ট্রাভিস কালানিক।
তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই আপত্তি তুলছিলেন লগ্নিকারীরা। বারবার দাবি উঠছিল সরে যাওয়ার। আর ‘নতুন করে ফিরে আসতে’ কিছু দিন আগেই তিনি বলেছিলেন ছুটি নেওয়ার কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাড়তে থাকা সেই বিপুল চাপের সামনে উবের টেকনোলজিসের সিইও পদ থেকে ইস্তফাই দিলেন ট্রাভিস কালানিক। তবে সংস্থার অন্যতম প্রধান অংশীদার হিসেবে পর্ষদে থাকছেন তিনি।
কালানিকের হাতে গড়া উবের সিলিকন ভ্যালির রূপকথা। ২০০৯ সালে পথ চলা শুরু করে এখনই সংস্থার দাম ৬,৮০০ কোটি ডলার (প্রায় ৪,৪৫,২৬৪ কোটি টাকা)। বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাপ-ট্যাক্সি পরিষেবার শিরোপা তার মাথায়। লোকসান বিপুল। কিন্তু টইটম্বুর ভবিষ্যতের সম্ভাবনা। কালানিকের ‘চাকরি’ তাই সে অর্থে ব্যবসায়িক ব্যর্থতার জন্য যায়নি। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও অদক্ষ পরিচালনার কাঁটা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মূল্যের এই স্টার্ট আপ সংস্থাকে বিঁধছে বহু দিন ধরে। যা মাথাচাড়া দেয় সংস্থার অন্দরে যৌন হয়রানি ও লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ তুলে উবেরের প্রাক্তন মহিলা কর্মীর লেখা এক ব্লগ পোস্টকে ঘিরে।
তখন থেকেই শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্নের মুখে পড়ে কালানিকের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে এ কেমন ধরনের আগ্রাসী, কর্মী হেনস্থার আর লিঙ্গ বৈষম্যের কর্মসংস্কৃতি সংস্থায় তৈরি হতে দিয়েছেন তিনি? নেতা হিসেবে কেন রাশ টানেননি তাতে?
এই সমস্যার ছবি উঠে আসে মার্কিন বিচার বিভাগীয় তদন্তেও। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন সামনে আসে বেতন কমার নালিশ করার জন্য জনৈক উবের চালককে কালানিকের তীব্র ভর্ৎসনার ভিডিও। যার জন্য পরে ক্ষমাও চান তিনি। অস্বস্তি বেড়েছিল চালকহীন গাড়ির প্রযুক্তি নিয়ে উবেরের বিরুদ্ধে গুগ্ল আদালতে যাওয়ায়। তবে কফিনের শেষ পেরেক, প্রাক্তন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডারের সুপারিশ। যেখানে কালানিকের কর্তৃত্ব ছাঁটার কথা বলেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, কালানিককে শেষমেশ সরতে হল শেয়ারহোল্ডারদের চাপের মুখে পড়ে। উদ্যোগ পুঁজি সংস্থা বেঞ্চমার্ক-সহ উবেরের পাঁচ বড় লগ্নিকারীই অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলেছিল।
বিবৃতিতে ৪০ বছরের কালানিক জানিয়েছেন, উবের যাতে এগিয়ে চলার পথ থেকে সরে না-যায়, তাই এই পদত্যাগ। আর পর্ষদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত সংস্থার প্রতি তাঁর ভালবাসা ও নিষ্ঠারই প্রতিফলন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy