Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অ্যাপের মঞ্চে গুণগান সেই নোট নাকচের

কেন্দ্রের দাবি ছিল, নোট বাতিলের ফলে ব্যাঙ্কে আর ফিরবেই না কয়েক লক্ষ কোটি কালো টাকা। কিন্তু আখেরে তা হয়নি। নোট সঙ্কটের সময়ে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেও, নোট ফিরতেই তা-ও নিম্নমুখী। অনেকে মনে করছেন, এ দিন ‘তেজ’ উদ্বোধনের মঞ্চে সেই সমস্ত কিছুরই সাফাই গেয়েছেন মন্ত্রী।

সওয়াল: তেজ উদ্বোধনে অরুণ জেটলি। পিটিআই

সওয়াল: তেজ উদ্বোধনে অরুণ জেটলি। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

গত জানুয়ারিতে দিল্লি এসেছিলেন গুগ্‌লের সিইও সুন্দর পিচাই। নোট বাতিল নিয়ে ডামাডোল তখন তুঙ্গে। বাজারে নগদের অভাব। আর মোদী সরকার ডিডিটাল লেনদেন বাড়ানোর কথা বলছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তখনই এ দেশে ডিজিটাল লেনদেনে নিজেদের পা রাখার পরিকল্পনা জানিয়ে এসেছিলেন পিচাই ও গুগ্‌লের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিজার সেনগুপ্ত। ন’মাস পরে সোমবার দিল্লিতে নিজেদের ডিজিটাল লেনদেন অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) ‘তেজ’ চালু করল মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি।

সেই অ্যাপ উদ্বোধনের মঞ্চকে অবশ্য নোট বাতিলের সাফল্য তুলে ধরার জায়গা হিসেবে এ দিন পুরোদস্তুর ব্যবহার করলেন জেটলি। তাঁর দাবি, ‘‘অনেকে ভাবেন, নোট বাতিলের পরে কত টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে, কত কালো টাকা ধরা পড়েছে, সেটিই নোট নাকচের সাফল্যের একমাত্র মাপকাঠি। কিন্তু বড় অঙ্কের নোট কমা, করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল লেনদেনের মাপকাঠিও রয়েছে।’’ তাঁর আরও দাবি, নোট বাতিলের পরে অনেকে বাধ্য হয়ে ডিজিটাল লেনদেন শুরু করেছিলেন। এতে সুবিধা বুঝে তাতেই অভস্ত হয়ে গিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘‘নোট বাতিলের পরে ডিজিটাল লেনদেন লাফিয়ে বেড়েছিল। তারপরে তা কিছুটা কমে এসেছে। আবার তা বাড়তে বাধ্য।’’

কেন্দ্রের দাবি ছিল, নোট বাতিলের ফলে ব্যাঙ্কে আর ফিরবেই না কয়েক লক্ষ কোটি কালো টাকা। কিন্তু আখেরে তা হয়নি। নোট সঙ্কটের সময়ে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেও, নোট ফিরতেই তা-ও নিম্নমুখী। অনেকে মনে করছেন, এ দিন ‘তেজ’ উদ্বোধনের মঞ্চে সেই সমস্ত কিছুরই সাফাই গেয়েছেন মন্ত্রী।

যে অ্যাপ এ দিন গুগ্‌ল চালু করার কথা জানাল, তা সরকারি ইউপিআই (ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস)-এর ভিতে তৈরি। সংস্থার দাবি, এর মাধ্যমে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে নিখরচায় লেনদেন করা যাবে। অর্থাৎ, পেটিএমের মতো মোবাইল- ওয়ালেটে টাকা রাখার প্রয়োজন নেই। জানতে হবে শুধু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর। ভারতের জন্যই প্রথম তৈরি বলে অ্যাপটির নাম রাখা হয়েছে হিন্দিতে। কিছু দিনের মধ্যে ফেসবুক, অ্যামাজনের মতো বিভিন্ন সংস্থা একই ধরনের অ্যাপ চালু করতে চলেছে বলেও সরকারি সূত্রের খবর। এ ছাড়া, সরকারি অ্যাপ ভীম-ও চালু রয়েছে।

কিন্তু গুগ্‌ল এলে ছোট সংস্থাগুলি বাজারে টিকবে কী ভাবে? সিজারের জবাব, ‘‘লড়াই একে অপরের সঙ্গে নয়। বরং নগদ লেনদেনের সঙ্গে।’’

গুগ্‌লের ‘তেজ’

• ডিজিটাল লেনদেনের অ্যাপ

• কাজ করবে কেন্দ্রীয় সরকারের ইউপিআই পরিষেবা ব্যবস্থায় ভিত্তি করে

• অ্যাপের ওয়ালেটে টাকা রাখতে হবে না। থাকবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই

• লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টের তথ্য, ফোন নম্বর জরুরি নয়

• সংস্থার দাবি, এই অ্যাপে লেনদেন করা যাবে নিখরচায়

• অ্যাপে থাকবে বাংলা-সহ সাতটি আঞ্চলিক ভাষা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE