Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আরআর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ

দাঁত পড়েছে হাসপাতালেরই, বলল কাউন্সিল

যেন আক্ষরিক অর্থেই নেই-রাজ্য। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থেকে চিকিৎসক, সবই অপ্রতুল। কলকাতার রফি আহমেদ ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল দেখে এমনই রিপোর্ট দিল ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (ডিসিআই) ।

সৌভিক চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:১৪
Share: Save:

যেন আক্ষরিক অর্থেই নেই-রাজ্য। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থেকে চিকিৎসক, সবই অপ্রতুল। কলকাতার রফি আহমেদ ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল দেখে এমনই রিপোর্ট দিল ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (ডিসিআই) ।

দেশ জুড়ে সব ডেন্টাল মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে নজরদারি চালায় ডিসিআই। অক্টোবরে তাদের দুই সদস্য এসেছিলেন পরিদর্শনে। তাঁদের পর্যবেক্ষণে ভিত্তি করেই ওই রিপোর্ট দিয়েছে ডিসিআই।

কী কী ‘নেই’? ডিসিআই-এর রিপোর্টে প্রথমেই বলা রয়েছে, এই হাসপাতালে ইন্ট্রাওরাল এক্স-রে ইউনিট, বায়োপসি কিট, আল্ট্রাসনিক ক্লিনার, বায়োমেট্রিক মেশিনের মতো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্র যথেষ্ট পরিমাণে নেই। সব মিলিয়ে ‘নেই’-এর সংখ্যাটা প্রায় দেড়শো। যে যন্ত্রগুলি রয়েছে, সেগুলির ক্ষেত্রে অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি বোর্ড (এইআরবি) নির্দেশিত তেজস্ক্রিয়তার বিধি মানা হয় না। যা চিকিৎসক ও রোগী, দু’জনের জন্যই যথেষ্ট ঝুঁকির।

স্নাতকোত্তর স্তরে ১২ জন শিক্ষক ও ৩৭ জন অশিক্ষক কর্মচারী নেই। দীর্ঘদিন ধরে নেই কোনও গ্রন্থাগারিক। অব্যবহার ও অযত্নে নষ্ট হচ্ছে বহু বইপত্র। গ্রন্থাগার জুড়ে উইপোকার অবাধ আস্তানা। শুধু তা-ই নয়, ২০০৬-এর পরে আর গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়নি।

রিপোর্টে জানানো হয়েছে, হস্টেলের অবস্থাও খুবই খারাপ। দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বসবাসের অযোগ্য, অস্বাস্থ্যকর জায়গাতেই থাকছেন পড়ুয়ারা। বেহাল দশা ডেন্টাল কলেজের অন্যতম প্রয়োজনীয় সামগ্রী ডেন্টাল চেয়ারগুলিরও। মোট ১৩৯টির মধ্যে অর্ধেকেরও বে‌শি চেয়ার জং ধরে নষ্ট! নেই চলমান ডেন্টাল ভ্যানও।

ডিসিআই-এর রিপোর্টটি সম্প্রতি সামনে এলেও পড়ুয়াদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থায় রয়েছে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ। বারবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও লাভ হয়নি। পড়ুয়ারা জানান, শিক্ষকের অভাবে নিয়মিত ক্লাস হয় না। গ্রন্থাগারের অভাবে দামি বই কিনে পড়তে হয়। হস্টেলের খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে সবই খুব খারাপ। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে জমে থাকে জঞ্জাল। তা থেকেই ছড়ায় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ।

এক ছাত্র অভিষেক হালদার বলেন, ‘‘ডিসিআই তো এখন রিপোর্ট দিল। কিন্তু দীর্ঘদিন আমরা যে কত কষ্টে পরিষেবা দিয়েছি, তা আমরাই জানি। কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। এখন এই রিপোর্ট পেয়ে যদি কিছু হয়।’’

হাসপাতালের সুপার তপন গিরি জানান, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। পড়ুয়াদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। পরিকাঠামোগত কিছু ত্রুটি ছিল। সেগুলি যাতে দ্রুত ঠিক হয়, সে চেষ্টা চলছে।’’

ডিসিআই-এর রিপোর্টে যে যে সমস্যার কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানালেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আর আহমেদের পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য বেশ কিছু টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ধীরে ধীরে সব ঠিক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE