Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দোলের বাজারেও এ বার চিনের ‘রংবাজি’

বাজি আর আলোর বাজারে আগেই এসেছিল। এ বার দোলের বাজারেও চিনের রমরমা! পিচকিরি তো রয়েছেই, সঙ্গে জুড়েছে বিশেষ স্প্রে রংও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু অন্যকে রাঙানো নয়, দোলের দিন সং সাজতেও কাজে আসবে এই স্প্রে রং!

প্রাক্-দোলের একটি অনুষ্ঠানে বিশেষ শিশুরা। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

প্রাক্-দোলের একটি অনুষ্ঠানে বিশেষ শিশুরা। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায় ও আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০২:২১
Share: Save:

বাজি আর আলোর বাজারে আগেই এসেছিল। এ বার দোলের বাজারেও চিনের রমরমা! পিচকিরি তো রয়েছেই, সঙ্গে জুড়েছে বিশেষ স্প্রে রংও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু অন্যকে রাঙানো নয়, দোলের দিন সং সাজতেও কাজে আসবে এই স্প্রে রং!

তবে এই চিনা রঙের রমরমায় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, রাসায়নিক রং নিয়ে এমনিতেই নানা অভিযোগ থাকে। তাতে ক্ষতি হয় স্বাস্থ্যের। এই চিনা রঙেও ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

বস্তুত, ক্ষতিকর রাসায়নিক রং বা আবিরের বদলে ভেষজ আবির দিলে দোল খেলার চল শুরু হয়েছিল বহু দিন আগে থেকেই। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা সেই ভেষজ আবির বৃহত্তর বাজার দখল করতে পারেনি। অনেকেই বলছেন, বড় ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি এই আবিরের ব্যবসায় না আসায় ভেষজ আবিরের ব্যবহার এখনও সীমাবদ্ধ।

কেমন চলছে চিনা রঙের ব্যবসা?

বড়বাজারে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার দু’পাশ দিয়ে পিচকিরি-রঙের দোকান বসে গিয়েছে। নানা আকারের পিচকিরির পাশাপাশি রয়েছে কৌটো ভর্তি স্প্রে রং! দোকানিরা বলছেন, যে ভাবে বডি স্প্রে ব্যবহার করা হয়, একই ভাবে ওই স্প্রে রং ছিটিয়ে দিতে হবে। তা হলে গোলাপি, লাল, কমলা রঙে রঙিন হবে চুল, মুখ। এই রং সহজে তুলে ফেলা যাবে বলেও দাবি তাঁদের।

কিন্তু এর বদলে ভেষজ আবির বিক্রি করেন না কেন? প্রশ্নটা করতেই কিছুটা বিরক্ত হলেন কয়েক জন দোকানি। জানালেন, চিনা রঙের কারবার এই বছরেই বেড়েছে। কিন্তু এত দিন আবির বা রঙের জোগান থাকত জেলা বা প্রতিবেশী রাজ্য থেকে। রং ব্যবসায়ী দীপঙ্কর পালের কথায়, “বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসমের রং বা আবির বিক্রি করি। ভেষজ আবির কেউ কেউ খোঁজ করলেও বেশি দামের জন্য চাহিদা কম।”

ব্যবসায়ীদের অনেকেই মনে করছেন, ভেষজ আবির অল্প জায়গায় উত্‌পাদন করা হয়। তাই উত্‌পাদনের খরচ বেশি। দামও বেশি। কিন্তু ব্যবসায়িক ভাবে উত্‌পাদন করা হলে দাম কম হত। ফলে চাহিদাও বাড়ত। যদিও রাজ্যের পরিবেশবিদ্‌ ও বিজ্ঞানীদের অনেকে মনে করেন, এই আবিরের দাম ততটা বেশি নয়। চাহিদাও যথেষ্ট। বরং প্রচার ও সব জায়গায় না পাওয়া যাওয়ার ফলেই এর ব্যবহার কম। একই সুর মিলছে আবির ব্যবসায়ীদের অনেকের গলাতেও। তাঁরা বলছেন, ১০০ গ্রাম সাধারণ আবিরের দাম ১২ টাকা হলে ভেষজ আবির ২০ টাকা। এই সামান্য বেশি দাম দিয়ে অনেকেই সেই আবির কিনতে পারেন।

আবির বিক্রেতাদের একাংশ বলছেন, আরও কয়েকটি ভেষজ আবির পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলির গুণমান নিয়ে ক্রেতারাই প্রশ্ন তোলেন। “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুনাম ওই সংস্থাগুলির নেই,” বলছেন এক আবির বিক্রেতা। অন্য এক আবির বিক্রেতা আবার বললেন, “অনেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবিরের খোঁজ করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের আবির সরবরাহ করে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE