মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না, অযথা বাসভাড়া বৃদ্ধি করে জনগণের উপরে খরচের বোঝা চাপিয়ে দিতে।
২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের পরে প্রতিশ্রুতি ছিল, বাম আমলে ৮বি, ৯বি-র মতো জনপ্রিয় কম খরচের বন্ধ হয়ে যাওয়া রুটগুলি ফের চাঙ্গা করবে সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে বা সরকারের প্রতিশ্রুতি যাই থাক না কেন, ক্যালকাটা স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএসটিসি) চলে নিজের ইচ্ছায়।
আয় বাড়াতে হবে। তাই ঘুরপথে ভাড়া বৃদ্ধির রাস্তায় হেঁটেছে সিএসটিসি। বহু পুরনো ৫ বা ৬ নম্বর রুট তাই বদলে হয়েছে এস-৫, এসি-৫ কিংবা এসি-৬। লাভজনক ১০ নম্বর রুটের বাস তুলে দিয়ে চালু হয়েছে এস-১০এ। আবার ৮বি রুট নতুন করে চালু হয়েছে। কিন্তু আগের নাম বা আগের ভাড়ায় নয়। বেশি ভাড়ায় ওই রুটে চলছে এসি-১ আর ই-১।
সমস্যার শুরু মে-জুনে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে নতুন বাস আসার পর থেকেই। এই সব রুটের যাত্রীদের অভিযোগ, বিনা নোটিসে হঠাৎই উবে গিয়েছে ৫, ৬-এর মতো রুটের বাসগুলি। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও মেলে না ওই সব বাস। বাধ্য হয়েই চাপতে হয় এসি বাসে। যার সমর্থন মিলছে সিএসটিসি-র হিসেবেও। নিগমের হিসেব বলছে, সিএসটিসি-র দু’য়েকটি সাধারণ রুট বাদ দিয়ে বাকি সব রুটে স্পেশ্যাল বা এসি বাস চলছে। তবে নির্দেশিকা জারি করেই এই সব রুট তুলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। নিগমের এমডি ভীষ্মদেব দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বছরখানেক আগেই শহরের বেশ কিছু রুটে সাধারণ বাস তুলে বিশেষ বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকাও জারি হয়েছিল।’’
কেন তুলে নেওয়া হচ্ছে সাধারণ বাস? সিএসটিসি-র এক কর্তার দাবি, ‘‘অর্থ দফতর জানিয়ে দিয়েছে, কর্মীদের বেতনের ২৫ শতাংশ জোগাড় করতে হবে নিগমকে। বাকি টাকা ভর্তুকি দেবে অর্থ দফতর। এই অবস্থায় টিকিট বিক্রি থেকে বেশি আয় না করলে ওই টাকা জোগাড় অসম্ভব। তাই ঘুরপথে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।’’ প্রশাসনের একাধিক কর্তার পাল্টা দাবি, ‘‘নতুন বাসগুলি এসেছে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে। প্রকল্পের শর্ত অনুসারেই এই সব বাসে ভাড়া বেশি করতে হবে।’’ ওই কর্তা জানান, নতুন বাসগুলির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বেশি। ভাড়া বেশি না-করলে তা নিগমের পক্ষে দেওয়াও সম্ভব নয়।
যদিও সিএসটিসি-র এই মনোভাবের সমালোচনায় সরব হয়েছেন অন্য নিগমগুলির কর্তারা। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশানুসারে যাত্রীদের থেকে কখনওই বেশি ভাড়া নেওয়ার কথা নয়। বেসরকারি বাসমালিকদের একাংশর বক্তব্য, ‘‘আমরাও তো জেএনএনইউআরএম-এর বাস চালাই। বহু বার সরকারের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু তারা রাজি হয়নি।’’ সিএসটিসি কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ভাল বাস চড়তে গেলে তো বেশি ভাড়া দিতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy