প্রস্তাবিত জায়গার একটি। ছবি: অরুণ লোধ।
জমিজট কাটিয়ে আটকে থাকা গৃহনির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা। বেহালার ১৩১ এবং ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডে যথাক্রমে শান্তিসঙ্ঘ বস্তি এবং সকলদেও বস্তিতে এই আবাসন তৈরির জন্য রাজ্য সরকারকে চিঠি দিল পুরসভা। এর মধ্যে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডটি স্বয়ং মেয়রের ওয়ার্ড।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের ‘হাউজিং’ ফর অল’ প্রকল্পে আপাতত দু’টি ওয়ার্ডের দু’টি বস্তিতে আবাসন প্রকল্প তৈরি করা হবে।’’
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভার বেহালা অঞ্চলে এই দু’টি ওয়ার্ডে আবাসন তৈরির জন্য পরিকল্পনা থাকলেও জায়গার অভাবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ হিসেবে জমির সমস্যাকেই দায়ী করেছে পুরসভা।
কিছু দিন আগেই এই দু’টি ওয়ার্ডে পুরসভা জমি চিহ্নিত করার পরেই কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শান্তিসঙ্ঘ বস্তিতে প্রায় ৩০ কাঠা জমিতে ১৩০টি ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে। অন্য দিকে, সকলদেও বস্তিতে ফ্ল্যাট হবে ৯৫টি।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, জমির সমস্যা তো ছিলই। এ ছাড়াও বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায়, বাসস্থান তৈরির সময়ে পুনর্বাসন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্প আটকে থাকে। কারণ, সাময়িক পুনর্বাসনের জন্যও জমি পাওয়া যায় না। অনেকেই নির্দিষ্ট জায়গা ছেড়ে দূরে কোথাও যেতে চান না। যে জমিতে প্রকল্প সেই জমির একাংশে পুনর্বাসন দিয়ে প্রকল্পের পরিকল্পনা করা সম্ভব হয় না। সেই কারণে এলাকার কাছেই আলাদা জমির প্রয়োজন ছিল। তা পাওয়া না যাওয়ার ফলেই সমগ্র প্রকল্প পিছিয়ে গিয়েছিল।
কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র বলেন, ‘‘রাজীব আবাসন যোজনায় অনেক দিন আগেই এখানে আবাসন তৈরির পরিকল্পনা ছিল। জমিও চিহ্নিত হয়েছিল অনেক দিন আগেই। কিন্তু পুরসভাকে জমি হস্তান্তর নিয়ে সমস্যা থাকায় তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। সম্প্রতি এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। জমিটির চারদিকে পাঁচিল দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে।’’
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডেও হাউজিং ফর অল প্রকল্পে কাজ হবে। মন্ত্রীকে এই ব্যাপারে জানানো হয়েছে। এই ধরনের প্রকল্পে দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবেন।’’
পুরকর্তৃপক্ষ জানান, এই জায়গায় পুরসভা থেকে সমীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ক’টি দরিদ্র পরিবারকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন থাকবে ২৭৪ বর্গফুট। এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করে রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হবে। ‘হাউজিং ফর অল’ প্রকল্পে এই প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে রাজ্য সরকার।
কিন্তু শহরে প্রথম বেহালা অঞ্চলে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হল কেন?
কলকাতার অনেক জায়গাতেই এই প্রকল্পের জন্য জমির খোঁজ করা হয়েছিল। কিন্তু কোথাও জমি পাওয়া যায়নি। আপাতত এই দু’টি ওয়ার্ডেই জমি পাওয়া গিয়েছে। পরে অন্য জায়গা পেলে সেখানেও রাজ্য সরকারের প্রকল্পে সেই আবাসন তৈরি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy