থার সুযোগ দেওয়া। চেষ্টা করব বাধা সরিয়ে যাঁরা এখনও পরিষেবার বাইরে, তাঁদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার। তবে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘দেশের নেট ব্যবহারকারীদের কাছে এটা বড় জয়।’’ টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও ট্রাইয়ের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।

নেট নিউট্রালিটি কী?

ইন্টারনেট অবাধ। সব সাইটেই এক মাসুল। কোনওটা বিনামূল্যে, কোনওটার জন্য পয়সা লাগবে— তা নয়।

বিতর্কের সূত্রপাত মোবাইলে এয়ারটেল ও ফেসবুকের বিনামূল্যে কিছু অ্যাপ ও ওয়েবসাইট পরিষেবাকে কেন্দ্র করে। সেখানে নেটের জন্য আলাদা মাসুল দিতে হত না গ্রাহককে। সংস্থাগুলির দাবি ছিল, বিনামূল্যে পরিষেবা মিললে দ্রুত ছড়াবে নেট ব্যবহার।

কিন্তু অনেকের বক্তব্য, বিনামূল্যে পরিষেবার কথা বলা হলেও আসলে তা গ্রাহকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করবে। কারণ একই পরিষেবার জন্য ভিন্ন ধরনের মাসুল দিতে হবে তাঁদের। যেমন ট্রাইয়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্তর দাবি, গ্রাহকের পছন্দের স্বাধীনতাই খর্ব হত নিরপেক্ষ নেট না-থাকলে। কারণ যে-পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়ার কথা, সেখানে সব কিছুই মিলবে এমন নয়।

এই সব যুক্তি তুলে ধরে ‘সেভ দ্য ইন্টারনেট’ গোষ্ঠী তৈরি হয়, যারা ফেসবুকের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কে জনমত তৈরি করতে শুরু করে। আবার ফেসবুকও বিভিন্ন মাধ্যমে বিনামূল্যের পরিষেবার পক্ষে সওয়াল করে। এ নিয়ে ই-মেলে ২৪ লক্ষ মতামত পায় ট্রাই। ১৮.৯৪ লক্ষ ‘ফ্রি বেসিকস’-এর পক্ষে। নিরপেক্ষ নেট সমর্থনকারী ছিল ৪.৮৪ লক্ষ। তবে ট্রাই জানিয়েছে, জরুরি পরিষেবায় মাসুল কমানো যাবে। তার সংজ্ঞা এখনও ঠিক হয়নি। ট্রাইয়ের নির্দেশের পরে ফেসবুক বা এয়ারটেলের মতো সংস্থা কী করে, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE