Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
অনেক এগিয়ে প্রতিবেশীরা

সবার উন্নয়ন সুদূর স্বপ্নই

ডব্লিউইএফের সমীক্ষাই জানাল, উন্নয়নকে সকলের দরজায় পৌঁছে দেওয়ার মাপকাঠিতে ৭৪টি সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশের মধ্যে ভারত এই মুহূর্তে ৬২ নম্বরে। এগিয়ে প্রায় সব প্রতিবেশী দেশই।

সংবাদ সংস্থা
দাভোস শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৫:০৬
Share: Save:

দু’দশক পরে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ বা বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলন) যোগ দিতে সোমবার দাভোসে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। যাঁর স্লোগান— ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ।’ সকলকে সঙ্গে নিয়ে সবার উন্নয়ন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সেই ‘ঐতিহাসিক’ সফর শুরুর আগেই যেন তাল কাটল কিছুটা। ডব্লিউইএফের সমীক্ষাই জানাল, উন্নয়নকে সকলের দরজায় পৌঁছে দেওয়ার মাপকাঠিতে ৭৪টি সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশের মধ্যে ভারত এই মুহূর্তে ৬২ নম্বরে। এগিয়ে প্রায় সব প্রতিবেশী দেশই। চিন (২৬), নেপাল (২২), বাংলাদেশ (৩৪), শ্রীলঙ্কা (৪০)। এমনকী যার সঙ্গে প্রায় প্রতি মুহূর্তে সম্মানের টক্কর, কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিয়ে এগিয়ে সেই পাকিস্তানও (৪৭)।

এই মহা জমায়েত শুরুর ঘণ্টা কয়েক আগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী অক্সফ্যামও বলেছে, আয়ের বৈষম্য বাড়ছে ভারত-সহ প্রায় সব দেশেই। তাদের সমীক্ষায় প্রকাশ, এ দেশে ৭৩% সম্পত্তিই রয়েছে ১% ধনকুবেরের ঝুলিতে। এর পরিমাণ ২০১৭ সালে বেড়েছে ২০.৯ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৭-’১৮ সালে কেন্দ্রীয় বাজেটের সমান যে অঙ্ক। আর বিশ্বে ২০১৭ সালে তৈরি হওয়া ৮২% সম্পত্তি কুক্ষিগত ১ শতাংশের হাতে। যেখানে সবচেয়ে গরিব ৩৭০ কোটি জনের সম্পত্তি প্রায় বাড়েইনি।

বৈষম্যের মাত্রা স্পষ্ট করে তথ্য বলছে, ভারতের গ্রামাঞ্চলে ন্যূনতম মজুরি পাওয়া এক কর্মী কোনও পোশাক সংস্থার সব থেকে বেশি বেতন পাওয়া শীর্ষ কর্তার এক বছরের সমান আয় করতে নেবেন ৯৪১ বছর! আর মার্কিন মুলুকে এক জন সিইও প্রায় এক দিনেই পকেটে পোরেন সে দেশের সাধারণ কর্মীর বছরভরের রোজগার। সকলকে উন্নয়নের যজ্ঞে সামিলের সাফল্য খুঁজতে ডব্লিউইএফ বিচার করে জীবনযাত্রার মান, পরিবেশকে বাঁচিয়ে আর্থিক উন্নয়নের কর্মকাণ্ড চালানো, ঋণে জড়ানো থেকে আগামী প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখার মতো নানা মাপকাঠি।

ক্রম-বিকাশ

দেশ স্থান

• নেপাল ২২

• চিন ২৬

• বাংলাদেশ ৩৪

• শ্রীলঙ্কা ৪০

• পাকিস্তান ৪৭

• ভারত ৬২

নোটবন্দির মাধ্যমে কালো টাকা নিকেশ, গ্রামে ব্যাঙ্ক খোলা বা সরাসরি ভর্তুকির অর্থ অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ করে দেশের গরিবদের অবস্থা ফেরানোর কথা বারবার বলেন মোদী। বুক বাজিয়ে জানান উন্নয়ন-যজ্ঞে সকলকে সামিল করার কথা। কিন্তু দাভোসে তাঁর পা রাখার দিনেই ভারত সরকারের কাছে অক্সফ্যামের আর্জি, শুধু মুষ্টিমেয় কয়েক জন নন, অর্থনীতির সুফল যাতে সকলেই পান তা নিশ্চিত করুক তারা। ডব্লিইইএফের মতে, বিশ্ব জুড়ে শুধু বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেওয়াতেই প্রকট হয়েছে বৈষম্য। মাথা তুলেছে আয়ের ফারাক। মার খেয়েছে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ, আর্থিক সুরক্ষা, জীবনযাত্রার মান।

বৈষম্যের এই সমস্যা সারা বিশ্বের। কিন্তু এ দিন স্পষ্ট, মোদীর ভারতের স্থান সেখানে বেশ উঁচুতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE