Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

জলাধার অসমাপ্ত, জল সরবরাহে বিলম্বের আশঙ্কা

মুকুন্দপুরে জলাধারের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই জলাধার সময় মতো তৈরি না হলে ধাপা জলপ্রকল্প থেকে এই অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ শুরু করতে দেরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন কলকাতা পুর পুরকর্তৃপক্ষ।

জমে রয়েছে জল।  —নিজস্ব চিত্র

জমে রয়েছে জল। —নিজস্ব চিত্র

কৌশিক ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:০১
Share: Save:

মুকুন্দপুরে জলাধারের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই জলাধার সময় মতো তৈরি না হলে ধাপা জলপ্রকল্প থেকে এই অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ শুরু করতে দেরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন কলকাতা পুর পুরকর্তৃপক্ষ। ঠিক ছিল চলতি বছরের মধ্যে এই জলাধারের কাজ শেষ হবে। যদিও ধাপা জলপ্রকল্পের কাজ ঠিকমতো এগচ্ছে বলে পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা জল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই অঞ্চলটি এমনিতেই নিচু। একটু বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যায়। ফলে, কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু ধাপা জলপ্রকল্পের গুরুত্ব বুঝে এই কাজ যাতে দ্রুত শেষ করা যায় সেই ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। এই অসুবিধার মধ্যেও যতটা কাজ করা যায়, তা করা হচ্ছে। অন্য কোথাও জমি না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই এই জমিতেই জলাধার এবং ওভারহেড পাম্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।”

পুরসভা সূত্রের খবর, নিচু জমিতে জল জমে যাওয়ায় মুকুন্দপুরের কাজ মাঝেমধ্যেই ব্যাহত হচ্ছে। প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী আনতেও সমস্যা হচ্ছে। বালি ও মাটি ফেলে এই জমি উঁচু করা হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে এই নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়। জমা জল বের করে ফের এখানে কাজ করতে সময় লাগবে বলে কলকাতা পুরসভার জল দফতরের এক আধিকারিকের দাবি।

কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “ধাপা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের অন্যান্য বুস্টার পাম্পিং স্টেশন এবং জলাধার তৈরির কাজ অনেকটা হয়ে গেলেও মুকুন্দপুরের জলাধারের কাজ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। প্রথমে এখানে জমি পাওয়ার সমস্যা হচ্ছিল। তাই কাজ শুরু করতে দেরি হয়। সম্প্রতি, বৃষ্টিতে জল জমায় সেখানে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে, কাজের গতি কমে যাচ্ছে।”

পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক জানান, এই অঞ্চলটি নিচু। নিকাশিরও কোনও আলাদা জায়গা নেই। এখানকার জল সংলগ্ন খাল দিয়ে বেরোয়। এই মুহুর্তে এই অঞ্চলের নিকাশির জন্য পুরসভার কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও নেই।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মুকুন্দপুরে যে জমিতে ভূগর্ভস্থ জলাধার তৈরির কাজ চলছে সেই জমিটি পুনর্বাসন দফতরের। সরকার পুরসভাকে জমিটি অধিগ্রহণের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করা যায়নি। জমিটি অধিগ্রহণের সময়ে আবার এই জমিতে বসবাসকারী কিছু লোক আপত্তি জানায়। সেই কারণেও কাজ কিছু দিন আটকে থাকে। পরে মেয়রের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাপা জলপ্রকল্প থেকে প্রত্যেক দিন ৩০ লক্ষ গ্যালন পানীয় জল উৎপন্ন হবে। এই জল বিভিন্ন ওভারহেড জলাধারে তোলা হবে। সেখান থেকেই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হবে। জল ধরে রাখার জন্য পাটুলি, আনন্দপুর এবং মুকুন্দপুরে তিনটি ভূগর্ভস্থ জলাধার থাকবে। এই তিনটি ভূগর্ভস্থ জলাধার থেকে মোট ১১টি ওভারহেড বুস্টার পাম্পের মাধ্যমে বাইপাস সংলগ্ন দক্ষিণ এবং পূর্ব কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জল সরবরাহ করা হবে।

জল সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, আনন্দপুর এবং পাটুলির ভূগর্ভস্থ জলাধার এবং আটটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের কাজ প্রায় শেষ। কেবলমাত্র মুকুন্দপুরের ক্ষেত্রেই ভূগর্ভস্থ জলাধার-সহ তিনটি ওভারহেড পাম্পের কাজ অনেকটাই বাকি। যদিও এই এলাকায় জল সরবরাহের জন্য লাইন পাতার কাজ শেষ বলে জল দফতরের এক আধিকারিকের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water reservoir mukundupur kaushik ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE